নন্দীগ্রামে কোরবানির পশু বিক্রয় নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় খামারি ও কৃষকরা

  নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৬ জুলাই ২০২১, ১৬:৪১ |  আপডেট  : ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:৫৫

বগুড়ার নন্দীগ্রামে ঈদুল আযহা সামনে রেখে কোরবানির পশু বিক্রয় নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছে খামারি ও কৃষকরা। এ বছর ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে পশু মোটাতাজাকরণ করেও চরম হতাশায় রয়েছে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের খামারি ও কৃষকরা। তাদের হতাশার কারণ বর্তমান করোনা পরিস্থিতি। ঈদুল আযহা পর্যন্ত যদি লকডাউন স্থায়ী হয় তাহলে কোরবানির পশু বেচাকেনা হবে না। সেক্ষেত্রে বড়ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে হবে খামারি ও কৃষকদের। এ উপজেলার খামারি ও কৃষকদের দাবি ঈদুল আযহার আগেই যেনো সরকার কোরবানির পশু যাতায়াতের প্রতিবন্ধকতা তুলে নেয়। সেই সাথে ভালো দামে কোরবানির পশু গরু, ছাগল ও ভেড়া বিক্রয় করতে পারেন তারা। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের খামারি ও কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, করোনার এই ক্রান্তিকালে তারা খুব দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন। একটি গরু মোটাতাজাকরণ করতে অনেক বড় অংকের টাকা বিনিয়োগ করতে হয়েছে। তাই গরুগুলো যদি বিক্রয় করতে না পারে তাহলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে সকল খামারি ও কৃষকরা। 

উপজেলার রণবাঘার গরুর খামারি আব্দুস সালাম লাদু বলেন, এবার ঈদুল আযহায় বিক্রয়ের জন্য আমি ১৬ টি গরু লালনপালন করেছি। এখন করোনা পরিস্থিতি নিয়ে খুব দুঃশ্চিন্তায় আছি। আমার এই গরুগুলো ন্যায্য দামে বিক্রয় করতে পারবো কি না তা নিয়েই চিন্তিত। লকডাউন থাকায় হাট-বাজারের বেচাকেনার হালচাল ভালো বোঝা যাচ্ছে না। ভাবছি গরুগুলো ঢাকায় নিয়ে গিয়ে বিক্রয় করবো। এখন ঠিকমতো গাড়ি পাওয়া যাবে কি না তাও ভাবছি। ঢাকাতে হাট হবে কি না তাও ভাবার বিষয়। মথুরাপুর গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান জানান, আমাদের এলাকায় বড় গরুর চেয়ে ছোট ও মাঝারি গরু বেশি রয়েছে। এছাড়া অনেকেই ছাগল ও ভেড়া পালন করেছে। আমি ৪ টি গরু লালনপালন করেছি। এভাবে যদি লকডাউন থাকে তাহলে গরু কে কিনবে? আবার এই গরু লালনপালনে খরচও অনেক হয়েছে। তাই লোকসান হলেও গরু বিক্রয় করতেই হবে। গোখাদ্যের দাম অনেক বেশি হওয়ায় গরু রাখা সম্ভব নয়। একটি গরুর পিছে প্রতিদিন প্রায় ১৫০ টাকা ব্যয় হয়। নাগরকান্দি গ্রামের কৃষক সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, গরু লালনপালন করে এখন আর তেমন লাভ হচ্ছে না। কারণ গোখাদ্যের দাম অনেক বেশি। ১ বিঘা জমির খড় কিনতে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা লাগে। প্রতি কেজি ভূষি ৪৫ টাকা, প্রতি কেজি খুদ ৪০ টাকা, প্রতি কেজি খৈল ৪০ টাকা ও প্রতি কেজি ফিড ৫০ টাকা দরে কিনতে হয়। এছাড়া অনেক ধরনের ওষুধও কিনতে হয়। 

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা অরুনাংশু মন্ডল জানান, এই উপজেলায় খামারি ও কৃষকদের বাড়িতে সরকারি হিসেবে প্রায় ২১ হাজার গরু, ছাগল ও ভেড়া রয়েছে। খামারি ও কৃষকরা এখন কোরাবানির জন্য গরু ও ছাগল লালনপালন করে বিক্রয়ের জন্য দিন গুণছে। তিনি আরো বলেন, আমি মাঠ কর্মীদের মাধ্যমে খামারি ও কৃষকদের গরুর ছবি তুলে আমাদের অনলাইন প্লাটফর্মে যা বিক্রয়ের জন্য আপলোড করে দিয়েছি। এছাড়া কোরবানির পশুর হাট শুরু হলে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আমরা প্রস্তুত। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত