টিম সম্পর্কে বাইরের কে কী মন্তব্য করল, ভাবী না
প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২১, ০৭:৪৬ | আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০:৩৫
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে গতকাল হাসতে হাসতেই প্রবেশ করলেন বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। চোখে-মুখে স্বস্তির ছাপ। কিন্তু প্রথম প্রশ্ন শোনার পরই যেন মুখোচ্ছবি বদলে লাল হয়ে গেল। দেশের অনেক মানুষ বলছে, প্রথম ম্যাচে হারার পর বিসিবি সভাপতি নাকি বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে, আর তাতেই নাকি সাফল্য আসছে, এই বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
উত্তরে রাসেল ডমিঙ্গো বলেন, ‘বাইরের কিছু নিয়ে আমি ভাবি না। এখানে এসেছি, কেবলমাত্র ক্রিকেটে নজর দিচ্ছি। আমার কাজ শুধু ক্রিকেট নিয়ে। টিম সম্পর্কে বাইরের কে কী মন্তব্য করল, মিডিয়া কি লিখল তা নিয়ে ভাবি না। এই মুহূর্তে আমার ফোকাস কেবলই দল নিয়ে। ক্রিকেটারদের প্রস্তুতি ঠিকঠাক হচ্ছে কি না! খেলোয়াড়রা মানসিক ও শারীরিকভাবে ভালো আছেন কিনা তা লক্ষ্য রাখা।’
কোচের ভাষ্য, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটই এমন। তবে বাংলাদেশের মতো দলগুলোর ওপর প্রত্যাশা থাকে অনেক বেশি। তাই একটু খারাপ করলে অনেক বেশি সমালোচনাও শুনতে হয়। এটা নিয়ে ভেবে লাভ নাই। আমরা কেবল ভাবী দলের পারফরম্যান্স নিয়ে।’
আজ সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ। প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় (বাংলাদেশ সময় ৪টা) খেলা শুরু হবে। এই পর্বে বাংলাদেশের খেলার কথা ছিল দুই নম্বর গ্রুপে। কিন্তু প্রথম রাউন্ডে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে না পারায় খেলতে হচ্ছে এক নম্বর গ্রুপে। ক্রিকেট বিশ্লেষকদের কাছে এটি টাইগারদের জন্য শাপেবর হয়েছে। কারণ, এশিয়ার দলগুলো টাইগারদের মনস্তাত্ত্বিক চাপ বাড়িয়ে দেয়। তবে এমনটা মনে করেন না ডমিঙ্গো। তিনি বলেন, ‘এই পর্যায়ে যারা খেলতে আসে সবাই প্রতিপক্ষ হিসেবে কঠিন। তাই গ্রুপ নিয়ে ভাবার কিছু নেই। এখানে সুবিধা-অসুবিধার কথা উঠতে পারে না।’
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচে হেরেছিল বাংলাদেশ। তারপরও আজ আশাবাদী কোচ। তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আমরা কয়েক মাস আগেও খেলেছি। বেশ কিছু মধুর স্মৃতি আছে। ওয়ানডেতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। টেস্টেও আমরা ভালো করেছি। তবে এটা অন্যরকম একটা ফরম্যাট। শুধু এটা বলতে চাই, আমাদের দলটা খুবই ব্যালান্স। আমাদের বিশ্বমানের কয়েকজন বোলার আছেন। ভয়ংকর কয়েকজন ব্যাটসম্যানও আছে। তা ছাড়া সাকিবের মতো বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার আছে আমার দলে।’
টি-২০তে বাংলাদেশ দলের একটা বড় সমস্যা হচ্ছে পাওয়ার প্লে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে না পারা। সে কারণে অনেক সময় বড় স্কোর হয় না। তবে আগের ম্যাচে প্রথম ছয় ওভারে দারুণ ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ দল। পাওয়ার প্লেতে ওভার প্রতি রানের গড় আটের কাছাকাছি ছিল। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধেও পাওয়ার প্লে কাজের লাগানোর ওপর বাড়তি নজর দিচ্ছে ডমিঙ্গো। খেলা শারজাহ ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বলে ডমিঙ্গোর আশার ফানুসটা অনেক বড়। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে এখানকার উইকেট অনেকটা ঢাকার মতো। আর এই বিষয়টাই আমাদের ভালো করতে অনুপ্রাণিত করতে পারে।’
বাংলাদেশ প্রথম রাউন্ডে রানার্সআপ হওয়ায় একটা সুবিধা হচ্ছে, এখন বাংলাদেশের প্রতিটি ম্যাচ হবে দিনের আলোয়। মরুভূমিতে সাধারণত রাতে বেশি শিশির পড়ে। তাই বল গ্রিব করাই কঠিন হয়ে যায়। এটিই টাইগারদের জন্য বাড়তি সুবিধা।
এখানে আরেকটি সুবিধা হচ্ছে, অন্য স্টেডিয়ামের চেয়ে শারজায় বাউন্ডারি তুলনামূলক ছোট। পাওয়ার হিটার না হয়েও অনায়াসে ছক্কা হাঁকানো সম্ভব। বেশির ভাগ সময় দেখা যায়, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা দ্রুত রান তোলার জন্য যখনই ছক্কা হাঁকাতে যায়, বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ হয়। এই মাঠে সেই সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে।
সব কিছু মিলে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সবই যেন টাইগারদের অনুকূলে। এখন সঠিক সময়ে সেরা পারফরম্যান্সটা প্রদর্শন করতে পারলেই বাজিমাত।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত