তবুও ডাকে বৈশাখ 

  সাহিত্য ও সংস্কৃতি ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২২, ১০:১২ |  আপডেট  : ৪ মে ২০২৪, ০২:৪০

দেলোয়ার হোসেন
-------------------

পদ্মার পাড়ের সিদ্ধেশ্বরীর ভিটায়
আকাশ ‘কেনোপির’ বট গাছের নিচে মিলতো
চৈত্র সংক্রান্তির মেলা। 
দশ গ্রামের মানুষে থৈথৈ করতো মেলা প্রাঙ্গণ
শ্রাবনে লাল ডোরা পুটির কাফেলা।
মানুষে ভরে যেতো আশপাশের আবাদী জমি।
রঙ বেরঙের ঘুড়ি উড়তো, আবাবিলের ঝাঁক।  
পদদলিত হতো কৃষকের পাঁজর ভাঙ্গা ফসল।
মুখ থুবড়ে পড়ে থাকতো চর্বিত তৃণ
আব্রাহার বাহিনীর হাতি ঘোড়া
তরমুজ বাঙ্গি চিনা ও ফুটি।
তবুও আনন্দের বন্যা বইতো মেলায় 
তবুও চাঞ্চল্য থাকতো প্রাণে প্রাণে।

সিদ্ধেশ্বরীর বট গাছ পদ্মা গর্ভে বিলীন।
চৈত্র সংক্রান্তির মেলা বসে না আর।
দাম্পত্য নদীতে নাই ‘সুবর্ণ খুরা’ পোনা।
যৌবনে আর ভাসে না পদ্ম ফুল।
বৈশাখের পান্তা ইলিশ প্রবল ভাবে মনে চায়।
নাগর সেজে নাগর দোলায় চড়তে ইচ্ছে করে
যেমন চড়তাম ভয়ার্ত প্রিয়ার হাত ধরে।
প্রবল ভাবে টানে এক তারার সুর ঝঙ্কার। 

সময় পাল্টে গেছে সময়ের পিঠে,
ঢোল মাদল খঞ্জরের কলতানে মৌনতা এখন
মরিচায় মোড়ানো তানপুরার তার।
অপারেজেয় বাংলার সমুন্নত শীর আনত
কি জানি কখন খঞ্জর বিদ্ধ করে শরীর !
লক্ষীপেঁচা ঈগল জোড়া পুতুলকে ঢেকেছে
বিমূর্ত মৌনতার চাদর।
শরীরে উত্তাল যৌবনের উষ্ণতা নেই
দেহ জড়িয়ে বরফের উত্তরীয়।
তবুও ডাকে বৈশাখ লাল হলুদ রঙে,
মন বলে যাই যাই 
দেহ বলে না।


•কবিতাটি জাতীয় কবি পরিষদের সাপ্তাহিক কবিতা প্রতিযোগিতার ১৯৫ তম পর্বে শ্রেষ্ঠের তালিকায় নির্বাচিত।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত