ওয়াজ মাহফিলে অতিথি হওয়া নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মারামা‌রি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫:৩৮ |  আপডেট  : ৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:২৮

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় ওয়াজ মাহফিলে বিএনপি নেতাদের অতিথি করা না করা‌কে কেন্দ্র করে বিএনপির ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী‌দের দুই প‌ক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার আন্ধারীঝাড় বাজারে এই ঘটনা ঘটে।

ত‌বে ওয়াজ মাহফিলে অতিথি হওয়া‌কে কেন্দ্র ক‌রে নয়, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে এ ঘটনা ঘটেছে বলে দা‌বি ক‌রে‌ছেন ইউনিয়ন বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা।

সংঘর্ষের ঘটনায় ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়কসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে আহত একজন‌কে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হ‌য়ে‌ছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আন্ধারীঝাড় বাজারে অবস্থিত দারুল আরকান ক্যাডেট মাদ্রাসায় বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করে মাদ্রাসার মাহফিল আয়োজক কমিটি। এতে স্থানীয় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের কিছু নেতাকর্মী মাহফিল আয়োজক কমিটির সদস্য হন। আয়োজক কমিটির সিদ্ধান্তে স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিমকে প্রধান অতিথি ও সোনালী ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা আজিজুর রহমানকে সভাপতি করেন। এতে মনঃক্ষুণ্ন হন আন্ধারীঝাড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও আন্ধারীঝাড় ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি শাহাদাত হোসেন। তারা মাহফিলের সভাপতি ও প্রধান অতিথির পদ না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আন্ধারীঝাড় বাজারে মাহফিল আয়োজক কমিটি মাহফিলের চাঁদা আদায় করতে গেলে তাদের ওপর চড়াও হন ইউনিয়ন বিএনপি ও যুবদলের সভাপতির অনুসারীরা। এ সময় মারপিটের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাহারুল ইসলাম (৩৮), ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক বাদল ইসলাম (৪০), যুগ্ম আহ্বায়ক রব্বানী মিয়া ও কৌশিক আহমেদসহ আরও কয়েকজন। এর মধ্যে আজাহারুল ইসলাম গুরুতর আহত হয়ে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন।

আহত আজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘মাদ্রাসাটি বাড়ির পাশে হওয়ায় আমাদের কয়েকজনকে মাহফিল আয়োজক কমিটিতে রাখা হয়েছে। পরে আমাদের সবার পরামর্শে ইউনিয়নের সর্বজনবিদিত দুই ব্যক্তিকে সভাপতি ও প্রধান অতিথি নির্বাচন করি। এ ব্যাপারটি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও যুবদল সভাপতির মনঃপূত হয়নি। সন্ধ্যায় আমরা কয়েকজন মাহফিলের চাঁদা আদায় করতে বাজারে গেলে তারা আমাদের ওপর আক্রমন করে।’

মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম জানান, বুধবার মাদ্রাসার বাৎসরিক মাহফিলের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। মাদ্রাসার আশপাশের বিএনপির কয়েকজনকে মাহফিল আয়োজক কমিটিতে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। মাহফিলে নাম থাকা আর না থাকা বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটিতে এ ঘটনা ঘটেছে।

আন্ধারীঝাড়র ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘মাহফিলে সভাপতি বা প্রধান অতিথি করা নিয়ে মারপিটের ঘটনা ঘটেনি। স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক বাদল বিভিন্ন সময় আমাদের ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে আসছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তার সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়েছে। এ সময় সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। মাহফিল নিয়ে আমাদের কোনও কিছু হয় নাই।’

এ বিষয়ে জানতে আন্ধারীঝাড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে যোগা‌যো‌গের চেষ্টা ক‌রেও তাকে পাওয়া যায়নি।

উপ‌জেলা বিএন‌পির সভাপ‌তি কাজী গোলাম মোস্তফা ব‌লেন, ‘বিষয়‌টি আ‌মার জানা নেই। খোঁজ নি‌য়ে দায়ী‌দের বিরু‌দ্ধে সাংগঠ‌নিক ব‌্যবস্থা নেওয়া হ‌বে।’

ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুনিরুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পে‌য়ে আমি নি‌জেই ঘটনাস্থলে গি‌য়ে‌ছিলাম। তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও পক্ষ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কা/আ 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত