যুদ্ধবিরতি নিয়ে কিছু বলেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট

গাজায় বেসামরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতে নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ জো বাইডেনের

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৪:০৭ |  আপডেট  : ১২ মে ২০২৪, ১৬:২২

গাজা উপত্যকায় বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে চাপ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কিছু বলেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

গতকাল শনিবার নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলাপকালে বাইডেন গাজার বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতের বিষয়ে জোর দেন। হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে এসব কথা জানিয়েছে।

গাজায় নিরাপদে ও অবাধে মানবিক সহায়তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাসের এক দিন পর নেতানিয়াহু ও বাইডেনের মধ্যে আলাপ হলো। তবে পাস হওয়া ওই প্রস্তাবে ইসরায়েল ও হামাস যোদ্ধাদের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়নি।

হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে সহায়তাকারী ব্যক্তিরাসহ বেসামরিক জনগণকে সুরক্ষা এবং চলমান লড়াইয়ের মধ্যে বেসামরিকদের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার গুরুত্বের ওপর তাগিদ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।’

এর আগে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বাইডেন বলেন, নেতানিয়াহুর সঙ্গে তাঁর ‘দীর্ঘ আলাপ’ হয়েছে। একে তিনি ‘একান্ত আলাপচারিতা’ বলে উল্লেখ করেন।

এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে বাইডেন বলেন, ‘আমি যুদ্ধবিরতির জন্য কোনো আহ্বান জানাইনি।’

হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়, অন্য জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করার ব্যাপারে গুরুত্বারোপসহ ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের ‘লক্ষ্য ও পর্যায়ক্রমগুলো’ নিয়ে দুই নেতা আলোচনা করেছেন।

গত ৭ অক্টোবর গাজা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালায় হামাস। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দেওয়া হিসাব অনুসারে এএফপি বলেছে, ওই দিনের হামলায় প্রায় ১ হাজার ১৪০ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক। সেদিন হামাস দুই শতাধিক ব্যক্তিকে জিম্মি করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করে আসছে ইসরায়েল। হামাসের হামলার জবাবে ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

গত মাসে হওয়া যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী ১০৫ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এর মধ্যে ৮০ জন ইসরায়েলি। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগারে আটক থাকা ২৪০ ফিলিস্তিনিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলেছে, গাজায় এখনো হামাসের সদস্যদের কাছে ১২৯ জিম্মি আছেন।

হামাস–শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুসারে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় কমপক্ষে ২০ হাজার ৫৭ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগ নারী ও শিশু।

কয়েক দিন ধরে কূটনৈতিক টানাপোড়েন চলার পর গত শুক্রবার নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবটি পাস হয়। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েকবার প্রস্তাবটিতে ভেটো দিয়েছিল। তবে প্রস্তাবে যুদ্ধবিরতির আহ্বানের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র তাতে ভেটো দেওয়া বন্ধ করে এবং ভোটদানে বিরত থাকে। রাশিয়াও ভোটদানে বিরত ছিল।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, সহায়তাগুলোর কার্যকর সরবরাহ নিশ্চিতের একমাত্র উপায় হলো মানবিক যুদ্ধবিরতি।

গাজায় ব্যাপক আকারে সহায়তা পৌঁছানোর সুযোগ করে দিতে ইসরায়েলকে চাপ দিয়ে আসছে জাতিসংঘ। তবে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, নিরাপত্তার স্বার্থেই তাঁরা গাজায় সব মানবিক সহায়তাকেই নজরদারির আওতায় রাখবেন।

জাতিসংঘের হিসাব অনুসারে, গাজার ২৪ লাখ বাসিন্দার মধ্যে ১৯ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

 

সান

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত