‘লকডাউনের’ সপ্তম দিন, ঢাকায় বৃষ্টিতে কিছুটা ঢিলেঢালাভাব চেকপোস্টে
প্রকাশ: ৭ জুলাই ২০২১, ১৫:০৯ | আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১৩:০৫
করোনা সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনের সপ্তম দিনে রাজধানীতে বৃষ্টির কারণে কিছুটা ঢিলেঢালাভাবে বিধিনিষেধ পালন হতে দেখা গেছে। কোনো কোনো সড়কে আবার যানবাহনের লম্বা যানজটও তৈরি হয়েছে। এদিকে, রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে দুপুরেও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গণপরিবহন না চললেও আগের দিনগুলোর তুলনায় আজ সড়কে মানুষ, রিকশা, যানবাহন অনেক বেড়েছে। বৃষ্টি এবং লকডাউন উপেক্ষা করে কাজে বের হওয়া মানুষের সংখ্যা অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক বেশি।
বৃষ্টির কারণে কোথাও কোথাও চেকপোস্টে পুলিশের উপস্থিতি কম ছিল। তবে কিছু চেকপোস্টে বৃষ্টির মধ্যেও পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন যানবাহনে যাতায়াত করা যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যারা বিনা কারণে বাইরে বের হচ্ছেন তাদেরকে আটক ও ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানাও করা হচ্ছে।
করোনার সংক্রমণ রোধে কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে মাঠে রয়েছেন পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা। লকডাউনের শুরু থেকেই বিভিন্ন জায়গায় টহল দিতে দেখা গেছে তাদের। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে চেকপোস্টে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
আজ রাজধানী ঢাকার সড়কগুলোতে মানুষের উপস্থিতি কিছুটা বেড়েছে। গত ছয় দিনের তুলনায় আজ বুধবার সড়কে কর্মজীবী মানুষের সংখ্যা কিছুটা বেশি দেখা গেছে। তবে চেকপোস্টে কড়াকড়ি ছিল চোখে পড়ার মতো।
সকালে যাত্রাবাড়ী এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে। রিকশা আর ভ্যানে করে মানুষ নিজের গন্তব্যে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন বিভিন্ন ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
একই চিত্র বাসাবো ও মানিকনগর এলাকার। এখানকার অধিকাংশ কর্মজীবী মানুষ মতিঝিলের বিভিন্ন অফিস চাকরি করেন। এসব এলাকায় রিকশা ও ভ্যানের পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়িও দেখা গেছে। সকাল থেকে নগরীর ফকিরাপুল, রাজারবাগ, মালিবাগ, চৌধুরী পাড়া, বাড্ডা, দৈনিক বাংলা, বাংলা মোটর, কারওয়ান বাজার, মগবাজারসহ বিভিন্ন এলাকাতেও এমন চিত্র দেখা গেছে।
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হলে ভ্রাম্যমাণ আদালতে গ্রেফতার ও জরিমানা করা হচ্ছে। এছাড়া জরুরি পরিষেবায় নিয়োজিতরা পরিচয়পত্র দেখানো ও প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি তল্লাশির সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানালে, তারা তাদের গন্তব্যে বা কর্মস্থলে যেতে পারছেন।
৬ষ্ঠ দিনে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়ায় রাজধানী ঢাকায় ৪৬৭ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
ডিএমপি’র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ইফতেখারুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ডিএমপি’র আটটি ক্রাইম ও ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে। মোবাইল কোর্টে ৩০৫ জনকে ২ লাখ ২৭ হাজার ৪৮০ টাকা এবং সড়ক পরিবহন আইনে ১০৮৭টি গাড়িকে ২৫ লাখ ২৯ হাজার ২৫ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। লকডাউনের শুরুতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অযৌক্তিক কারণে বাইরে বের হওয়ায় রাজধানীতে প্রথম দিন ৫৫০ এবং দ্বিতীয় দিন ৩২০ জন, তৃতীয় দিনে ৬২১ জন, চতুর্থ দিনে ৬১৮ জন, পঞ্চম দিনে ৫০৯ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছেন, সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করতে অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে র্যাবও মাঠে কাজ করছে। রাজধানীতে বিভিন্ন চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
তিনি বলেন, লকডাউনের প্রথমদিন থেকেই র্যাবের সবগুলো ব্যাটালিয়নের সদস্যরা রাতদিন মানুষকে ঘরে রাখা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখা সর্বোপরি মানুষ যেন ঘর থেকে বের না হয় সে জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সম্প্রতি করোনা সংক্রমণের হার বেড়াতে যাওয়ায় সর্বাত্মক কঠোর বিধিনিষেধ নির্দেশনা জারি করে সরকার। ১৪ জুলাই পর্যন্ত চলবে এই কঠোর লকডাউন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত