এই নির্বাচন কমিশন রংহীন চেহেরাহীন নির্বাচন কমিশন: ইসি সানাউল্লাহ
প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:৪৪ | আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:৩৪
নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন বর্তমান নির্বাচন কমিশন রংহীন চেহেরাহীন নির্বাচন কমিশন । সোমবার(২৭জানুয়ারী) বিকেলে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি উপলক্ষে তথ্য সংগ্রহকারী, সুপারভাইজার ও নতুন ভোটারদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন কমিশনার। এ সময় তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন রংহীন চেহারাহীন নির্বাচন কমিশন। আমাদের কোন ফেভারিট নেই কোন পক্ষ নেই। আমরা একটাই পক্ষ সুষ্ঠুতার পক্ষ ন্যায়ের পক্ষ। মানুষের অধিকার মানুষের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার পক্ষ। মানুষ নির্বাচন করবে তার প্রতিনিধি কে হবে। এটি নির্বাচন কমিশনের অফিসে হবে না, জেলা প্রশাসকের বারান্দাতে হবে না, পুলিশ সুপারের বারান্দাতে হবে না, কোন গোয়েন্দা সংস্থার অফিসে হবে না। মানুষ নির্বাচন করবে তার প্রতিনিধি। সেই পরিবেশ আমাদেরকে সৃষ্টি করতে হবে। আমরা এটি করবো।
তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের সন্তানদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে এ দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ওয়াদাবদ্ধ। আমরা তাদের প্রতি ফোটা রক্তের ঋণ পরিশোধ করবো ইনশাল্লাহ। তবে এই কাজটি একটি বড় কাজ শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশনের পক্ষে করা সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশন কেবল সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবে। কাজটি বাস্তবায়ন করবে মাঠ পর্যায়ের সবাই ।
আমাদের কে মনে রাখতে হবে একটি খারাপ নির্বাচন হলে এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানের সম্মান ভূলুন্ঠিত হয়। অতীতে যদি খারাপ নির্বাচন হয়ে থাকে তাহলে আমরা নিজেরাই নিজেদেরকে প্রশ্ন করে উত্তর পেয়ে যাব আমাদের ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন বা ভূলুন্ঠিত হয়েছে কিনা। যদি ভূলুন্ঠিত হয়ে থাকে তবে আগামীর নির্বাচন আমাদের সেই হারানো ভাবমূর্তি ফিরে পাওয়ার নির্বাচন।
ভোট হচ্ছে আমার জাতি হিসেবে সামষ্টিক প্রজ্ঞার প্রতিফলন। ভোট হচ্ছে সামগ্রিক ইচ্ছার প্রতিফলন। ভোট স্বচ্ছ হলে সমাজে আমরা স্থিতিশীলতা আনতে পারি। হেরে যাওয়া প্রার্থী যদি হার মেনে জিতে যাওয়া প্রার্থীকে বুকে জড়িয়ে নিতে পারে বলতে পারে সাবাস আমি তোমার কাছে হেরে আনন্দিত। এটা তখনি সম্ভব যখন স্বচ্ছ সুন্দর ভোট হবে। ভোটের সাথে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা সরাসরি জড়িত। গণতন্ত্রহীনতা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তাকে কিভাবে হুমকিতে ফেলে দেয় এখন ক্লাস ওয়ানের ছাত্রও বোঝে। মানুষের ক্ষমতা মানুষের কাছে ফিরে যেতে হবে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর কাছে নয়। মানুষের ক্ষমতা যখন মানুষের কাছে থাকবে তখন ১৮ কোটি মানুষকে নিয়ে কেউ ছেলে খেলা করবে না। আর মানুষের ক্ষমতা মানুষের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে যদি কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর কাছে কুক্ষিগত করা হয় তাহলে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী কেনা খুব সহজ। মানুষ কেনা এতো সহজ না।
কমিশনার আরও বলেন, কষ্ট লাগে যখন দেখি শুনি শিক্ষকরাও ব্যক্তিগত ও দলীয় চিন্তার উপরে উঠতে না পেরে মানুষের হক নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে সহায়তা করেছে। ভবিষ্যতে যেন এমনটি না হয় সে নিশ্চয়তা আমাদের দিতে হবে। আমি বিশ্বাস করি পরিস্থিতির শিকার ছিল সবাই। কিছু মানুষ হয়তো তালি বাজিয়েছে কিছু মানুষ হয়তো ফায়দা লুটার চেষ্টা করেছে কিছু মানুষ হয়তো জীবনের উন্নতির স্বপ্ন দেখেছে। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ বাধ্য হয়েছে। একটা সময় এসেছে আপনারা আপনাদের সাপ মোচন করতে পারেন। তওবা করেন। আমরা সেই পরিবেশ তৈরি করব ইনশাল্লাহ। তারপরও যদি কেউ ভিন্ন কিছু দেখেন বা ভিন্ন পথ দেখেন তাদের জন্য যা যা করণীয় তাই করা হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে জেলা প্রশাসক সাবেত আলী, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সী ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এনামুল হকসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ভোটার তালিকা হালনাগাদের সাথে সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত