কোটি টাকা নিয়ে ডাচ-বাংলার এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের উদ্যোক্তা উধাও

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬:৩২ |  আপডেট  : ২ মে ২০২৪, ০৮:৫৮

নরসিংদীর রায়পুরায় ডাচ-বাংলা ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা তালাবদ্ধ করে গ্রাহকের কয়েক কোটি টাকা নিয়ে উদ্যোক্তা শহিদুল ইসলাম লিটন উধাও হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা। 

গতকাল সোমবার (২২ জানুয়ারি) উপজেলার মহেষপুর ইউনিয়নের আলগী বাজারের সততা এন্টারপ্রাইজ নামে ওই এজেন্ট ব্যাংকের কার্যালয় তালাবদ্ধ দেখা গেছে। সেখানে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা ভিড় করেছেন। তারা অন্য শাখায় অনলাইনে নিজের হিসাব নম্বরে টাকা দেখতে না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় এজেন্ট ব্যাংকিং ইনচার্জ ও অন্যান্য কর্মচারীদের কাছে নিজেদের জমা রাখা টাকা দাবি করেন গ্রাহকরা।

ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানান, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সুনাম থাকায় বিশ্বস্ত হিসেবে অনেকেই এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটে টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করেছিলেন। তাদেরকে শাখা থেকে জমা রশিদও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ব্যাংকের উদ্যোক্তা শহিদুল ইসলাম লিটন হাজার হাজার গ্রাহকদের ওই টাকা মূল শাখায় জমা না দিয়ে অন্তত ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে রোববার (২১ জানুয়ারি) শাখাটি তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যান। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ব্যাংক কর্তৃপক্ষ প্রতারক উদ্যোক্তার নামে সাধারণ ডায়েরি ও আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। 

মহেষপুর ইউনিয়নের লিপি বেগম নামে এক নারী গ্রাহক বলেন, ১৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা রেখেছিলাম ব্যাংকে। হঠাৎ শুনি ব্যাংকের লোকেরা টাকা নিয়ে পালিয়েছে। এখানে এসে ব্যাংক তালাবদ্ধ দেখছি। স্বামী বিদেশে, কষ্ট করে পাঠানো জমানো টাকা রাখতাম। ব্যাংকে টাকা রাখা নিরাপদ মনে করে সব টাকা জমা করেছিলাম। আমি এখন কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। টাকা ফেরত চাই।

চাঁনপুর ইউনিয়নের মাঝেরচর এলাকার হিরন মিয়া নামে আরেক গ্রাহক বলেন, ৭ লাখ টাকা ডিপোজিট করেছিলাম। চলতি হিসেবে ৫০ হাজারের মতো ছিল। এমন প্রতারণা মেনে নেওয়া যায় না। আমারসহ সব গ্রাহকের টাকা উদ্ধারে যথাযথ ব্যবস্থা চাই।

ভুক্তভোগী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এই ব্যাংকে ৪০ লাখ টাকা রেখে ছিলাম। এখন শুনি টাকাসহ সেই কর্মকর্তা লাপাত্তা। কী করবো ভেবে পাচ্ছি না। তাকে গ্রেপ্তারসহ আমাদের টাকা ফেরত চাই।

এ ব্যাপারে নরসিংদীর ভেলানগর ডাচ-বাংলা ব্যাংক শাখার ব্যবস্থাপক মাকসুদ হাসান জানান, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের কার্যক্রম প্রধান অফিস নিয়ন্ত্রণ করে। ইতোমধ্যে প্রধান অফিস ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হয়েছে। আইনগত পদক্ষেপ চলমান আছে বলে শুনেছি। 

এভাবেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে সেবা গ্রহণকারীরা। রায়পুরা থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মীর মাহবুব বলেন, এ ঘটনার খবর পেয়ে ছায়া তদন্তে নেমেছে পুলিশ। প্রতারক চক্রটি বেশ বড় অংকের টাকা নিয়ে পালিয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোজলিন শহিদ চৌধুরী বলেন, বিষয়টির কথা শুনেছি। ভুক্তভোগীদের সর্বাত্মক সহযোগিতায় আমাদের কাজ। অভিযোগ পেলে ডাচ বাংলা ব্যাংকের লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করব। 

 

সা/ই

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত