আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে কাউনিয়ার উরুন গাইন ও ঢেঁকি ছাটা চাউল

  সারওয়ার আলম মুকুল

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮:১৯ |  আপডেট  : ১৯ মে ২০২৪, ১৩:২৩

কাউনিয়া উপজেলায় ধান থেকে চাউল তৈরীর এক মাত্র ভরসা ছিল ঢেঁকি ও উরুন গাইন। গ্রামের প্রতিটি গৃহস্থ বাড়ীতে শোভা বর্ধন করতো উরুন গাইন ও ঢেঁকি। সে সময় উরুন গাইন ও ঢেঁকি ছাড়া চাউল তৈরীর বিকল্প ভাবাই যেত না। এই উরুন গাইন ও ঢেঁকিকে ঘিরে শত শত পরিবার সংসার চালাতো। তাদের বলা হতো বাড়ানি। বর্তমানে বিদ্যুৎ ও যান্ত্রিকতার ছোঁয়ায় বাঙ্গালী গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ঢেঁকি ও উরুন গাইন হারিয়ে যেতে বসেছে।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে কিছু কিছু বড় গৃহস্থ ঐতিহ্য ধরে রাখতে শীতের পিঠা পায়েশ তৈরীর আটা করার জন্য উরুন গাইন ও ঢেঁকি রেখেছেন। আবার কিছু কিছু ক্ষুদ্র চাউল ব্যবসায়ী যে খানে বিদ্যুৎ নেই সে খানে প্রয়োজনের তাগিদে উরুন গাইন ও ঢেঁকি রেখেছে। উরুন গাইন ও ঢেঁকি ছাটা চাউল সবচেয়ে বেশী পুষ্টি গুন সম্পন্ন। বর্তমানে আধুনিক সমাজে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী চাউলের রং সাদা করার জন্য ইউরিয়া ও রাসায়নিক ক্যামিকেল পদার্থ মিশ্রন করে চাউল সাদা করছে। মেশিন দিয়ে মোটা চাউল কেটে নামী দামী চাউল তৈরী করে প্রতারনা করছে। এসব চাউল এর ভাত খেয়ে পেটের পীড়া, যকৃত ও কিডনি সহ নানা জটিল রোগে ভুগছে। এর প্রভাব বেশী পড়ছে শিশু ও বৃদ্ধদের। উরুন গাইন ও ঢেঁকি ছাটা চাউল খাওয়া বাদ দেয়ায় বর্তমানে ক্যামিকেল যুক্ত চিকন সাদা চাউল খেয়ে ক্যান্সার সহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। 

গ্রামে একটি জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে যারা ঢেঁকি ছাটা চাউল খায় তাদের রোগ বালাই কম হয়। শহরের লোকের চেয়ে গ্রামের বিশেষ করে চরের লোকের মরনব্যাধি কম। উরুন গাইন ও ঢেঁকি ছাটা চাউল বাজারে এখন দুস্প্রাপ্য। অনেকে মন্তব্য করে বলেছেন, উরুন গাইন ও ঢেঁকি ছাটা চাউল স্বাস্থের জন্য উপকারী ও পুষ্টি গুন সম্পন্ন। শরীর কে ভাল রাখার জন্য উরুন গাইন ও ঢেঁকি ছাটা চাউলের বিকল্প নেই। বাঙ্গালীর ঐতিহ্য ঢেঁকি ও উরুন গাইন আবার ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন বলে বিজ্ঞ মহল মনে করছেন। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত