কাউনিয়ায় পাটের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

  সারওয়ার আলম মুকুল,কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২ জুলাই ২০২১, ১৬:৩২ |  আপডেট  : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:১৬

পাট আর চাষির গলার ফাঁস নয়। গত বছরে পাট চাষ করে চাষিরা ন্যায্য মুল্য পেয়ে চলতি মৌসুমে অধিক জমিতে পাট চাষ করেছে। চলতি মৌসুমে কাউনিয়া উপজেলায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে।

জানাগেছে কয়েক বছর আগেও পাটের দাম না পেয়ে কৃষক পাট চাষে আগ্রহ হরিয়ে ফেলেছিল। সেই সময়ে সোনালী পাট কৃষকের গলায় ফাঁস হয়ে ছিল। গত বছর পাটের ভাল দাম পাওয়ায় সোনালী আঁশ আবার পূর্বের ঐতিহ্য ফিরে পেতে শুরু করেছে। কৃষকের কাছে অর্থকরি ফসল হিসেবে পাট চাষের কদর বেরেছে। 

চলতি মৌসুমে পাট চাষ হয়েছে মাত্র ৮৯০ হেক্টর জমিতে। গত বছর চাষ হয়েছিল মাত্র ৬৯৫ হেক্টর জমিতে। শ্রমিক সংকট, পানির অপ্রতুলতা এবং ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় পাট চাষে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছিল পাট চাষিরা। সরকার এবং কৃষি বিভাগের নানামূখি পদক্ষেপে পাটের চাহিদা বৃদ্ধির ফলে কৃষক আবার পাটের দাম পেতে শুরু করেছে। কৃষকরা জানায়, সোনালী আঁশ পাটের চাষ বাড়াতে পাট অধিদপ্তরের লোকজন কাজ করছে। কিন্তু উপজেলায় মাঠ পর্যায়ে পাট অধিদপ্তরের লোকজনের দেখা মেলে না। উপজেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানাগেছে, হারাগাছ পৌর সভাসহ ছয়টি ইউনিয়নে প্রায় ৯০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইয়েদুল ইসলাম জানান, তার ব্লকে এবার অধিক পরিমান জমিতে পাট চাষ হয়েছে। ইতোমধ্যে চাষিরা পাট কাটতে শুরু করেছে। 

পাট চাষি গফুর আলী জানান, সরকারি ব্যবস্থাপনা থাকলেও এ উপজেলায় পাট কেনার ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। এখনও বহু চাষি ফরিয়া পাইকারের কাছে পাট বিক্রি করেন। তা ছাড়া, গ্রামা লে জ্বালানি হিসেবে পাটকাঠির নির্ভরতাও কমে যাচ্ছে। তাই বংশানুক্রমে পাট চাষের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও স¤প্রতি পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়েছেন চাষিরা। কৃষকদের অভিযোগ, আলুর বস্তা, ধানের বস্তা সব পলিথিনের হয়ে যাচ্ছে। হাট-বাজারে পাটের ব্যাগের পরিবর্তে পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহার হচ্ছে। নাজিরদহ গ্রামের কৃষক কামরুজ্জামান বলেন, রংপুর অ লে ব্যাপক পাটের চাষ হতো। গত কয়েক বছর সোনালী আঁশ পাটের আবাদ কমলেও এবছর অনেক পাট চাষ হয়েছে। 

উপজেলা কৃষি অফিসার শাহনাজ পারভীন জানান, বিগত মৌসুমে কৃষক পাটের দাম না পেয়ে পাটের পরিবর্তে বাদাম, ভুট্টা চাষ করেছে কিন্তু গত মৌসুমে পাটের দাম পেয়ে কৃষক পাট চাষে আবার আগ্রহী হয়ে উঠেছে। চলতি মৌসুমে মহারাষ্ট্র, বঙ্গবীর, বেঙ্গল, রবি-১ সহ বিভিন্ন জাতের ৮৯০ হেব্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে পাট চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। আগামীতে পাটের চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।


 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত