আইন আছে প্রয়োগ নাই

কাউনিয়ায় গাছ গুলোর শরীরে প্রচারণার পেরেকে ক্ষতবিক্ষত

  সারওয়ার আলম মুকুল

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৪, ১৮:৫৯ |  আপডেট  : ২ মে ২০২৪, ১২:৫৯

গাছ অক্সিজেন দিয়ে আমাদের জীবন বাঁচিয়ে রাখে। আমরা গাছে পেরেক মেরে তার শরীর ক্ষবিক্ষত করে তার প্রতিদান দিচ্ছি। আমাদের বিবেক কবে জাগ্রত হবে ? আইন আছে যথাযথ প্রয়োগ নাই, কাউনিয়ায় গাছ গুলোর শরীরে প্রচারণার পেরেকে ক্ষতবিক্ষত। গাছেরও যে প্রাণ আছে, সেটা আমরা ভুলে যাই অবলীলায়। তাই প্রচারণার পেরেক ঠুকেঠুকে ক্ষত-বিক্ষত করি গাছ গুলোর দেহ। 

সরেজমিনে কাউনিয়া উপজেলার আরকে রোড সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে দৃশ্য মান জনবহুল রাস্তা ও রাস্তার মোড়ের গাছগুলোর দিকে তাকালেই চোখে পড়ে এমন দৃশ্য। এই সড়ক দিয়ে উপজেলা, জেলা এমন কি বিভাগীয় কর্মকর্তাগণ যাতায়ত করলেও গাছের সাথে এমন কান্ড করা আইনভঙ্গের এই দৃশ্য উনাদের চোখে পড়ে না। গাছে পেরেক বিদ্ধ করে সাইনবোর্ড না লাগাতে ২০০২ সালের ৭ জুলাই জাতীয় সংসদে আইন পাস হয়। কিন্ত বাস্তবে সে আইন কার্যকর হয়নি। সিটি করপোরেশন আইনে ১৯৯০ এর ৯২ ধারার ৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যত্রতত্র পোস্টার-ব্যানারসহ প্রচারপত্র সেঁটে দেওয়া এবং গাছে সাইনবোর্ড লাগানো দন্ডনীয় অপরাধ। এই আইনের আওতায় জরিমানার বিধান আছে। কাউনিয়ায় যথাযথ তদারকির অভাবে পরিবেশ আইন লক্সঘনের প্রবণতা আছে। অনেক সময় সাইনবোর্ড অপসারণ করা হলেও গাছে থেকে যায় কয়েক শত পেরেক। পরে সেগুলো আর তুলে নেয়া হয় না। রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কের গাছগুলোর গায়ে গেঁথে আছে অসংখ্য পেরেক। অধিকাংশ গাছে পেরেকের ক্ষত। উপজেলার আশপাশ ও হাট বাজারের গাছ গুলো প্রচারনার নামে রেহাই পায়নি পেরেক দানবদের অত্যাচার থেকে। গাছে গাছে পেরেক ঠুকে লাগানো হচ্ছে ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টারসহ বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক নেতাদের শুভেচ্ছা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, কোচিং সেন্টার, সুন্নতে খতনা, ডাক্তারের প্রচারনা সহ পণ্যের বিজ্ঞাপন। এতে করে গাছগুলো রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে। ইতিমধ্যে মারা গেছে অনেক গাছ। হারিয়ে যাচ্ছে স্বাভাবিক সৌন্দর্যও। কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহানাজ পারভীন জানান ছোট আকারের পেরেক ঠুকে দেয়া হয়, তাহলে ফ্লোয়েম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে পাতায় উৎপাদিত খাদ্য সঞ্চালনে বাধা পাবে। আর যদি বড় পেরেক ঠুকে দেয়া হয়, তাহলে পানি ও খনিজ লবণ সঞ্চালনে বাধা পাবে। এভাবে চলতে থাকলে মুক্ত বাতাস আর বিশুদ্ধ অক্সিজেনের অভাবে একসময় হয়তো আমাদের প্রাণটাই হারাতে হবে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মহিদুল হক জানান, বিষয়টি নিয়ে বণকর্মকর্তার সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহন করবো। উপজেলা বন কর্মকর্তা মোঃ নূরনবী (পীরগাছা রেঞ্জ কাউনিয়া-পীরগঞ্জ) সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, গাছে পেরেক মারা অন্যায়, গাছে পেরেক মারলে ওই অংশে পানি জমে গিয়ে গাছের ক্ষতি হতে পারে। এ বিষয়ে আমি উর্দ্ধতন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে এব্যপারে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে দিব। বিষয়টি গুরুত্বসহ দেখে আইনের প্রয়োগ করা প্রয়োজন বলে পরিবেশবাদীরা মনে করছেন। 

 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত