আরব আমিরাতের মধ্যস্থতায় ৩ শতাধিক বন্দির মুক্তি দিল রাশিয়া-ইউক্রেন
প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪২ | আপডেট : ৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:১৯
ইউক্রেন এবং রাশিয়া তিন শতাধিক যুদ্ধবন্দির মুক্তি দিয়েছে। নতুন বছর শুরুর প্রাক্কালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) মধ্যস্থতায় বিপুল সংখ্যক এই বন্দি বিনিময় করে উভয় দেশ। এদিকে রাশিয়ার কবল থেকে ইউক্রেনীয় বন্দিরে ফিরে আসাকে সুসংবাদ বলে অভিহিত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, নববর্ষের আগের দিন সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যস্থতায় ৩০০ জনেরও বেশি যুদ্ধবন্দিকে রাশিয়া এবং ইউক্রেন নিজেদের মধ্যে বিনিময় করেছে বলে উভয় দেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সোমবার রাশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা ১৫০ ইউক্রেনীয় বন্দিকে ফিরিয়ে দিয়েছে। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ১৮৯ ইউক্রেনীয় দেশে ফিরে এসেছেন।
অবশ্য বিনিময় করা বন্দিদের বিষয়ে উভয় দিক থেকে রিপোর্ট করা সংখ্যার মধ্যে পার্থক্যের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
জেলেনস্কি টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে বলেছেন, “রাশিয়ান বন্দিদশা থেকে আমাদের জনগণের প্রত্যাবর্তন আমাদের প্রত্যেকের জন্য সর্বদা খুব ভালো খবর। এবং আজ এমন একটি দিন: আমাদের দল ১৮৯ ইউক্রেনীয়কে দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে।”
তিনি আরও বলেছেন, বিনিময়ে ২০২২ সালে দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মারিউপোলে বন্দি হওয়া দুই বেসামরিক নাগরিকও অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। একইসঙ্গে বিনিময় আলোচনায় সহায়তা করার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
জেলেনস্কির প্রকাশিত ছবিতে কয়েক ডজন পুরুষকে বাসে বসে থাকতে দেখা গেছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ইউক্রেনের জাতীয় নীল এবং হলুদ পতাকায় মোড়ানো ছিলেন। অন্যদিকে রাশিয়ার মানবাধিকার কমিশনার তাতায়ানা মোসকালকোভার প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, সৈন্যরা শীতের পোশাক এবং সামরিক ক্লান্ত-চেহারায় বাসের বাইরে জড়ো হয়েছেন।
মোসকালকোভা তাদের নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, “আমি আপনাদের সেবা, ধৈর্য এবং সাহসের জন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। খুব শিগগিরই আমাদের ছেলেরা তাদের আত্মীয় এবং বন্ধুদের আলিঙ্গন করবে এবং তাদের জন্মভূমিতে নববর্ষ উদযাপন করবে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, মুক্তিপ্রাপ্ত যুদ্ধবন্দিদের বাড়িতে পাঠানোর আগে মস্কোর গুরুত্বপূর্ণ মিত্র প্রতিবেশী দেশ বেলারুশে মানসিক এবং অন্যন্য চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সর্বাত্মক হামলা শুরুর পর থেকে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। প্রায় তিন বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়া— চারটি প্রদেশের আংশিক দখল নিয়েছে রুশ বাহিনী। এই চার প্রদেশের রাশিয়ার দখলে যাওয়া অংশের সম্মিলিত আয়তন ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের এক-পঞ্চমাংশ। অবশ্য যুদ্ধরত এই দুই দেশের কেউই তাদের নিজস্ব ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য প্রকাশ না করলেও পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো হতাহতের সংখ্যা কয়েক লাখ বলে অনুমান করছে।
সা/ই
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত