প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বৈষম্য-

আদমদীঘিতে ১৮টি এবতেদায়ী মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী সংকটের কারনে বন্ধের পথে

  আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২২, ২০:১১ |  আপডেট  : ১৬ মে ২০২৪, ১৮:১১

 বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ১৪টি দাখিল সংযুক্ত ও চারটি স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষার্থী সংকটের কারনে বন্ধ হওয়ার আশাংকা দেখা দিয়েছে। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এবতেদায়ী মাদ্রাসার মাঝে সরকারি সুযোগ সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাপক বৈষম্যের কারনে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসার শিক্ষক ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির অভিযোগে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আদমদীঘি উপজেলায় দাখিল সংযুক্ত এবতেদায়ী মাদ্রসা ১৪টি ও চারটি স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা (প ম শ্রেনী সমমান) রয়েছে। এ সকল এবতেদায়ী মাদ্রাসায় একজন এবতেদায়ী প্রধান সহ মোট চারজন করে শিক্ষক রয়েছে। এ সকল শিক্ষকরা সকলেই বে-সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মত এমপিও ভুক্ত এবং সকলেই সরকারি কোষাগার থেকে শতভাগ বেতন ভাতা পান । একই সাথে উপজেলায় মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৯৮টি । 

উপজেলা এবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি জুলফিকার আলী বলেন,সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সরকারি সুযোগ সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক বৈষম্য থাকায় দিনে দিনে এবতেদায়ী মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী  সংকট দেখা দিয়েছে । তিনি বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শতভাগ উপবৃত্তি ( শিক্ষার্থী প্রতি মাসে ১৫০ টাকা) পেয়ে থাকে। পাশাপশি সম্প্রতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে কিডস এ্যালাউন্স বাবদ এক হাজার টাকা করে প্রদান করেছে। এ ছাড়া প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাসে আনুষাঙ্গিক খরচের জন্য টাকা প্রদান করা হয়। এছাড়া শিক্ষার্থীদের বিনোদনের জন্য সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিনোদন সামগ্রী ও খেলাধুলার সামগ্রী প্রদান করা হয়ে থাকে। পাশাপশি এবতেদায়ী পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কোন উপবৃত্তি প্রদান করা হয় না, নেই অন্য কোন আর্থিক সুযোগ সুবিধা । মাদ্রাসায় মাসিক খরচের জন্য কোন টাকা প্রদান করা হয় না । সম্প্রতি দেয়া কিডস এ্যালাউন্সও পায়নি এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। উপজেলা অন্তাহার গ্রামের অভিভাবক আব্দুল হাই সিদ্দীক, ফাহিম হোসেন, কেশরতা গ্রামের হেদায়েতুল ইসলাম সহ কয়েকজন জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যে সকল সুযোগ সুবিধা সরকার প্রদান করে আমাদের সন্তানরা মাদ্রাসায় সে সকল কোন সুযোগ সুবিধা পায় না। এরপরও স্বল্প সংখ্যক ধর্মভিরু অভিভাবক তাদের সন্তানদের ইসলামী জ্ঞান অর্জনের জন্য এবতেদায়ী মাদ্রাসায় পাঠিয়ে দিচ্ছে। 

এদিকে বৈষম্যমুলক সরকারি সুযোগ সুবিধা প্রদানের কারনে এবতেদায়ী মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী সংখ্যা আশাংজনক ভাবে কমে যাচ্ছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শামসুল ইসলাম দেওয়ান বলেন, শুধুমাত্র পিএসসি পরীক্ষার ক্ষেত্রে এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে পরীক্ষা দেয়। এবতেদায়ী মাদ্রাসার কোন সুযোগ সুবিধা বা দেকভালের দায়িত্ব তার নেই। উপজেলা  প্রাথমিক বা মাধ্যমিক পর্যায়ে কোন দপ্তর থেকে এবতেদায়ী মাদ্রাসায় দেকভালের দায়িত্ব প্রদান করা হয়নি। 

সরেজমিন উপজেলার কয়েকটি এবতেদায়ী মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষার্থী সংকটের সত্যতা পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তৈফিক আজিজের সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, সবার ক্ষেত্রে একই ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকা উচিত, তাহলে সকলেই উপকৃত হবে পড়াশুনায় আগ্রহী হবে। 
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত