দেখার কেউ নেই-
আদমদীঘিতে বাসাবাড়ীর পাশে অবৈধ চালকল-চাতাল মিল \ পরিবেশ বিষাক্ত
প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২১, ১৮:৩৭ | আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৫:৩৮
বিষাক্ত পরিবেশ মুক্ত ও নিরাপদ আবাসে বসবাসের দাবি নিয়ে প্রায় তিন বছর ধরে প্রশাসনের দোড়গোরায় ধর্না দিয়ে চলেছেন সবজি ব্যবসায়ি মখলেসার রহমান । একটি অবৈধ চালকল বন্ধ ও চাতাল সরিয়ে নেয়ার আবেদন নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর,জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে বছরের পর ঘুরে কোন প্রতিকার পাননি মখলেসার । মখলেসারের বাড়ি বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার বশিপুর গ্রামের বিদ্যুৎ অফিসের পাশে। পরিবেশ অধিদপ্তর চালকল সহ চাতালের সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ করে প্রতিষ্ঠানটি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়ার পরও সরকারি আদেশ অমান্য করে চালকল মালিক আব্দুল হামিদ চালকলটি চালু রেখেছেন।
মখলেসারের অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার সান্তাহার শহরের বিদ্যুৎ অফিসের পাশে তাঁর বাড়ি ঘেঁেষ পৌওতা গ্রামের চাল ব্যবসায়ি আব্দুল হামিদ অবৈধভাবে চালকল সহ চাতাল নির্মান করেন। চালকলের বিকট শব্দ ও চাতালের বয়লারের ধূয়ায় ওই এলাকার পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে ওঠে । এটি শহরের আবাসিক এলাকায় হওয়ায় ওই এলাকার প্রায় ২০টি পরিবার ভয়াবহ পরিবেশে দূষনের শিকার হচ্ছেন। চালকলটি বন্ধের জন্য মখলেসার রহমান গত ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর তারিখে বগুড়ায় পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক বরাবর একটি আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতা পান। তদন্তের সময় চালকল মালিক পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র সহ কোন প্রকার বৈধ কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন।
পরে বিভাগীয় পরিচালক আশরাফুজ্জামান চালকল মালিক আব্দুল হামিদকে দেয়া এক পত্রে সাত দিনের মধ্যে চালকল ও চাতালের সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ করে প্রতিষ্ঠানটি পরিবেশ সম্মত জায়গায় স্থানান্তর করার নির্দেশ প্রদান করেন।
পরিচালকের নির্দেশ অমান্য করে চালকল মালিক অবৈধভাবে চালকলের কার্যক্রম অব্যাহত রাখলে বিষয়টি আবারো বগুড়া জেলা প্রশাসক ও পরিবশে অধিদপ্তরকে অবহিত করেন মখলেসার রহমান। এর প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাসিম রেজা আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে চালকল মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করে চিঠি পাঠান ।
মখলেসার রহমান বলেন, পর পর তিনজন ইউএনও’র কাছে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারী,২৩মে এবং ২৬আগষ্ঠ এ বিষয়ে তিনবার আবেদন করেন কিন্তু তাঁদের পক্ষ থেকে কোন সাহায্য পাওয়া যায়নি । তাঁরা জেলা প্রশাসকের নির্দেশকেও তোয়াক্কা করেননি। তিনি বলেন,একটি ন্যায্য বিষয় নিয়ে বছরের পর বছর ধরে সরকারি কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন প্রতিকার পেলাম না। বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক নিজে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ প্রদান করলেও ইউএনও’র কার্যালয় থেকে দুই দফায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা,উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে দিয়ে আবারো তদন্ত করানো হয়। প্রতিটি তদন্ত প্রতিবেদনে চালকলটি অবৈধ উল্লেখ করে ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করা হলেও কোন ইউএনও চালকল বন্ধ বা মালিকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেন নি।
পূর্বের ইউএনও সীমা শারমিন, অন্যত্র বদলি হওয়ায় তাঁর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি । বর্তমান ইউএনও শ্রাবণী রায় বলেন, এ বিষয়ে মখলেসার রহমানকে আদালতের শরানপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে । এ বিষয়টি নিয়ে চালকল মালিক আব্দুল হামিদকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেনি তবে তার ছেলে মনিরুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, চালকলের বেশির ভাগ অংশের কাজ বন্ধ রয়েছে । দ্রুত পরিবশে অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে পুরো চালকলের কার্যক্রম চালু করা হবে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত