আদমদীঘিতে হারিয়ে যাচ্ছে ফলদ ও ভেষজ গুণ সম্পন্ন কালো জাম

  আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ

প্রকাশ: ২ জুলাই ২০২১, ১৯:৩৫ |  আপডেট  : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪:২৮

নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে ফলদ ও ভেষজ দেশি ফল পুষ্টি গুণ সম্পন্ন কালো জাম। এই ফল এখন চলে গেছে দামি ফলের তালিকায়। এক সময় প্রচুর জাম গাছ চোখে পড়লেও এখন তেমন দেখা যায় না। অত্যন্ত ঔষধি গুণসম্পন্ন পাকা জামের মধুর রসে এখন আর মুখ আগের মতো রঙিন হয় না। জামগাছ ২০-২৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। এটি বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। কান্ড সরল, শাখা-প্রশাখাযুক্ত, ছাল ধূসর বর্ণের। মার্চ-এপ্রিলে ফুল আসে, জামের ফুল ছোট এবং ঘ্রাণওয়ালা। মে-জুলাই মাসে ফল বড় হয়। ফলটি লম্বাটে ডিম্বাকার। শুরুতে এটি সবুজ থাকে যা পরে গোলাপি হয় এবং পাকলে কালো বা কালচে বেগুনি হয়ে যায়। এটি খেলে জিহবা বেগুনি হয়ে যায়। স্বাদ মধুর ও কষাভাবযুক্ত। ফলের মজ্জা হালকা গোলাপি ও রসাল। যাদের ডায়বেটিস আছে তাদের জন্য জাম ফলটি বেশ উপকারী।

চিকিৎসকদের মতে জানাগেছে, এই ফল স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে। ফলটিতে প্রচুর অ্যান্টি অ·িডেন্ট রয়েছে যা ফ্রি র‌্যাডিক্যালস তৈরিতে বাধা দেয়। এই ফ্রি র‌্যাডিক্যালস ক্যান্সারের জন্য দায়ী। জাম রক্তের শর্করা ও কোলস্টেরলের মাত্রা কমায়। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে, বিশেষ করে জামের বীজ ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। জামে প্রচুর আঁশ রয়েছে যা হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। জাম রক্ত পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। শরীরে দূষিত কার্বণ ডাই-অ·াইডের মাত্রা কমিয়ে দেহের প্রতিটি প্রান্তে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়। জাম বার্ধক্য প্রতিরোধে সহায়ক। জামে স্যালিসাইলেট নামক এক ধরনের উপকরণ আছে, যা ব্যথানাশক হিসেবেও কাজ করে। ডায়াবেটিসের রোগীরা মৌসুমে প্রতিদিন ৮-১০টি জাম খেতে পারেন। আমাদের দেশে প্রধানত দুই জাতের জাম পাওয়া যায়। জাত দুটি হলো ¶ুদি জাত- খুব ছোট এবং মহিষে জাত-বেশ বড় ও মিষ্টি। এটি বর্ষাকালে পাওয়া যায়। ফলের গা কালো এবং খুব মসৃণ পাতলা আবরণযুক্ত। ফলের বহিরাবরণের ঠিক নিচ থেকেই গাঢ় গোলাপী রংয়ের টক মিষ্টি শাস। জামে বেশি পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি আছে। জাম গাছের কাঠ অত্যন্ত শক্ত। কাঠ দিয়ে আসবাবপত্র ও ঘরের জানালা-দরজা তৈরি করা হয়। প্রতি কেজি জাম ৮০-১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়ে থাকে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত