সিন্ডিকেটে হাত দেয়া যাবে না এমন কথা বাণিজ্যমন্ত্রী বলে থাকলে, তাকে ধরবেন প্রধানমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৩, ১৯:২৮ |  আপডেট  : ৫ মে ২০২৪, ১৬:৩৪

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সিন্ডিকেটে হাত দেয়া যাবে না এমন কথা বাণিজ্যমন্ত্রী বলে থাকলে, তাকে ধরবেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দক্ষিণ আফ্রিকায় পঞ্চদশ ব্রিকস সম্মেলনে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা জানাতে মঙ্গলবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে করেন সরকারপ্রধান। সেখানে তিনি বলেন, ‘সিন্ডিকেট থাকলে তা ভাঙা যাবে না, এটা কোনো কথা না। যখনই পণ্যের দাম বাড়ায়, আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেই।’

সংবাদ সম্মেলনে প্রথম লিখিত বক্তব্য পড়েন শেখ হাসিনা। এরপর শুরু হয় প্রশ্নোত্তরপর্ব। প্রশ্নোত্তরপর্বে যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশে লক্ষ্য করছি, নিত্যপণ্যের ব্যাপারে মৌসুমী ব্যবসা পরিচালিত হয়। মজুদ আছে, সরবরাহ আছে, তারপরেও হঠাৎ করে জিনিসের দাম বেড়ে যায়। কাঁচামরিচের কেজি এক হাজার টাকা দেখলাম। অনেক পণ্যের ব্যাপারে সিন্ডিকেট করে বাংলাদেশে ব্যবসা করে মানুষের পকেট থেকে অনেক টাকা নেয়া হচ্ছে।

সাইফুল আলম তার প্রশ্নে বলেন, সিন্ডিকেটের কথা দায়িত্বশীল মন্ত্রীরাও বলেন। তারা বলেন, সিন্ডিকেটে হাত দেয়া যায় না। সেখানে হাত দিতে গেলে বিপদ আছে। আমরা মনে করি, সরকার অত্যন্ত শক্তিশালী। সরকার দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে। এই নিত্যপণ্যের মৌসুমী ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে কী না তা জানতে চান তিনি।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিপদ আছে কে বলেছে, আমি ঠিক জানি না। আমরা তো সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।’তখন সাইফুল আলম বলেন, দুজন মন্ত্রী বলেছেন, সিন্ডিকেট আছে, সিন্ডিকেটে হাত দেয়া যাবে না। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন? বাণিজ্যমন্ত্রীকে ধরব তো।’

তিনি বলেন, খাদ্যপণ্য নিয়ে কয়েকটা হাউস ব্যবসা করে। যখনই তারা দাম বাড়ায় আমরা আমদানি করি, বিকল্প ব্যবস্থা করি। যাতে তারা বাধ্য হয় দাম কমাতে। আমরা তো সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেই। কাজেই সিন্ডিকেট থাকলে তা ভা যাবে না, এটা কোনো কথা না। কত শক্তিশালী সিন্ডিকেট আমি জানি না, আমি দেখব কী ব্যবস্থা করা যায়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজেরা উৎপাদন করেন। বাজারের ওপর নির্ভরশীলতা কমবে। নির্ভরশীলতা কমলে সিন্ডিকেট ভেঙে যাবে। এক ইঞ্চি জায়গাও অনাবাদী রাখবেন না। এখন ডিম নিয়ে শুরু করেছে। ডিম সিদ্ধ করে ফ্রিজে রেখে দেবেন। অনেক দিন ভালো থাকবে। অভাব যেন না থাকে, সেটাই দেখব। সিন্ডিকেটের ওপর নির্ভরশীলতা কমায় দিব, বিকল্প ব্যবস্থা করব। সিন্ডিকেট এভাবেই ভেঙে যাবে।

বিশ্বের অনেক দেশ বাংলাদেশ থেকে শাকসবজি কিনতে চাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জীবনে কেউ আগে ভাবে নাই, বর্ষাকালে শিম, লাউ, ফুলকপি, গাজর, টমোট খাবে। শীতের সবজি গবেষণা করে এখন ১২ মাস উৎপাদন হচ্ছে। এগুলো সংরক্ষণে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অনেকে আমাদের তরিতরকারি কিনতে চাচ্ছে। আমরা দিচ্ছি। সুইজারল্যান্ডের সুপার মার্কেটের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।

বিশ্ব অর্থনীতির এক-চতুর্থাংশের নিয়ন্ত্রণকারী পাঁচ দেশের জোট ব্রিকসের সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করেন শেখ হাসিনা।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুই ইনাসিও লুলা দা সিলভা জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে যোগ দেন।ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দেয়ার পাশাপাশি জোহানেসবার্গে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।

২৩ অগাস্ট ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস সামিট’ এ প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শেখ হাসিনা। একই দিন আফ্রিকার দেশগুলোতে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে ‘বাংলাদেশ এনভয় কনফারেন্সে’ বক্তব্য রাখেন।দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শেষে রোববার সকালে ঢাকায় ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত