চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলে পেনশন সুবিধার বিষয়ে আপিলের অনুমতি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২২, ১৪:১৯ |  আপডেট  : ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৫:৩১

সরকারি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলে পেনশন সুবিধা না পাওয়া সংক্রান্ত বিধানের অংশবিশেষ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি (লিভ টু আপিল) পেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। সোমবার (২৪ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন ।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোরশেদ শুনানি করেন। অন্যপক্ষে রিট আবেদনকারী আইনজীবী মাহবুব মোরশেদ নিজেই শুনানি করেন।

এর আগে ২০১১ সালে অতিরিক্ত জেলা জজ মাহবুব মোরশেদ স্বেচ্ছায় পদত্যাগপত্র জমা দেন। একই বছরের ৩১ জানুয়ারি থেকে তার পদত্যাগপত্র কার্যকর হয়। পরবর্তী সময়ে এককালীন পেনশন ও আনুতোষিক মঞ্জুরের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন মাহবুব মোরশেদ।

এরপর ২০১৫ সালের ২৫ মার্চ প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মাহবুব মোরশেদের পেনশনসংক্রান্ত বিষয়টি ফেরত দিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, সরকারি চাকরি থেকে পদত্যাগ করলে আগের চাকরিকাল বাজেয়াপ্ত (যত দিন চাকরিতে ছিলেন) হবে। অর্থাৎ পেনশনের জন্য তা গণনাযোগ্য হবে না (বিএসআর প্রথম খণ্ডের বিধি-৩০০ সেকশন-৩)। পেনশনারের (মাহবুব মোরশেদ) চাকরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হয়নি। তিনি ২৫ বছর পূর্তি সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট বিধানের আলোকে পেনশনের জন্য কোনো আবেদন করেননি বলে পেনশনপ্রাপ্ত নন (১৯৭৪ সালের গণকর্মচারী অবসর আইনের ৯ ধারা)।

পরে বিএসআর প্রথম খণ্ডের বিধি-৩০০ এবং ওই চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৬ সালে মাহবুব মোরশেদ হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি  নিয়ে ২০১৬ সালের ৮ মে হাইকোর্ট রুল রুল জারি করেন। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০২১ সালের বছরের ১৮ মার্চ রায় দেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্ট তার রায়ে ২০১৫ সালের ২৫ মার্চের চিঠিটি আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বাতিল ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে চাকরির মেয়াদ অনুসারে মাহবুব মোরশেদের পেনশনসহ অন্যান্য বকেয়া সুবিধা গণনা ও মঞ্জুর করতে সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সার্ভিস রুলসের বিধি-৩০০ (এ) অনুযায়ী, সরকারি চাকরি থেকে কেউ পদত্যাগ করলে অথবা অসদাচরণ, দেউলিয়া, অদক্ষতা অথবা নির্ধারিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারার কারণে চাকরি থেকে বরখাস্ত বা অপসারিত হলে তার চাকরি বাজেয়াপ্ত বলে বিবেচিত হয়।

বিধির ৩০০ (বি) বলছে, অন্য কোনও পেনশনযোগ্য চাকরিতে যোগদানের উদ্দেশ্যে কেউ পদত্যাগ করলে তা সরকারি চাকরি থেকে পদত্যাগ হিসেবে গণ্য হবে না। হাইকোর্ট চাকরি থেকে পদত্যাগের কারণে পেনশন না পাওয়া সংক্রান্ত বাংলাদেশ সার্ভিস রুলসের (বিএসআর) প্রথম খণ্ডের বিধি-৩০০ (এ) অংশটুকু সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করেন।

এরপর হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে  লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে রাষ্ট্রপক্ষ। পরে চেম্বার জজ আদালত হাইকোর্টের রায়টি স্থগিত করে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য প্রেরণ করেন।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত