চরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ

কাউনিয়ায় জীবীকার তাগিদে তীব্র শীতে কাজ করছে শ্রমজীবীরা

  সারওয়ার আলম মুকুল  

প্রকাশ: ১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:৫১ |  আপডেট  : ৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৩৫

হাড় কাঁপানো শীত রংপুরের কাউনিয়ায় জেঁকে বসেছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে দিনভর পথঘাট ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকায় দৈনন্দিন জীবনযাত্রা আরও বিপর্যস্ত করে তুলেছে। শীতের কারণে স্বাভাবিক কর্মকান্ডে স্থবিরতা বিশেষ করে নিম্নআয়ের শ্রমজীবী মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। শৈতপ্রবাহের কারণে তিস্তার চরাঞ্চলের শ্রমজীবীদের দুর্ভোগ চরমে। 
 
সরেজমিনে তিস্তার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখে গেছে, শৈতপ্রবাহের কারণে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। ঘন কুয়াশা এবং কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। চরম দুর্ভোগে পড়েছে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষ গুলো। তীব্র শীতে অনেকে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। এরপরও জীবন ও জীবিকার তাগিদে শ্রমজীবীরা শীতকে উপেক্ষা তিস্তার চরে সাদা সোনা আলু ক্ষেতে কাজ করছে। আলু ক্ষেতে কাজ করা শ্রমজীবী ছলিমুদ্দিন জানান, হামার গুলোর শীত আর গরম আছে বাহে, প্যাটের তাগিতে হামাক কাম করাই নাগে। হামার গুলোর খবর কায় রাখে, শীতোত হামরা মরি যাই, চরত কায়েও কম্বল দেয় না, হামরা চরের মানুষ শীতত খড়কুটো জালেয়া ছাওয়া পোয়া নিয়া আগুন পোহাই। শীতত কাম-কাজে খুব অসুবিধা হয়। শীতকে উপেক্ষা করে চরের অনেকেই কাজের সন্ধানে বের হয়েছেন, কিন্তু তীব্র শীতের কারনে কাজ পাননি। ঢুসমারা চরের তাজুল জানান, দিনের তুলনায় রাতে শীত কয়েক বেশী। পশ্চিমা বাতাসে অনেকেই ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় শিশু ও বয়স্ক মানুষের। ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। দুর্ভোগ বেড়েছে গবাদি পশুরও। কাউনিয়ায় নিম্নবিত্তের মানুষ শীতবস্ত্রের অভাবে ভীষণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। ঘন কুয়াশার কারণে বাস, ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। রিক্সা চালক আনারুল জানান, শীতে বাস চলাচল কম, ফলে রিক্সা ও অটো চালকদের আয় কমে গেছে। গুলশানমোড়ের চাতাল শ্রমিক আলেয়া বেগম বলেন, সকাল আর রাতে বেশি ঠান্ডা। দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখাই নাই। সূর্য না ওঠায় চাতালে কাজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আলুর বীজ উৎপাদন কারী চাষি তাজরুল ইসলাম জানান, শীতে শ্রমিকদের খুব কষ্ট হচ্ছে। আবহাওয়াবিদরা জানান, উত্তরের কনকনে হিম বয়ে আনা বাতাসের কারণে তীব্রশীত অনুভূত হচ্ছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা কেউ কেউ শীত উপক্ষো করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গেলেও উপস্থিতির সংখ্যা খুবই কম। রংপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান জানান, এই অঞ্চলে গত বছরের চেয়ে এ বছর শীতের তীব্রতা অনেক বেশি। এ মাসে আরও শৈতপ্রবহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বলিক সমিতির সভাপতি আঃ ছালাম জানান, সরকারিভাবে কিছু শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেজবাহুর রহমান জানান সরকারিভাবে ৩ধাপে ২৫৪০টি কম্বল পেয়েছি, ইউএনও স্যারের সমন্বয়ে তা বিতরণ করা হচ্ছে। নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিদুল হক জানান, সরকারী ভাবে যে কম্বল পাওয়া গেছে তা চেয়ারম্যাদের মাধ্যে দেয়া হচ্ছে। শীতার্ত মানুষ গুলো শীতব¯্ররে দাবী জানিয়েছেন। 
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত