'মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয় তাহলে সে যেই হোক কাউকে ছাড় দেয়া হবে না'

  শফিক স্বপন, মাদারীপুর

প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২১, ১৯:১৫ |  আপডেট  : ২৯ আগস্ট ২০২৪, ০৪:৩৬

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খান বলেছেন, আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আছে বলেই আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রতিষ্ঠা করার জন্য এগিয়ে চলেছি।যদি কেউ সেই মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কোন উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয় তাহলে কোন মুক্তিযোদ্ধা সহ্য করবে না।তারা কাউকে ছাড়ও দিবে না। সে যেই হোক কঠোরভাবে তাকে জবাব দেয়া হবে।তিনি শনিবার (১৯ জুন) দুপুরে মাদারীপুর শহরের জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে জেলা সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কর্কৃত আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি, মাদারীপুর জেলা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম মৌলভী আসমত আলী খানকে নিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা কর্তৃক কটুক্তিমূলক বক্তব্য দেয়ার প্রতিবাদে শাজাহান খান বলেন, সেই সম্মান পাওয়ার যোগ্য যে অন্যকে সম্মান করে। সে সম্মান পাওয়ার যোগ্য নয় যে অন্যকে সম্মান করতে জানেনা। আচমত আলী খানকে যে অসম্মান করতে পারে, যে স্বাধীনতা পদক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিলেন, সেটা নিয়ে যে প্রশ্ন তুলতে পারেন, সেকি আওয়ামীলীগের হিসেবে দাবি করতে পারেন? হতে পারে সে সভাপতি। সে এটার জন্য দুঃখ প্রকাশ করলো না, ক্ষমা চাইতে পারলো না, এ পর্যন্ত কথা বললো না।বরং যখন মুক্তিযোদ্ধারা এটা নিয়ে প্রতিবাদ শুরু করলো তখন সাহাবুদ্দিন মোল্লা বলেন, কিছু রাজাকার, বিএনপি মিলে প্রতিবাদ করছে। মুক্তিযোদ্ধাদের তিনি দ্বিতীয়বারের মত রাজাকার বললেন। এটা নিয়েতো এখন আমাদের আবার প্রতিবাদ করতে হবে। এ ধরনের ব্যক্তিরা তো আওয়ামীলীগের নেতা হতে পারে না। উনি কেন এ প্রতিবাদকে রাজাকার ও বিএনপির প্রতিবাদ বললেন। চুপচাপ বসে থাকলে এ ধরনের নেতারাই আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব দেবে। এরা আওয়ামীলীগের নেতা হওয়ার যোগ্য হতে পারে না।

তিনি বলেন, সাহাবুদ্দিন মোল্লার মত অর্বাচিন ব্যক্তি এটা করছে আমি মনে করি না। এর পিছনে মদদদাতা কে? এ মদদদাতাকে খুঁজে বের করে মাদারীপুরের মাটিতে বিচার করতে হবে।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্য বীর মুক্তিযোদ্ধা বক্তরা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কটূক্তি করতে পারে না শাহাবুদ্দিন মোল্লা। তিনি তো মুক্তিযোদ্ধা না, তিনি কোথায় এ সাহস পেলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছি। সেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে শাহাবুদ্দিন মোল্লা কটূক্তি করতে পারে না। আওয়ামীলীগের সভাপতির পদ থেকে আমরা তার বহিষ্কার চাই।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান হাওলাদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আবুল বাশার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিন খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ শাখাওয়াত হোসেন সেলিম প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা রাজৈরে এক অনুষ্ঠানে সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এমপির পিতা মাদারীপুর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মৌলভী আসমত আলী খানকে নিয়ে কটুক্তিমূলক বক্তব্য দেন। এ সময় সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা শাজাহান খানের বাবার বিভিন্ন পদক পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে আসমত আলী খানের ভুমিকা নিয়েও সমলোচনা করেন সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা। এরই প্রতিবাদে মাদারীপুর  জেলাজুড়ে শুরু হয় প্রতিবাদ ও সমালোচনার ঝড়।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে মাদারীপুরে জেলা আওয়ামী লীগ দুটি গ্রুপে বিভক্ত। একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম এবং অন্যটির নেতৃত্ব দেন সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাদারীপুর-২ আসনের সাংসদ শাজাহান খান। বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা বাহাউদ্দিন নাসিমের অুনসারী।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত