কাউনিযায় হকার কন্যা মাফির উচ্চ শিক্ষা অর্জনে বড় বাধা দারিদ্র্যতা
প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:৩১ | আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫:১৭
দরিদ্র ঘরে জন্ম নেয়া আফরোজা আক্তার মাফি। নতুন বই কিনে পড়ালেখা করতে পারেনি সে। বন্ধুদের কাছে ধার করে নেওয়া বই দিয়ে সে লেখা পড়া করে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। একবেলা খাবার জুটলেও আরেক বেলা খাবার জুটতো না মাফির ভাগ্যে। ঈদে ছাড়া নতুন জামা উঠতো না গায়ে। দরিদ্রতা আর নানা প্রতিকুলতার সাথে যুদ্ধ করে কাউনিয়া মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সে জিপিএ-৫ পেয়েছে। সে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষাতেও জিপিএ-৫ পেয়েছে। উপজেলার তিস্তা নদীর পাড় ঘেষা পাঞ্জরভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা দরিদ্র পত্রিকা বিক্রেতা (হকার) মোঃ আনোয়ার হোসেনের কন্যা সে। বাড়ি ভিটা ছাড়া আর কোন জমি-জমা নেই তাদের। তার পিতা বাইসাইকেলে চড়ে মাইলের পর মাইল পথ অতিক্রম করে অফিস, হাট বাজারে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে পত্রিকা বিক্রি করে যা আয় হয় তাই দিয়ে কোন রকমে চলে তাদের সংসার। তাছাড়াও বাকী দু'বোনসহ তার লেখা পড়ার খরচ তো রয়েছে। মাফি'র পিতা আনোয়ার হোসেন বলেন আগে আমি একাই ৪৫০টি পত্রিকা বিক্রি করতাম এখন সে জায়গায় পত্রিকা বিক্রি করছি মাত্র ২১০টি। এখন পাঠক অনেক কমে গেছে। এখন সবাই অলনাইনে পত্রিকা পড়েন। তাই প্রিন্ট পত্রিকার কাটতি নেই বললেই চলে। আমার রোজকারও কমে গেছে অর্ধেকে। আমার ৩ মেয়েসহ আমাদের ৫ জনের সংসার। মাফি জানায় পত্রিকা বিক্রেতা বাবার সামান্য রোজকারের টাকায় কোন রকমে চলে তাদের সংসার। মাফি পড়ার খরচ জোগাতে অন্যের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে প্রাইভেট পড়িয়ে, টুপি সেলাই করে যে টাকা পেত তা দিয়ে পড়ালেখা খরচ চালাতে যোগান দিত। মাফির মা রাজিয়া সুলতানা জানান অনেক স্বপ্ন লেখাপড়া শিখে তার মেয়ে ডাক্তার হবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরুণে বড় বাধা দারিদ্র্যতা। ডাক্তারী পড়ার অর্থের যোগান হবে কি ভাবে ? এত টাকা আমরা পাবো কোথায় ? কে এগিয়ে আসবে আমাদের মেয়ের স্বপ্ন পূরুণে। এ চিন্তায় বিভোর মাফির পিতা-মাতা। মাফির পিতা মাতা মেয়ের স্বপ্ন পূরণে বিত্তবাদের কাছে সহযোগিতা কামনা করেছেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত