হেফাজত কারও তল্পিবাহক নয়: মামুনুল হক

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২ এপ্রিল ২০২১, ১৬:০৫ |  আপডেট  : ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৩:৩৫

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, হেফাজত কারও তল্পিবাহক নয়। মনপুত না হলেই আজ বিএনপির কাল জামায়াতের হয়ে যায় হেফাজত। হেফাজত নিজস্ব শক্তিতে আল্লাহ’র উপর ভরসা করে একাই যথেষ্ট। যখনই দেশের বিরুদ্ধে, ঈমান-আকিদার বিরুদ্ধে, ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হবে তখনই হেফাজত কারও রক্তচক্ষু পরোয়া না করে রাজপথে নেমে আসবে।

শুক্রবার (২ এপ্রিল) জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন তিনি। মামুনুল হক বলেন, তিনদিনের হেফাজতের আন্দোলনের ঘটনায় আজ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ পালন করা হচ্ছে। আমাদের তো এটা করার কথা ছিল না। আজ বাংলাদেশ মেডিকেল পরীক্ষায় ব্যস্ত আছে। কওমি মাদরাসার বড় পরীক্ষা থাকা সত্ত্বেও আজ বিক্ষোভ করছি।

তিনি বলেন, কারও চোখের গরম ও ভয় দেখিয়ে হেফাজতকে দমিয়ে রাখা যাবে না। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া মানে হেফাজত। বাংলাদেশ মানে হেফাজত। ২০টি মায়ের বুক খালি হলো। আইজিপি আপনাকে তো শোক প্রকাশ করতে দেখলাম না। কারণ তারা তো মানুষ না হেফাজত।

মামুনুল হক বলেন, তদন্ত করুন, পুলিশ হেফাজতে থানার গারদে ঢুকে হেফাজতের কর্মীদের ওপর কারা হামলা করছে। হেলমেট লীগের হামলাকারীদের বিচার চাই।

তিনি বলেন, যারা বিনা উস্কানিতে তাওহিদী জনতার ওপর হামলা করেছিল তাদের কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

অভিযানের নামে নাটক সাজানো হচ্ছে উল্লেখ করে এ হেফাজত নেতা বলেন, ছুরি কি কাজে ব্যবহার হয় জানেন না? এ নাটক পুরনো। কোরবানি ঈদে হয়ত সে ছুরিগুলো আর সেবা দেবে না। আমরা তা আর রাখব না।

হেফাজতের অর্থ সম্পাদক মাওলানা মনির হোসেন কাসেমী বলেন, ভালোয় ভালোয় ছাত্রলীগকে সামলান। ওরাই আপনার (প্রধানমন্ত্রী) মসনদ নাড়িয়ে দেবে। জনগণের মনের বিরুদ্ধে গিয়ে মোদিতে এত মধু কেন? টাঙ্গাইলের পীরের ওপর হকিস্টিকের আঘাত কত তেতো সময় হলে বুঝবেন।

হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা জসিম উদ্দিন বলেন, দেশটাকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে। প্রতি বিন্দু রক্তের হিসাব নেওয়া হবে। এরশাদ গেছে, খালেদা জিয়াও গেছে, আপনাকেও জেলে যেতে হবে। বেশি দিন দেরি নেই। অপেক্ষা করুন।

কেন্দ্রীয় নেতা আহমেদ আলী কাসেমী বলেন, কারা বায়তুল মোকাররমকে রক্তাক্ত করেছে জানতে চাই। স্বাধীনতা দিবসে কাকে লাশ উপহার দিয়েছেন? গোটা দেশকে বন্দি করে গোটা কয়েক অতিথিকে নিয়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেছেন। এর হিসাব দিতে হবে। এপর্যন্ত যারা মারা গেছে সবাই পুলিশের গুলিতে। নিহত পরিবারকে এক কোটি করে টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আহতদের চিকিৎসা ও বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

আরেক নেতা শাখাওয়াত হোসেন রাজি বলেন, এটা দেশ রক্ষার আন্দোলন, ঈমান রক্ষার আন্দোলন। শাহাদাতের তামান্না নিয়ে আমরা মাঠে আছি। যখনই প্রয়োজন হবে হেফাজতে রাজপথে নেমে আসবে। 

সংগঠনটির নায়েবে আমির ড. আহমদ আব্দুল কাদের বলেন, আমরা রক্তের বদলা নিতে চাই। যুবলীগ, ছাত্রলীগ, হেলমেট বাহিনী হামলা করেছে। তাদের গ্রেফতার করেননি। যারা মোদিকে রক্ষার আন্দোলনে নেমেছিল তাদের ঠেকাতে হবে। এই সরকারকে হটাতে হবে। এর কোনো বিকল্প নাই। দেশকে মুক্ত করতে হবে। আজ আমাদের সে শপথ নিতে হবে। ইসলামী সমাজ কায়েমের জন্য। ভারতীয় তাবেদারদের রুখতে হবে।

হেফাজতের অন্যতম নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফি বলেন, হেলমেট বাহিনীকে ঠেকাতে পুলিশ দর্শকের ভূমিকায় ছিল। আমরা আইজিপির কাছে জানতে চাই, পরিস্থিতি দেখবেন নাকি পরিস্থিতি তৈরি করবেন। আপনার উদ্দেশ্যপ্রবণ সদস্যদের থামান। কয়টা হেলমেট কেড়ে এনেছেন যে আমাদের ছুরি নিয়ে গেলেন।

মিডিয়ার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা মিডিয়া লীগ হবেন না। আপনারা কে কী প্রচার করেন তা জানি। হেলমেট লীগ না হয়ে জনতার কাতারে আসেন।

সভাপতির বক্তব্যে হেফাজতের ঢাকা মহানগরের সভাপতি কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব জোনায়েদ আল হাবিব বলেন, পুলিশ বাহিনী রাতে তল্লাশি করে। যাদের ভাই জীবন দিয়েছে তারাই রাতে বাড়িতে ঘুমাতে পারেন না। জামেয়া ইসলামীয়াতে যেই মুক্তাদির চৌধুরী এমপির নেতৃত্বে হামলা হলো তাকে গ্রেফতার করা হলো না। মুক্তাদির চৌধুরী খুনি। তাকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, করোনার নিয়ে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, করোনার আতঙ্ক ছড়িয়ে গত বছর মসজিদে ভালো করে নামাজ পড়তে দেননি। আবার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। করোনার অজুহাতে মাদরাসা বন্ধের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। যদি এমন পাঁয়তারা করেন তাহলে মাঠে নেমে আসবে হেফাজত। ভুল করেও মসজিদ-মাদরাসা বন্ধের চেষ্টা করবেন না।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত