সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী পদ্ম ফুলে ফুলে

কাউনিয়ায় অপরূপ সাজে সেজেছে বেতানীর দোলা

  সারওয়ার আলম মুকুল

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭:৩০ |  আপডেট  : ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৮

পানির উপর বিছানো সারি সারি সবুজ পাতা ভেদ করে গোলাপি-সাদা জলজ ফুলের রানি পদ্মফুলে ছেয়ে গেছে কাউনিয়ার বেতানীর দোলা। ভাসমান শতশত পদ্ম বাতাসের দোলায় আর পান কৌরির উঁকি মারা ও বিভিন্ন পাখির কিচির মিচির শব্দ অভিভূত করে প্রকৃতি প্রেমীকে। পদ্ম ফুলে ভরা বেতানির দোলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে ছুটে আসছে প্রকৃতি প্রেমীরা। পদ্ম ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই ছুটে আসছে রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাড়কের পাশে দর্শনার্থীরা। তবে বিল ঘুরে দেখার জন্য নৌকার ব্যবস্থা না থাকায় ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে তাদের।

সরেজমিনে উপজেলার বালাপাড়া ও শহীদবাগ ইউনিয়নের রংপুর কুড়িগ্রাম মহাসড়কের কোল ঘেঁষে দুই পাশে অবস্থিত বেতানির দোলায় ছড়িয়ে আছে শতশত পদ্ম ফুল। মৃদু হাওয়ায় দুলছে জলজ ফুলের রানি পদ্ম ফুল গুলো। হঠাৎ কেউ দেখলেই মনে হবে সৌন্দর্যের পসরা সাজিয়েছে বেতানীর পদ্ম ফুলের বিল। এছাড়াও বিলে পানকৌরি, সাদা বক, পাতি হাঁসের সাঁতার কাটা, বিভিন্ন পাখির শব্দ মনকে উদ্বেলিত করে। বেতানীর দোলার সৌন্দর্যের আভা ছড়াচ্ছে ফুটে থাকা রাশি রাশি গোলাপি পদ্মফুল। প্রকৃতিতে নিজের রূপ বিলিয়ে দিচ্ছে ফুটে থাকা এ জলজ ফুলের রাণী। প্রস্ফুটিত পদ্ম ফুলের সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই ছুটে আসছেন কাছে-দূরের দর্শনার্থীরা। পাশাপাশি তুলছেন ছবি-সেলফি, করছে ভিডিও। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েক বছর আগে থেকে বর্ষাকালে এ দোলার অধিকাংশ জমিতেই প্রাকৃতিকভাবে জন্মে পদ্ম ফুল। আষাঢ় মাস থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত এই বিলে পদ্ম থাকে। এসময় পুরো বিল গোলাপি রঙের পদ্মে ভরে ওঠে, যা দেখলে যে কারও মন জুড়িয়ে যায়। শীত মৌসুমে দোলাটি প্রায় শুকিয়ে ছোট হয়ে যায়। তখন সেখানে ধান চাষ হয়। সেইসঙ্গে দেশি মাছের ছড়াছড়ি এ দোলায়। ফলে এ দোলা থেকে মাছ ধরে জীবিকানির্বাহ করেন স্থানীয় মৎস্যজীবীরা। পদ্ম বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা ব্যাংকার নুর আমিন বলেন, প্রতিবছর এ সময়ে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে পদ্ম দোলা ঘুরতে আসি। এ বিলের সৌন্দর্য দেখার মতো। এখানে ঘুরতে আসলে মন ভালো হয়ে যায়। বেতানীর দোলার পদ্মফুল বিক্রেতা স্থানীয় দুই শিশু আরমান ও মুক্তি বলে, আমরা প্রতিদিন ২শত থেকে ৪শত টাকার ফুল বিক্রি করি। এই ফুল ফুটলে আমাদের দিন ভালো যায়। আমাদের স্কুলের খাতা, কলম, জামাকাপড় কিনতে সুবিধা হয়। স্থানী বাসিন্দা আব্দুস সালাম জানান, বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ বেতানীর দোলার পদ্মর সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে আসেন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে উপভোগ করেন পদ্মবিলের অপরূপ সৌন্দর্য। 

একজন হারবাল চিকিৎসক জানান, পদ্ম ফলের বীজ হৃৎপিন্ড, চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগের ওষুধের উপকরণ হিসেবে ব্যবহূত হয় এবং ডায়রিয়া রোগ সারাতে এর বোঁটা কাঁচা খেলে উপকারে আসে। পদ্মফুলের পাপড়ি দিয়ে তৈরি লোটাস চা গ্যাস্ট্রিক, ডায়রিয়া ও হার্টের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। হাইব্লাড সুগারও নিয়ন্ত্রণ করে। পদ্মের শুকনো মূল গুঁড়া করে খেলে ফুসফস, কিডনি ও পরিপাকতন্ত্র ভালো থাকে। উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোঃ মহিদুল হক বলেন, বেতানীর দোলার পদ্ম বিলে গত কয়েক বছর ধরে শত শত পদ্ম ফুল ফুটতে দেখা যাচ্ছে। পদ্ম ফুল সংরক্ষণের জন্য এখনও কোন পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়নি। তবে আগামীতে কোন পরিকল্পনা গ্রহন করা যায় কিনা সেটা বিবেচনাধীন আছে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত