এক চোখে মায়াকাজল আর চোখে শিশিরের জল

  সাহিত্য ও সংস্কৃতি ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২১, ০৯:৪৬ |  আপডেট  : ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১৩

খান নোমান
---------------


আজন্ম নজরবন্দী রেখেছি খোলা আকাশ, 
দিগন্তে আঁকা ছবি গাঁও- নীলাভ সবুজ,
চোখের আলোয় সোনারঙ রোদ্দুর - ফসলের মাঠ, 
তারার উঠোনে ছিল ষোড়শী চাঁদ ভর যৌবন রাত। 

জীবনের তিয়াস মেটেছে আকণ্ঠ আজীবন
তবুও তৃষার্ত হয় বহমান ঘোড়াউত্রা নদী-
কাইমারবালী মেলা- নাক ডুবু ডুবু পাথরবাহী নাও- 
দূরে -বহূ দূরের কৈটুপি গাঁও।
সব মানুষের সাথে গড়েছি বসত-দেখেছি
কুলহারা ছমিরনের বিষন্ন বিকেল বিগত,
নাওয়ের গলুইয়ে বসা জনাব আলীর ছিপটান দেহ
আঁধারের কারবারি কাতলা মুখ বাসুদেব গুহ।
খুব ভোরে তাহাজ্জুদ পড়া পল্লীজননী;  
হাতে চালভাজা ছাতু-  পাড়া গুড়-  কলচাপা পানি;
  খোকা যাবে দূর শহর - ভোরের ট্রেন ধরে
সবই আজ  থেকে থেকে স্মৃতির কড়া নাড়ে। 

বদলে যাওয়ার নিয়মের বাইরে 
বদলে যেতেও দেখেছি - কীভাবে
কালের সন্তর্পণে এগোয় শ্বাপদ সকল
ক্রমাগত দখলে নেয় বিল-নদী-খাল, 
উপড়ে ফেলে বিশাল বপু শতবর্ষী ঋষি (কড়ই) গাছ  -
সরিষাপুরের মাথায় ছাতা হয়ে দাঁড়ানো গাছটি- 
ঐ রাস্তার ধারে মাঠে ঘাটে লুট হয়-
কৈশোর রাঙানো বিকেল- আড্ডা হল্লোর মাখা-
স্বপ্ন রঙ আগামীর প্রজাপতি পাখা। 

আজ গোধূলীর ছায়াতলে 
মায়াহরিণ চোখ ফিরে দ্যাখে বার বার, 
রক্তচক্ষু গর্জন বাঘ হরিণডাঙার বাঁকে 
ঘুরে দাঁড়ায় না আর। 
সব কিছু বদলে যায় এভাবেই - থাকে  
স্মৃতির মায়া কাজল - এক চোখে,
আর চোখে শিশিরের জল।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত