নন্দীগ্রামে দিনের বেলায় মোবাইলের দোকানে চুরির রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ১
প্রকাশ: ৪ মার্চ ২০২৪, ১৮:৫৯ | আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫:০৮
বগুড়ার নন্দীগ্রাম শহরের জনতা মার্কেটে মা মোবাইল প্যালেসে দিনের বেলায় দুঃসাহসিক চুরির ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে ১জনকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। সেসময় লুণ্ঠিত কিছু মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত ইয়াছিন আরাফাত মোল্লা (৩১) কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে।
রবিবার (৩ মার্চ) মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ও থানার এসআই জিয়াউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, শনিবার গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে আদালতে হাজির করা হলে আদালতের বিচারক তাকে বগুড়া জেলা কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। ওই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে কুমিল্লা কোতয়ালী থানা এলাকার কুমিল্লা সিটির ১৭নং ওয়ার্ডের তেলিকোনা মামণি হাসপাতালের সামনে থেকে চোর চক্রের সদস্য ইয়াছিন আরাফাতকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সেসময় তার হাতে থাকা ১টি ব্যাগ তল্লাশি করে লুন্ঠিত মালামালের মধ্যে ৫টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে নন্দীগ্রাম শহরের জনতা মার্কেটে মা মোবাইল প্যালেসে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটে। চোর চক্র দোকানের তালা কেটে নগদ টাকাসহ অনেকগুলো মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে মা মোবাইল প্যালেসের মালিক খালিদ হাসান আকাশ বাদী হয়ে ৯জনের নাম উল্লেখ করে থানায় চুরির অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তারকৃত ইয়াছিন আরাফাতের বিরুদ্ধে ঢাকা, ভোলা, গাজীপুর ও কুমিল্লার বিভিন্ন থানার ৬টি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
চোর চক্রের অন্য সদস্যরা হলো, কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঁশকাইট (বর্তমান সুরনন্দি-সার্মাকান্দা) এলাকার কাশেম আলী (৪৫), একই উপজেলার কামাল্লা এলাকার শরিফুল ইসলাম ওরফে জামাই শরীফ (২৯), শোলা পুকুরিয়া এলাকার ইকবাল হোসেন (৩৩), তিতাস উপজেলার মাছিমপুর (বর্তমান কোতয়ালীর সেন্ট্রাল জেল সংলগ্ন) এলাকার ফারুক হোসেন (৩২), চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার হাতিরবন্দ (মুছা হাজীর বাড়ি) এলাকার মহরম মজিব (২৬), মনু মিয়া ওরফে মানিক (২৭), নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মধ্যনগর চর এলাকার মোকারাম হোসেন রুবেল ওরফে মনির ওরফে মনু (৩৩) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার কালামুড়িয়া (মাজার বাড়ি পশ্চিমপাড়া) এলাকার সোহেল ওরফে মোটা সোহেল (৩১)।
এ বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ আজমগীর হোসাইন জানিয়েছেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অপরাধীদের সনাক্ত করা হয়। তারা সংঘবদ্ধ বড় চোর চক্রের সদস্য। দেশের বিভিন্ন এলাকায় জুয়েলার্স, মোবাইল ও বিকাশের দোকানসহ বড় বড় দোকানে চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা ১০মিনিটের ব্যবধানে লুট করে চলে যায়। চোর চক্রের সদস্যরা কৌশলগত কারণে ভ্রাম্যমাণভাবে বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করে এবং তাদের মোবাইল ফোনে সিম ব্যবহার করা হয় না। হোয়াটসঅ্যাপ-ইমুতে চুরির পরিকল্পনা ও নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখে। সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সদস্যরা চুরির জন্য প্রথমে এলাকা এবং দোকান টার্গেট করে। এরপর ভিডিও ধারণ করে নিয়ে চলে যায়। পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী চোর চক্রের সদস্যরা দোকানে যায়। এরপর তালা কাটার সময় লোকজনের চোখ ফাঁকি দিতে লুঙ্গি ও ছাতা ব্যবহার করে। চোর চক্রের ২/৩জন সদস্য দোকানে ঢুকে চুরি করে আর বাকি সদস্যরা বাইরে পাহারায় থাকে। চোর চক্রের সদস্যরা কৌশল করে ২২ ফেব্রুয়ারি একটি পরিবহনে নন্দীগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পরদিন ২৩ ফেব্রুয়ারি নাটোর শহরের মাদ্রাসা মোড় থেকে আরেকটি পরিবহনে নন্দীগ্রামে আসে। বাস থেকে নেমেই সরাসরি মা মোবাইল প্যালেসে গিয়ে ১০মিনিটের ব্যবধানে নগদ টাকাসহ মালামাল চুরি করে ব্যাগ ভর্তি করে নিয়ে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত হেঁটে যায়। সেখান থেকে ২টি অটোরিকশা ভাড়া করে নাটোর চলে যায়। তিনি আরো বলেন, অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
ই
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত