আজ মুন্সিগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস

  কাজী আরিফ

প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:৪৪ |  আপডেট  : ৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:৫৩

আজ ১১ ডিসেম্বর। ঐতিহাসিক মুন্সিগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস।১৯৭১ এর এই দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের মুন্সীগঞ্জ সম্পূর্ন ভাবে শত্রু মুক্ত হয়। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বর্বর পাকবাহিনী রাতের অন্ধকারে বাঙালির ওপর হত্যাযজ্ঞ চালালে দেশের প্রতিটি এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। 

মুন্সীগঞ্জ-বিক্রমপুরের জনগণও পিছিয়ে ছিল না। হরগঙ্গা কলেজে পাকসেনাদের প্রধান সেনাক্যাম্প স্থাপন করা হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে নিরীহ লোকজনকে ধরে এনে এ ক্যাম্পে রাখা হতো। মার্চ মাসের শেষদিকে পাকসেনারা গজারিয়া থানায় অতর্কিত হামলা করে ৩৬০ জন নিরীহ জনতাকে হত্যা করে। মুন্সীগঞ্জে পাকসেনারা ব্যাপক ধ্বংস ও অগ্নিকাণ্ড ঘটাতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপস্থিতিতে তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। মুন্সিগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের পাশেই তৈরি করা হয় বধ্যভূমি। পরে মুক্তিযোদ্ধারা এক হয়ে মুন্সিগঞ্জ থেকে শতাধিক পাকসেনা গোয়ালী মান্দ্রায় যাওয়ার পথে মুক্তিবাহিনী দ্বারা আক্রান্ত হয়। চারদিক থেকে মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের ওপর আক্রমণ চালায়। প্রায় ৩৮ ঘণ্টাব্যাপী এ যুদ্ধে ৩৫ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং সাতজন আÍসমর্পণ করে।

৪ ডিসেম্বরের চূড়ান্ত যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধ ও মিত্র বাহিনীর বিমান বহরের হামলার মুখে পড়ে পাকিস্তানি সেনারা পিছু হটে মুন্সিগঞ্জ শহরের হরগঙ্গা কলেজ ক্যাম্পে এবং ধলেশ্বরীর উত্তর প্রান্তের চরে অবস্থান নেয়। সেখান থেকে তারা বিচ্ছিন্নভাবে ধলেশ্বরী নদী সংলগ্ন নয়াগাঁও এলাকায় মর্টার শেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এভাবে তারা মুন্সিগঞ্জ শহর থেকে পিছু হটার কৌশল নেয়। ১০ ডিসেম্বর রাত ৩টার দিকে প্রচণ্ড শীতের ঘন অন্ধকারে পাকিস্তানি বাহিনী মুন্সিগঞ্জে তাদের সুরক্ষিত দূর্গ হরগঙ্গা কলেজ ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যায়। ১১ ডিসেম্বর কাকভডাকা ভোরে বিভিন্ন এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা রাইফেলের মাথায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দিতে দিতে মুন্সিগঞ্জ শহরে প্রবেশ করেন এবং জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। মুক্তিবাহিনী ও জনতার আনন্দ মিছিলে মুখরিত হয়ে ওঠে মুন্সিগঞ্জ।

যাদের তাজা রক্ত ও জীবনের বিনিময়ে এই অর্জন সেই সকল বীর সেনাদের জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা ও সালাম।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত