পরকীয়ায় ১ ও ছিনতাইকারীর হাতে ১জন

পঞ্চগড়ে দুটি হত্যাকান্ড, গ্রেফতার ৩  

  মোঃ কামরুল ইসলাম কামু

প্রকাশ: ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:৫৭ |  আপডেট  : ১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:২৭

পঞ্চগড়ে দুটি হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন সহ এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।এ বিষয়ে শনিবার (৩ ফেব্রয়ারি) দুপুরে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা এ বিষয়ে তার কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন করেন।

এদিকে এর আগে শুক্ররবার (২ ফেব্রয়ারি) একই দিনে পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের ডোলোপাড়া এলাকার বাগানে পুতে রাখা গর্ত থেকে এক জন এবং বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের সাওতাল পাড়া ঘাট করতোয়া নদীতে ভেসে থাকা একজনেরমৃত দেহ উদ্ধার করা হয়।

 সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা বলেন, ডোলোপাড়ার উদ্ধার করা লাশের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। তার বাড়ি সদর উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের লাখেরাজ ঘুমটি এলাকায়। তার নাম টাবুল চন্দ্র বর্মণ ( ৪৮) । সে ৩১ জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিল। এরপর টাবুল চন্দ্র বর্মনের ভাই গোপাল চন্দ্র সদর থানায় জিডি করেন। এরপর আমরা তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে টাবুলের মোবাইল নম্বর যাচাই-বাচাই করি। এরপর ললিতা রানী ও মেয়ে জামাই প্রভাস কে জিজ্ঞাসাবাদ করি। তারা স্বীকার করেন ললিতা রানী ( ৪৫) নামক এক মহিলার দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক সম্পর্ক ।
এমনবস্থায় ললিতা টাবুল চন্দ্র বর্মণের সাথে সর্ম্পক চালিয়ে না যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়। ললিতা রানী এলাকার জনৈক রফিকুল ও মনতাজের সাথে অলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেয় যে, তাকে যে কোন উপায়ে শাস্তি দিতে হবে। রফিকুল ও মনতাজ ললিতাকে জানায় তুমি চিন্তা করিওনা। তুমি আমাদের ৩০ হাজার টাকা দাও। এই চুক্তিতে ৩১ জানুয়ারি ললিতা রানী রফিকুল ও মনতাজকে প্রথম পর্যায়ে নগদ ১১ হাজার টাকা দেয়।পাওনাদারে নিকট টাকা আনার কথা বলে ওই দিন সন্ধ্যায় ললিতা রানী টাবুলকে ফোন দেয়।পরে হাড়িভাসা বাজারে মার্কেটে নিয়ে যায়। এরপর ললিতার জামাই প্রভাস টাবুলকে মোটর সাইকেলে মাঝ খানে বসিয়ে ডোলোপাড়া আম বাগানের ভিতরে রফিকুল ও মনতাজ তাকে টেনে হিছড়ে নিয়ে যায় এবং ধারালো কুড়াল দিয়ে মাথা ,ঘাড় ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে। এরপর মেরে ফেলে তাকে বাগানটির ভিতরের একটি ড্রেন আছে সেই ড্রেনে পুতে রাখে। ওই বাগানটির পাশে মনতাজের বাড়ি। এ ঘটনায় আমরা নিশ্চিত রফিকুল ও মনতাজ ললিতা ও প্রভাস জড়িত। আমরা ললিতা রানী ও প্রভাসকে গ্রেফতার করি। তবে আমরা শীগগীর রফিকুল ও মনতাজকে গ্রেফতার করতে পারবো।

বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের করতোয়া নদীর সাঁতালপাড়া ঘাট একজনের লাশ উদ্ধারে বিষয়ে তিনি বলেন‘ তার নাম নুরুল ইসলাম (৪৮) পেশায় সে আটো চালক। তার অটো রিকসা ছিনতাই হয়। ওই দিন মাড়েয়ায় ওয়াজ মাহফিল ছিল।তার বাড়ি কাউয়াখাল মাঝিয়ালী এলাকায়। সে ২৭ জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিল। এখানে একচি চক্র আলম নামে একজন ব্যক্তি আছে ‘ তার বাড়ি বোদায়। তার ভায়রা আছে একজন‘ তার নাম জালাল (৪০) ও তার ছোট ভাই তাদের বাড়ি গাইবান্ধায়।

এদের দুজনের শশুড়বাড়ি দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাঙ্গায়।এরা প্রফেশনাল ছিনতাইকারী চোর ও ডাকাত। তাদের নামে গাইবান্ধায় বিভিন্ন মামলাও আছে‘ এবং সাজাপ্রাপ্ত আসামী। তারা তিনজনে ওয়াজ মাহফিলের দিন রাতে নুরুল ইসলামের অটোটি ভাড়া করে। গামছা দিয়ে তার হাত পা বেঁধে মেরে ফেলে করতোয়া নদীতে ফেলে দেয়। পরে তারা অটোটি রাখতে শালডাঙ্গা তাদের আতœীয়ের বাড়িতে যায়। এটি আমাদের এক গ্রাম পুলিশের নজরে আসলে আমাদের খবর দেয়। এর সাথে আরো এক অজ্ঞাত নামা ব্যক্তি জড়িত।এ দুটি হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা বলেন ‘ আমরা পুলিশের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সহায়তা নিচ্ছি ‘ আশা রাখি এই দুটি ঘটনায় জড়িত সকলকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো।

উক্ত সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম শফিকুল ইসলাম (অর্থ ও প্রশাসন) (পদোন্নতি এসপি). অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার দাস (ক্রাইম এন্ড অপস) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আমিরুল্লাহ (সদর সার্কেল) , সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় ও বোদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোজাম্মেল হক।

 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত