ওরা বেছে থাকার যুদ্ধে নেমেছে

  মোঃ কামরুল ইসলাম কামু

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:৪৫ |  আপডেট  : ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:০৬

 রোদ গরম ধূলো বালু ওদের কাছে কিছু নয়। ওদের জীবনের আলাদা কোন গল্প নেই। দুপুর হলে খেতে হবে ‘ সকাল হলে খেতে হবে। আবার রাতে খেতে হবে। পেটের দায়ে ছুটতে হবে তাদের কর্মে।

এ গল্প যাদের বিত্ত আর আভিজাত্যের স্বপ্ন নেই। শুধু বেঁচে থাকতে হবে। কারন ক্ষুধা তো নাই মানে না। আর খেতে গেলে তো টাকা লাগে। বাজারে গেলেও টাকা লাগে। বাড়িতে গেলেও টাকা লাগে। এই টাকায় জীবন চলার পথে প্রথম অপরিহার্য্য বস্তু। তবে একা নয় ‘সংসার আছে সন্তান আছে স্ত্রী পরিজন আছে। কেউ তো খাওয়াবেনা। বাজার এনেও দিবেনা। ওরা অফিসার বোঝেনা ‘ভিআইপি চেনে না। তবে প্যান্ট শার্ট পরা মানুষ দেখলে স্যার সম্বোধন করেন।

হাতে তার বাশের ডালি ‘ মাথায় কাপড় গোড়ানো বা পেঁচানো। নারী শ্রমিক সবাই সেই রকম কাপড়ের শরীর ঢাকা। নাম তার মীরা বালা। নাম জানতে চাইলে অনেক্ষণ চেয়ে থাকে। চুপচাপ কথা নেই ‘ দেখলে বোঝা যায় কষ্টের জীবনে একটি স্বাদ আছে। কিন্তু সে ভাগ্য তার নেই। কয়স কত হবে ৪০ বছর।মীরা বালা একজন শ্রমিক। তাকে মাথায় পাথর বহন করে পাথর ভাঙ্গা মেশিনে ফেলতে হয়।তার বাড়ি জেলার বোদা উপজেলার সাকোয়ায়। কথা বলতে আমতা আমতা করে। যদি বলি আবার কাজটা চলে যায়। খুব নতজানু হয়ে নরম সুরে বলেন হাজিরা ৪০০ টাকা।

বাংলাবান্ধাস্থলবন্দরের পাথরের সাইডে এমন এক সহজ সরল হতদরিদ্রের রুপান্তরের গল্প । তবে সবার গল্পই এমন যা কষ্টে বিবর্ণ । শুধু বেঁচে থাকাই তাদের জীবন।

বাংলাবান্ধার অতিসন্নিকটে ভারত। শিলিগুড়ি ,ঝলপাইগুড়ি, দার্জিলিং। আরো আছে কুচবিহার একপাশে দক্ষিন দিনাজপুর, চোপড়া। এ পাশে বাংলাদেশের তেতুঁলিয়ার বাংলাবান্ধা। এইস্থবন্দরটিতে নেই স্টোন ক্রাশিং জোন। দিনটি ছিল বাংলা মাসের বৈশাখ দিনটি বৃহষ্পতিবার। চড়া রোদ সারা এলাকায়। পাথর ভাঙ্গা চলছে মেশিনে। পাথর ভাঙ্গা শব্দে এলাকা যেনো কম্পন হচ্ছে। শত শত মেশিনের শব্দ দুর বা কিছু কাছে গিয়েও কারো কথা কেউ বুঝতে পারেন।


সেখানে দেখা যায় প্রখর রোদে পাথর নিয়ে একজন বয়ষ্ক মানুষ কাজ করছেন পাথর তুলে মেশিনে ফেলানো। কাছে যাওয়ার আগে দেখা যায় তিনি এক ধরনের মন মরা। নাম জানতে চাইলে অসহায় হয়ে দাঁিড়য়ে থাকে। তবে তিসি পাথর নিয়ে আবার মেশিনে ফেলবেন‘ প্যান্ট শার্ট পড়া দেখে তিনি ও যেনো চুপ থাকার ভান করে। অবশ্য কয়েক মিনিট পর বলেন ‘ তার নাম রঞ্জু । বয়স কম হলেও ৫৫ হবে। নাকে মুখে পাথর ভাঙ্গার অবশিষ্ট ধুলো বালু। শরীরময় কাপড়ে জড়িয়ে আছে পাথর ভাঙ্গার দুষিত ময়লা। তার বাড়ি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা ১১ মাইল মুজাবর্ণী। তিনি ও মন খুলে বলতে চায়না ‘ তার কষ্ট হয় কিনা। তবে এক সময় বলেই ফেলেন চোখের নিরাপত্তা দরকার। জ্বর জারি হয়। কিরা যাবে খেতে তো হবে।

 এসময় কাছে আসেন তেতুঁলিয়া উপজেলার খাটিয়াগছের খাইরুল ইসলাম। বয়স হয়তো ৪৫ হবে। তিনি বলেন এক বছর ধরে এ কাজ করছি । আমি হাজিরা পাই ৭০০ টাকা। সংসার আছে কষ্ট তো হয়। তবে কি করার।

বাংলাবান্ধা ইউপি চেয়ারম্যান কুদরত ই খুদা মিলন জানান, এখানে সব মিলিয়ে প্রায় ১০ ঞাজার শ্রমিক কাজ করে। ব্যবসায়ি রয়েছে ২০০ শতাধিক। প্রতিদিন প্রায় ৩৫০ থেকে ৪০০ ট্রাক পাথর আসে।

 এদিকে তেঁতুলিয়া উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানিয়েছেন স্টোন ক্রাশিং জোন হওয়ার বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। আমরাও চাই সবাই ভালো থাক।
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত