থমকে আছে পঞ্চগড়ে এলজিইডি’র সড়ক উন্নয়নের কাজ
প্রকাশ: ৬ মার্চ ২০২৪, ১০:৪২ | আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৭
পঞ্চগড় জেলায় নানা কারণে গ্রামীন জনপদে সড়কের উন্নয়ন কাজে স্থবিরতা বিরাজমান। তিন বছর গত হলেও এমন সড়কের কাজ ও বন্ধ রয়েছে। ফলে এলাকার জনগনের দূর্ভোগ বেড়ছে।
এসব প্রকল্পের কাজ গত ২০১০৮-১৯ এ শুরু হয়ে ২০২২ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তদারকি ও ঠিকাদারে অবহেলা এ পর্যন্ত ৩০ ভাগ থেকে ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে তা বন্ধ থাকে।ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে, কে হাসান এন্টার প্রাইজ, গোলাম রসুল, আফিরুল ইসলাম, ফ্রেন্ডস ইন্টারন্যাশনাল, সাদেকা ইসলাম এন্টার প্রাইজ, শাহাদাত হোসাইন, ও এএইচ-এএসবি জেভি ও নাবিয়া এন্টার প্রাইজ। এসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজগুলো তদারকি ও ঠিকাদারে অবহেলায় এখনো শেষ হচ্ছে না।
জানা যায়,এসব সড়ক স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কারন অনুসন্ধান করতে গিয়ে দুই রকম কারণ পাওয়া গেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনেকে বলছেন বরাদ্দ নাই’ তাই আমরা কাজ বন্ধ রেখেছি। তবে ঠিকাদারের কেউ নাম প্রকাশ করতে আনীহা প্রকাশ করেন। তবে এক ঠিকাদার প্রায় আড়াই কোটি টাকার সড়ক নির্মাণ কাজ বন্ধ করে রেখেছে। তার এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে চলাচলকৃত সড়কটির কাজ বন্ধ রয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রবিউল ইসলাম রবি জানান ‘দুই বছর অতিবাহিত হলেও সড়কটির কাজ শেষ করা হচ্ছে না। জানা যায়, এফ ডাব্লিউ পিএম শেষ করে কাজটি বন্ধ রাখা হয়েছে। অপরদিকে সদর উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের খালপাড়া নামক এলাকায় একই অবস্থা।এছাড়া সদর উপজেলার কামাতকাজলদিঘী ইউনিয়নের মামা ভাগিনা ব্রীজের সামনে এফ ডাব্লিউ পিএম করার আগেই সেটি বন্ধ করা রয়েছে কাজ। সাতমেড়া ইউপির বাসিন্দা আইবুল হক বলেন‘ দেখেন দেখি এ সড়কে কাজ কবে শেষ হবে।
এ তিনটি কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম কামরুল হাসান এন্টার প্রাইজ বলে জানান স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)পঞ্চগড় এর নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে। এ বিষয়ে ওই ঠিকাদারের মুঠোফোন একাধিকবার কল দিলে তার ফোনের বন্ধ পাওয়া যায়।দ এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহমুদজ্জামান বলেন, ওই ঠিকাদার কাজটি ফেলে রেখেছে। কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য তাকে চিঠি দেওয়া হবে। তা না হলে ‘ তার কার্যাদেশ বাতিল করা হবে। এছাড়া তিনি বলেন ‘ঠিকাদারের সাথে কথা বলা হবে ‘ যদি তারা কাজ না করে নতুন করে টেন্ডার আহ্বান করা হবে।
এদিকে জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের অভ্যন্তরে পরিষদ এলাকা থেকে তেতুঁলিয়ার প্রবেশদ্বারে ব্রীজ পর্যন্ত সাড়ে ৯ কিলোমিটার সড়ক মেরামতের কাজ চললেও তা দীর্ঘ এক বছর ধরে সেটি বন্ধ আছে। তার সাথে সংযুক্ত রয়েছে পঞ্চগড় সদর উপজেলার জালাসি মোড় থেকে হাড়িভাসা সড়কটি। এটির দৈর্ঘ্য সাড়ে ১০ কিলোমিটার। এই দুই উপজেলার মোট কাজের দর ২৬ কোটি টাকা। তবে হাড়িভাসা-পঞ্চগড় সড়কের কাজ দীর্ঘ প্রায় এক বছর বন্ধ থাকার পর নানা টানাপোড়েন আর নাটকীয়তার মধ্যে গত একমাস আগে সেই সড়কটির কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু এর আগে সড়কটির কাজ বন্ধ থাকার কারনে অসংখ্য দূর্ঘটনা ঘটে। নানা সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন মিডিয়ায় হাড়িভাসা সড়কটির কাজ বন্ধ থাকার ঘটনা প্রকাশ হলে তড়িঘড়ি করে কাজটি শুরু করা হয়। সেখানকার অনেকে বলেন‘ ভাই কি করার আছে অমাদের আপনারা একটু লেখালেখি করেন। সড়কটি দিয়ে চলাচল করা ঝূঁকি।
এদিকে তেতুঁলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের অভ্যন্তরে সাড়ে ৯ কিলোমিটার সড়কের বিষয় জানতে গিয়ে জানা গেছে এই শালাবাহান ও হাড়িভাসা সড়কটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম সাইফুল আলম। তিনি ঠাকুরগাওয়ের বাসিন্দা। তবে তার সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে তিনি বলেন‘ কাজ বন্ধ রাখার কারণ ছিল নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে গেছে। তাই বন্ধ রাখা হয়েছিল। তিনি বলেন এক টন বিটুমিনের দাম ছিল ৪০ হাজার টাকা। তা বেড়ে এখন ৮৮ হাজার টাকা। তাছাড়া পাথরের দামও বেড়েছে। যে পাথরের সেফটি ছিল অনেক কম ‘ তা এখন ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। ভ্যাট আইটি বাদ দিয়ে পাই ৫৮ টাকা। সাইফুল আলম বলেন‘ তবে হাড়িভাসা সড়কের কাজটি একমাসের মধ্যে শেষ হবে বলে জানান। আর শালবাহান সড়কটির কাজটি তিনি অন্য এক ঠিকাদারকে দিয়েছেন বলে জানান।
তবে তিনি এ কাজটি কবে নাগাদ শেষ হবে তা তিনি নিশ্চিত করেননি। এছাড়াও আরো সড়কগুলো হচ্ছে, চাকলাহাট ইউপি হয়ে ডাবরভাঙ্গা, ফুটকীবাড়ি হেলথ সেন্টার হয়ে বজরাপাড়া, আটোয়ারি সড়কের পূর্ব প্রধানপাড়া,সিপাইপাড়া,পঞ্চগড়-চাকলাহাট সড়কের কুচিয়ামোড় মাদ্রাসা, তেতুঁলিয়ার বুড়াবুড়ি বন্দিভিটা, শালবাহান ইউপি, বোদার পাথরাজহাট,ঝলইহাট ইউপি হয়ে লাঙ্গল গ্রাম ও কাজলদিঘী নিচারহাট সড়ক, দেবীগঞ্জের বাগদহ ইউপি হয়ে চেংঠি বাজার পর্যন্ত সড়ক। এসব সড়ক শেষ না হওয়ায় জনদূর্ভোগ বেড়েছে।
সান
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত