ছাত্রলীগের সভাপতি কারাগারে, তৎপর বহিষ্কার

  লৌহজং থেকে মানিক মিয়া

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৩, ১১:৩৯ |  আপডেট  : ২৫ মার্চ ২০২৪, ২৩:০৫

মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন ইমন অর্থ জালিয়াতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছে। গেলো রবিবার দুপুরে ঢাকার বিজ্ঞ মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে অগ্রীম জামিন চাইলে ম্যাজিস্ট্রেট নামঞ্জুর করে  কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ঢাকার ইসলামপুরের কাপড় ব্যবসায়ী সোহেল আহমেদের পক্ষে আনোয়ার হোসেন রিয়েল চেক জালিয়াতির সাতটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় (২৯ মে) সোমবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ফরহাদকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করেন।

জানা যায়, সাদনিন ফেব্রিক্স থেকে ২০১৮ সালে ১ কোটি ১৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকার মালামাল বাকিতে ক্রয় করেন বিক্রমপুর ফ্যাশন হাউজের ফরহাদ বয়াতি। পরে ২০১৯ সালের ৭টি চেক ও ২০২০ সালের ৬টি চেকসহ মোট ২৪টি চেক প্রদান করে। এর মধ্যে একটি চেকও পাস হয়নি। সে প্রেক্ষিতে কোর্টে গিয়ে বাদী হয়ে সাতটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী আনোয়ার হোসেন।

বাদী আনোয়ার হোসেন রিয়েল জানান, বিক্রমপুর ফ্যাশন হাউজের প্রোপাইটর ফরহাদ বয়াতী ওরুফে ফরহাদ হোসেন ইমন আমাদের সাদনিন ফেব্রিক্সের সাথে ব্যবসা শুরু করে। প্রথম থেকেই বাকি নিতো। কিন্তু ১ কোটি ১৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা পাওনা হই। পরে ২০১৯ সালে আমাদের ৭টি চেক ও ২০২০ সালের ৬টি চেকসহ মোট ২৪টি চেক দেয়। এ চেকগুলো ব্যাংকে নিয়ে গেলে চেক পাস হয় না। পরে ফরহাদের নিকট টাকা চাইলে আমাদের হুমকি ধমকি দেয়। পরে বাধ্য হয়ে কোর্টে মামলা দায়ের করি। ২৮ মে রবিবার ফরহাদ কোর্টে অগ্রীম জামিন চায় কিন্তু বিজ্ঞ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মহোদয় জামিন নামঞ্জুর করে এবং গ্রেফতার করে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করেন।
 
ফরহাদ হোসেন ইমন ২০১৯ সালের ২৯ মে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন অপকর্ম ও পদ বানিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দিয়ে কমিটি গঠনের পর আগামী ৯০ দিনের মধ্যে পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু এ নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ২ বছর পরে ২০২১ সালের ২৭ জুলাই পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। সে কমিটি নিয়েও নানান অভিযোগ রয়েছে। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করার কথা থাকলেও সে কমিটি করে ১৯৪ সদস্য বিশিষ্ট। গঠণতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিবাহিত, ছাত্রদলের নেতা, প্রবাসী, বহিষ্কৃতদের পদ দেওয়া হয়। সিনিয়র সহ-সভাপতি পদটি সজিব মোল্লার কাছ থেকে আইফোনের বিনিময়ে পদ দেন। আরেক সহ-সভাপতি রোবেল মোল্লা ও জুবায়ের সিকদার বিবাহিত বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও একই পদের সজল ফরাজী প্রবাসে রয়েছেন। খিদিরপাড়া ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি তন্ময় মণ্ডলকে উপজেলা কমিটির সহ-সম্পাদক করা হয়েছে। এমনি ফরহাদ ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। এ ঘটনায় লৌহজং উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এ ঘটনার সত্যতা শিকার করে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল মৃধা দেশ রূপান্তরকে জানান, অর্থ কেলেংকারী মামলায় ফরহাদ গ্রেফতার হয়েছে এ বিষয়ে আমরা অবগত আছি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন। আমরা সব তথ্য দিয়েছি। আমাদের কাছে বহিষ্কার করার ক্ষমতা নেই। এ ক্ষমতা শুধু মাত্র কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের। ঘটনার সত্যতা পেয়ে ওনারা এর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত