কাউনিয়া কলেজে উপাধ্যক্ষ নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ  

  কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২২, ১৯:০৩ |  আপডেট  : ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:৫৪

রংপুরের কাউনিয়া কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগেই ঘাপলা আর উপাধ্যক্ষ নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন মহলে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা।

লিখিত অভিযোগে জানা যায়, কাউনিয়া কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগে তার আপন শশুর নিয়োগ বোডে থেকে নিয়োগ প্রদান করে। অধ্যক্ষ ২১ আগষ্ট ২২ কাউনিয়া কলেজে যোগদান করেন অথচ তার সাবেক কলেজে ইস্তফা পত্র প্রদান করেন ১১ নভেম্বও ২২। এছারাও চলতি বছরের ১৮ নভেম্বর উপাধ্যক্ষ নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত পরীক্ষায় মোট ৫ জন পরীক্ষার্থী অংশ গ্রহণ করে। উক্ত উপাধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য ৯ জন প্রার্থী আবেদন করলেও যাচাই-বাছাই কমিটি ছাড়াই ৪ জনের আবেদন বাতিল করা হয়। বাকি ৫ জনের আবেদন গ্রহণ করা হয়, যার ৩ জনই একই কলেজের শিক্ষক। বাকি ২জন অন্য কলেজের শিক্ষক হলেও একজনকে জানানই হয় নাই। উপাদ্যক্ষ পদে দ্বিতীয় বার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে কোন রেজুলেশন ছারাই। ভুক্তভোগী মাহিগঞ্জ পূর্ব খাসবাগ এলাকার মোফাখখারুল ইসলাম পাটোয়ারী জানান, নিয়োগ পরীক্ষায় টাকার বিনিময়ে পক্ষপাতিত্ব করার জন্য নিয়োগ পরীক্ষার দিন পরীক্ষার হল রুমে তাকে পরীক্ষার প্রবেশ পত্র প্রদান করা হয়, যা ৫/৭ দিন আগে দেয়ার নিয়ম। অপর আরেকজন পরীক্ষার সঠিক সময় না জানায় পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারেনি। পরীক্ষার ফলাফল পরীক্ষা কেন্দ্রে দেয়ার নিয়ম থাকলেও কলেজ অধ্যক্ষ ফারুক আজম পরীক্ষার কেন্দ্র রংপুর সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজে না দিয়ে কাউনিয়ায় নিয়ে যায় এবং রাতে এককভাবে অর্থের বিনিময় ফলাফল ঘোষণা করেন। যাকে নিয়োগ দেয়া হয় সে কলেজের অধ্যক্ষ ফারুক আজমের সাবেক কলেজের সহকর্মী এ.কে.এম জোনায়েদ হোসেন। জোনায়েদ হোসেন সরকার বিরোধী জ্বালাও-পোড়াও কর্মকান্ডের সাথে সরাসরি যুক্ত। জোনায়েদ হোসেন জালাও পোড়াও মালালা এসপেশাল ট্রাইবুনাল মামলার তালিকা ভুক্ত ৮৪নং আসামি, মামলা নং ১৪/২০১৭। জোনায়েদের মীরবাগ ডিগ্রী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারি অধ্যাপক হওয়ায় তার একটি ছুটির আবেদন থেকে জানা যায়, তিনি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতে তার মামলা আছে আছে যার নম্বও ১৪/২০১৭, আসামী নং-৮৪। 

তবে মুঠোফোনে কথা হলে, মামলায় তিনি আসামী নন জানিয়ে বিষয়টিকে সম্পূর্ণ ভুয়া-বানোয়াট বলে দাবি করেন নিয়োগ পরীক্ষায় নির্বাচিত প্রার্থী জোনায়েদ। ভুক্তভোগীর আর একজনের অভিযোগ কাউনিয়া কলেজের অধ্যক্ষ ফারুক আজমের শ্বশুর কাউনিয়া কলেজ কমিটির সদস্য হয়ে নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত থেকে নিজ জামাতাকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন, যা নিয়োগ বিধির পরিপন্থ’ী। কাউনিয়া কলেজে বর্তমানে চলছে নিয়োগ বানিজ্য। কলেজে আরও ৭টি পদে নিয়োগ হবে যেখানে কোটি টাকার বাণিজ্যের কথা শোনা যাচ্ছে। কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও অধ্যক্ষ ফারুক আজম ও তার চাচাতো ভাই শিক্ষক প্রতিনিধি হিরার কাছে অসহায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য, জেলা প্রশাসক রংপুর, মাউশি মহাপরিচালক, মাউশি পরিচালক রংপুর, দুদক রংপুর, নির্বাহী কর্মকর্তা কাউনিয়াসহ বিভিন্ন প্রেসক্লাব বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ ফারুক আজম জানান, নিয়ম মেনেই নিয়োগ দেয়া হয়েছে, উপাদ্যক্ষ নিয়োগে কোন অনিয়ম করা হয়নি। অপরদিকে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সরদার আব্দুল হাকীমও! 

বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে তদন্ত করলে কলেজের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রকাশিত হবে। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি দুর করার দাবী জানিয়েছেন অভিযোগকারী। সুষ্ঠু তদন্ত করলে কলেজের নানা অনিয়মের থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসবে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত