সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে কেবিনে রোগী ভর্তির কার্যক্রম শুরু
প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৩, ১৮:৩৩ | আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৮
নিজস্ব প্রতিবেদক: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে কেবিনে রোগী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালটি চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৫০ জন রোগীকে সফলভাবে এনজিওগ্রামসহ স্টেন্টিং বা রিং বসানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সুপার স্পেশলাইজড হাসপাতালের সপ্তম তলায় কেবিনে রোগী ভর্তি কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিকবাবে রোগী ভর্তির কার্যক্রম শুরু করেন উপাচার্য। এ সময় তাকে কার্ডিওভাস্কুলার ও স্ট্রোক সেন্টারে প্রথম ৫০ জন রোগীর দেহে এনজিওগ্রামসহ সফলভাবে স্টেন্টিং বা রিং বসানো কার্যক্রম সম্পর্কে জানানো হয়। পরে উপাচার্য হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন এবং সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন। এসময় রোগীরা সুপার স্পেশলাইজড হাসপাতালের সেবা পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
অধ্যাপক শারফুদ্দিন বলেন, বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি স্বপ্নের প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রীর আরেকটি ইচ্ছে, কোনো মানুষকে যাতে দেশের বাইরে গিয়ে চিকিৎসাসেবা নিতে না হয়। তার আগে আমাদের জানতে হবে কোন কোন কারণে রোগীরা চিকিৎসার জন্য বিদেশে যায়। রোগীরা ক্যানসার চিকিৎসার জন্য বাইরে যায়, আমরা সেটি এখানে চালু করতে চাই। রোগীরা হার্টের চিকিৎসার জন্য বাইরে যায়, লিভারের চিকিৎসার জন্য যায়। এসব চিকিৎসাও এখানে দেওয়া হচ্ছে। আমরা আগামীতে হেয়ার ইমপ্লান্ট, স্টেম সেল থেরাপি, বন্ধ্যাত্ব দূরীকরণে কাজ করব। শিশু হৃদরোগের জন্য রোগীরা বাইরে যায়। এর চিকিৎসা এখানে দেওয়া হবে।
ভিসি বলেন, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্সদের আচার-আচরণ অন্যদের থেকে আলাদা। তারা নিজেদের আলাদাভাবে একটি অবস্থান তৈরি করেছে। এই হাসপাতালের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, একজন চিকিৎসক এক রোগীকে কমপক্ষে ১০ মিনিট সময় দেবেন এবং ২০ জনের বেশি রোগী দেখবেন না। এমন করে সেবা দেওয়া হলে, রোগীর সঙ্গে চিকিৎসকরা কথা বলার সুযোগ বেশি পাবেন। চিকিৎসকরা রোগীদের বেশি কাউন্সিলিং করার সুযোগ পাবেন। আমাদের বহির্বিভাগে রোগীরা যথাযথ সেবা পায় বলেই এত ভিড়। সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের রোগীরা সেবায় সন্তুষ্ট বলেই সকাল থেকে চিকিৎসকদের জন্য তারা অপেক্ষা করেন।
রোগীদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা উচিত সে সম্পর্কে উপাচার্য বলেন, রোগীদের সাথে মিষ্টি ভাষায় কথা বলা উচিত। রোগীদের 'মা’, ‘বাবা’ বলে সম্বোধন করা উচিত। রোগীরা নানা কথা বলবে। কিন্তু তাতে বিরক্ত হওয়া যাবে না। রোগীরা অনেক কথাই বলে। চিকিৎসকরা সেখান থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে রোগীর সেবা দিয়ে থাকেন।
আমাদের জানতে হবে কোন কোন কারণে রোগীরা চিকিৎসার জন্য বিদেশে যায়। রোগীরা ক্যানসার চিকিৎসার জন্য বাইরে যায়, আমরা সেটি এখানে চালু করতে চাই। রোগীরা হার্টের চিকিৎসার জন্য বাইরে যায়, লিভারের চিকিৎসার জন্য যায়। এসব চিকিৎসাও এখানে দেওয়া হচ্ছে। আমরা আগামীতে হেয়ার ইমপ্লান্ট, স্টেম সেল থেরাপি, বন্ধ্যাত্ব দূরীকরণে কাজ করব। শিশু হৃদরোগের জন্য রোগীরা বাইরে যায়। এর চিকিৎসা এখানে দেওয়া হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের অবকাঠামো ২০২২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। একই বছর ২৭ ডিসেম্বর এই হাসপাতালে পাঁচটি সেন্টারে ১৪টি বিভাগের বহির্বিভাগ থেকে বিশেষজ্ঞ সেবা প্রদান শুরু হয়। ইতোমধ্যে গত ২১ আগস্ট সন্ধ্যা পর্যন্ত এই হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে প্রায় ২৬ হাজার ৯৯ জন রোগী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরামর্শ সেবা নিয়েছেন।
চলতি বছরের ৫ জুলাই এই হাসপাতালে অন্তঃবিভাগ চালু করা হয়। গত ২০ আগস্ট পর্যন্ত অন্তঃবিভাগ থেকে জেনারেল ওয়ার্ডে ১২৩ জন রোগী, করোনারি কেয়ার ইউনিটে ৭২ জন রোগী সেবা নিয়েছেন। অন্তঃবিভাগ চালুর পর কার্ডিওভাস্কুল সেন্টারের হৃদরোগ বিভাগে ৫০ জন রোগীর দেহে একইসঙ্গে করোনারি এনজিওগ্রাম ও স্টেন্টিং বা রিং সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। ১ আগস্ট দেশে প্রথমবারের মতো শিশুর দেহে সফল কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় এই হাসপাতালে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত