কাঙ্ক্ষিত পর্যটকদের দেখা নেই সুন্দরবনে

  হেদায়েত হোসেন লিটন

প্রকাশ: ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১৯ |  আপডেট  : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩:৫১

দীর্ঘ তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে খুলে দেওয়ার প্রথম দিনে অনেকটাই পর্যটক শূন্য বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন। রবিবার (০১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে দেশী-বিদেশী দর্শনার্থীদের আগমন ঘটেনি বনে। এদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সুন্দরবনের সব থেকে কাছের পর্যটন স্পট করমজল বন্য প্রাণি ও প্রজনন কেন্দ্রে মাত্র ১১০-১২ জন দর্শনার্থী এসেছেন। সুন্দরবনের হারবাড়িয়া ও কটটকা এলাকায়ও দর্শনার্থী নেই বললেই চলে। এমন অবস্থায় ট্রলার ঘাট গুলোতে অলস সময় পার করছেন ট্যুর অপারেটর, টলার শ্রমিকরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন আবহাওয়া ভাল হলে বৃদ্ধি পাবে দর্শনার্থীর সংখ্যা। তবে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় সুন্দরবন সেজেছে নতুন রুপে। প্রাণ প্রকৃতিতে ফিরেছে সজিবতা।বন বিভাগও পযটন স্পটগুলোকে সাজিয়েছে দর্শনার্থীদের জন্য। যার ফলে বনের প্রাণ-প্রকৃতির সজিবতায় খুশি বৈরি আবহাওয়ার মধ্যে আসা দর্শনার্থীরা। চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা দর্শনার্থী লিমন আলী বলেন, চাপাই থেকে এসেছি। অনেকদিন ধরে আমরা চিন্তা করছিলাম সুন্দরবনে আসব। বন্ধ থাকায়
আসতে পারিনি। এসে অনেক ভাল লেগেছে।

একই জেলা থেকে আসা মোঃ আশরাফুল ইসলাম নামের আরেক দর্শনার্থী বলেন, সুন্দরবন দেখে এত ভাল লেগেছে, তা বলে বোঝানো যাবে। আশাকরি আবারও আসব। এদিকে দর্শনার্থী কম আসায় সারাদিনই অলস সময় কাটিয়েছেন মোংলা ঘাটের ট্রলার ও জালি বোট মালিক-চালকরা। ট্রলার চালক রুবেল বলেন, ট্রলার ও বোট নিয়ে আমরা দর্শনার্থীদের জন্য অপেক্ষায় আছি সকাল থেকে। কিন্তু আজকে দর্শনার্থীর সংখ্যা খুবই কম। তাই অলস সময় কাটাচ্ছি। তবে সামনে হয়ত বাড়বে দর্শনার্থীর সংখ্যা। সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, টানা তিন মাস বন্ধ থাকার সময়ে আমরা পর্যটন স্পটগুলোকে দর্শনার্থীদের জন্য প্রস্তুত করেছি। আজকে প্রথম দিনে সারাদিন বৃষ্টির কারণে তেমন দর্শনার্থী আসতে পারেনি। তারপরও ১১০-১২ জনের মত দর্শনার্থী আসছে। এই সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত: জল-স্থলভাগ শুধু জীববৈচিত্র্যেই নয়, মৎস্য সম্পদের আধার। সে কারণে প্রথমে সুন্দরবনের মৎস্যসম্পদ রক্ষায় ইন্ট্রিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানিংয়ের সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছর ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে ২০২২ সাল থেকে মৎস্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে এক মাস বাড়িয়ে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ৩ মাস সময় বৃদ্ধি করে বন মন্ত্রণালয়।

বাগেরহাটে সিডিসি প্রদানের দাবিতে মেরিন শিক্ষার্থীদের অবস্থান নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট বাগেরহাটে ইনস্টিটিউট অফ মেরিন টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা সিডিসি (কন্টিনিউয়াস ডিসচার্জ সার্টিফিকেট) প্রদানের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জমায়েত হয়ে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন শিক্ষার্থীরা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ইনস্টিটিউট অফ মেরিন টেকনোলজির শিক্ষার্থী, শেখ আমানুল্লাহ রাকিব , কামরুজ্জামান সিয়াম, মিরাজ আহমেদ শিহাব, প্রিন্স হাওলাদার, ইরফান, ধীরব চন্দ্র বর্মন, মোঃ অনন্ত, ইমরুল হাসান অপু সহ ইনস্টিটিউটের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থী শেখ আমানুল্লাহ রাকিব বলেন, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন নানা তালবাহানা করে ২০১০ সাল থেকে প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষন ব্যুরোর অধীনে পরিচালিত ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি শিক্ষার্থীদের সিডিসি বন্ধ করে দিয়েছে। যার ফলে দেশের হাজার হাজার ডিপ্লোমা মেরিন ইঞ্জিনিয়াররা বেকার হয়ে পড়ছে। হতাশার জীবন যাপন করছে তারা। দেশের প্রথম সারির শিক্ষার্থীরাই ডিপ্লোমা মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং- এ ভর্তি হয়। কিন্তু শুধুমাত্র সিডিসির অভাবে তারা বিদেশী জাহাজে চাকুরী করতে পারে না। যদি বিদেশী বানিজ্যিক জাহাজে চাকুরী করতে না পারে তাহলে শিক্ষার্থীরা মেরিন ডিপ্লোমা পরে কি করবে। আমরা চাই অতি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করে সিডিসি প্রদানের মাধ্যমে আমাদের মূল্যায়ন করা হোক।

শিক্ষার্থী কামরুজ্জামান সিয়াম বলেন, ১৯৮৮ সাল থেকে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে ডিপ্লোমা মেরিন ইঞ্জিনিয়ার-দের সিডিসি দেওয়া হত। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা বিদেশী জাহাজে সুনামের সাথেই চাকুরী করে আসছিল। তাদের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশের উন্নয়নে অবদান রেখেছে। বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ষড়-যন্ত্রের মাধ্যমে ডিপ্লোমা মেরিন ইঞ্জিনিয়ার-দের সিডিসি বন্ধ করে দিয়েছে। এছাড়া ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও)সহ বিশ্বের অন্যান্য সকল দেশে জাহাজের ক্যাডেট হিসেবে প্রবেশের যোগ্যতা দশম শেণি। কিন্তু আমাদের কেন সিডিসি বন্ধ করে দেওয়া হল? অতিদ্রুত নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে ডিপ্লোমা মেরিন ইঞ্জিনিয়ার-দের সিডিসি প্রদান করতে হবে। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা বরাবর আমরা স্মারকলিপির প্রদান করেছি। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষন ব্যুরোর অধীনে ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি বাগেরহাটসহ সারাদেশে ৬টি ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি রয়েছে। এছাড়া কয়েকটা বেসরকারি বিশ্ব বিদ্যালয়ে চার বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা ইন মেরিন টেকনোলজি পড়ানো হয়। সিডিসি হল- জাহাজে গমনের এক ধরণের অনুমতিপত্র। মার্চেন্ট শিপিং অধ্যাদেশ-১৯৮৩-এর অধীনে একটি বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন থেকে প্রদান করা হয়। সমুদ্র পরিষেবা, কর্মক্ষমতা এবং চিকিৎসা ফিটনেস সম্পর্কিত তথ্য ক্রমাগত একটি সিডিসিতে রেকর্ড করা হয়।

 

সান

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত