সিন্ডিকেটের অশুভ ফাঁদে কুরবানীর পশুর চামড়া

  মোঃ হেদায়েতুল ইসলাম (উজ্জল)

প্রকাশ: ৫ জুলাই ২০২৩, ১০:৪২ |  আপডেট  : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১:৫৬

গত কয়েক বছর ধরে দেশের বাজারে কুরবানীর চামড়ার দর অস্বাভাবিক নিম্নগামী। প্রতি বছর ঈদের সপ্তাহ খানেক আগে চামড়া ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট চামড়ার দর নির্ধারণ করে থাকে। যারা গরু, মহিষ, ছাগল বা হালাল পশু কুরবানী করেন, সেই পশুর চামড়া বিক্রির টাকা স্থানীয় মাদ্রাসার গরীব ছাত্র, এতিম- মিসকিন বা গরীব মানুষের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে দিয়ে থাকেন। কিন্তু কয়েক বছর হলো সেই চামড়ার দাম পাচ্ছেন না পশু কুরবানী দাতারা। এতে করে বঞ্চিত হচ্ছে গরীব এতিমরা। গত কয়েক বছরের ন্যায় এবারও কুরবানীর পশুর চামড়ার দাম কমে যাওয়ায় বিক্রির জন্য ক্রেতা খুঁজে পাওয়া মুশকিল। চামড়ার দাম না পাওয়ায় কুরবানী দাতাদের অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়ে মাটিতেই পুঁতে দিচ্ছেন।

জানা যায়, কুরবানীর ঈদকে সামনে রেখে অসাধু চামড়া ব্যাবসায়াীরা গত কয়েক বছরের ন্যায় এবারও সিন্ডেকেট করার কারণে পুরো বাজার চলে যায় স্থানীয় ব্যাবসায়ীদের নিয়ন্ত্রনে। ফলে বাজারে ন্যায্য দাম না পেয়ে লোকশান গুনতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৌসুমী চামড়া ব্যাবসায়ী ও বিক্রেতারা। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বলেছেন, এবার সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত মূল্য হিসাবে চামড়া বেচা-কেনা হলে তাদের লোকশান গুনতে হতো না। স্থানীয় পাইকারী আড়ৎদাররা এবং মজুতদাররা সরকারী নিয়মনীতি না মেনে তারা তাদের ইচ্ছামত দামে চামড়া ক্রয় করেছেন। এবার লোকসানের ভয়ে অনেক মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা চামড়া ক্রয় করা থেকে বিরত থাকায় আদমদীঘি ও সান্তাহারের স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামত দামে চামড়া ক্রয়ের কারণে কুরবানীর পশুর চামড়ার বাজারে ধ্বস নামে।

এ সুযোগে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও মজুতদাররা নাম মাত্র টাকায় চামড়া কিনে মজুত করেছে। উপজেলা সদরের মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, বড় বড় মহাজন ও আড়ৎদাররা সিন্ডিকেট করে চামড়ার বাজার নিয়ন্ত্রন করার কারণে সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে চমড়া কেনা-বেচা হয়েছে। দেড় লাখ টাকা মূল্যের বড় গরুর চামড়া ৩শ থেকে ৪ শ টাকা, গাভির চামড়া দেড় থেকে দুই’শ টাকা এবং খাসির চামড়া ১০ টাকা থেকে ২০ টাকা, ভেড়ার চামড়া ১০ টাকায় কেনা-বেচা হয়েছে। এবার চামড়ার বাজারের এ অবস্থার কারনে এলাকার শত শত কুরবানী দাতা ক্ষোভে তাদের কুরবানীর পশুর চামড়া নিয়ে বিপাকে পরে এবং ক্ষোভে বাধ্য হয়ে নাম মাত্র টাকায় বিক্রি করে বলে জানা গেছে।

সিন্ডিকেট করে কুরবানীর পশুর চামড়ার বাজার নিয়ন্ত্রনের আবার অনেকে স্থানীয় মাদ্রারাসা ও এতিমখানায় দিয়ে দিয়েছেন।  স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ী দিলিপ বলেন, আমরা যাদের সাথে ব্যবসা করবো তারা যদি অনিহা প্রকাশ করে তাহালে আমরা কোথায যাব। ঝুঁকি নিয়ে চামড়া কিনেছি কপালে লাভ থাকবে কিনা জানি না।

এব্যাপারে নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম আম্বিয়া বলেন, কোরবানরি ঈদের সময় চামড়ার বাজারে প্রশাসনের দৃষ্টি থাকলে বিক্রিতারা লাভবান হতো সেইসাথে বেশি লাববান হতো অসহায়- গরীব মানুষরা।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত