কাউনিয়ার টেপামধুপুরে কচুর লতিতে কৃষকের ভাগ্যবদলের স্বপ্ন

  সারওয়ার আলম মুকুল

প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৪, ১৭:৩৭ |  আপডেট  : ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২২:১৭

কাউনিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা কম শ্রম ও অল্প খরচে অধিক লাভের স্বপ্ন কচুর লতি চাষে। চলতি মৌসুমে কচুর লতির বাম্পার ফলন আর বাজারে ভাল দাম পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। বাঙ্গালির রান্নাঘরে অনেকদিন ধরেই পরিচিত একটি সবজির নাম কচুর লতি। এই কচুর লতি খেলে অনেকের গলা চুলকায়। কিন্তু সে সমস্যা বাদ দিলে এই সবজির অনেক গুণ আছে। অনেক সমস্যা থেকে বাঁচতে এই সবজির জুড়ি মেলা ভার।

সরেজমিনে তিস্তা নদী বেষ্টিত গ্রাম গ্রাম গুলো ঘুরে দেখা গেছে, কৃষিসমৃদ্ধ এলাকা উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের বিশ্বনাথ চরের মাটি ও আবহাওয়া ফসলের জন্য উপযোগী হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা ধান চাষের পাশাপাশি নানা শাকসবজিসহ বিভিন্ন অর্থকরী ফসলের চাষাবাদ করে থাকেন। তবে অন্যান্য ফসলের তুলনায় রোগ-বালাইয়ের ঝুঁকি কম থাকায় কচুর লতি চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি মৌসুমে কচুর লতির বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে বিক্রি করে ভালো দামও পাচ্ছেন তারা। উপজেলার তকিপল বাজারে পাইকারের কাছে কচুর লতি বিক্রি করার সময় টেপামধুপুর বিশ্বনাথ গ্রামের কৃষক অলি ব্যাপারী জানান, চলতি মৌসুমে ২৫ শতক চরের জমিতে কচুর লতি চাষ করেছেন, তাতে ফলন খুব ভালো হয়েছে। এতে তার খরচ হয়েছে মাত্র ১৫ হাজার টাকা। মৌসুমের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন শেষ পর্যন্ত আরও ২৫ হাজার টাকার কচুর লতি বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন। অন্য আরেক কৃষক আব্দুল গফুর বলেন ২০ শতক জমির মধ্যে লতি চাষ করেছি তিনিও ভাল দাম পেয়েছেন। তিনি জানান ধান চাষের চেয়ে কচুর লতি চাষ অনেক লাভ জনক। এলাকায় কচুর লতির ভালো ফলন হওয়ায় সরাসরি কৃষকের জমি থেকে পাইকাররা কিনে নিচ্ছে। 

গনাই গ্রামের কৃষক দুদু মিয়া জানান, গনাই ও বিশ্বনাথ চরে মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী থাকায় কৃষকরা আলু,ভুট্টা, বাদাম ও বিভিন্ন সবজির পাশাপাশি কচুর লতি চাষ করে থাকেন। কম খরচে ভালো উৎপাদন হওয়ায় কৃষকরা ঝুঁকছে এই ফসল চাষে। উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে ৬টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভাসহ মোট ৩৬৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জবজি চাষ চয়েছে, এর মধ্যে লতি কচু চাষ হয়েছে ১০ হেক্টর। একজন পুষ্টি বিদ জানান, কচুর লতির অনেক উপকারিতা আছে। এর মধ্যে রয়েছে কচুর লতি হাড় শক্ত করে ও চুলপড়া রোধ করে। কুচুর লতিতে ডায়াটারি ফাইবার বা আঁশের পরিমান খুব বেশি। যা খাবার হজমে সাহায্য করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। কচুর লতিতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি আছে, যা সংক্রামক রোগ থেকে আমাদের দূরে রাখে। কচুর লতিতে প্রচুর আঁশ, আয়োডিন, ক্যালসিয়াম, লোহা, ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি রয়েছে। কচুর আঁশ দেহ থেকে বর্জ্য বের করে দেয়, খাবার হজমে সাহায্য করে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহানাজ পারভীন জানান, এ উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের বিশ্বনাথ গ্রামে কচুর লতির চাষ বেশি হছে। কচুর লতি চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। দিনে দিনে কচুর লতির চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক্ষেত্রে স্থানীয় কৃষকদের কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে উৎপাদনে তদারকির পাশাপাশি পরামর্শ ও উৎসাহ প্রদান করা হয়ে থাকে।

 

সান

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত