সালিশে জুতাপেটাকে কেন্দ্র করে দুই সন্তানের পিতার আত্মহত্যা

  শফিক স্বপন, মাদারীপুর

প্রকাশ: ৯ জুলাই ২০২৪, ১১:১৪ |  আপডেট  : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:০৩

সালিশে গ্রাম্য মাদবরের রায়ে জুতাপেটাকে কেন্দ্র করে মাদারীপুরের শিবচরে ইলিয়াছ মৃধা নামের দুই সন্তানের জনক আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেবর ভাবীর মারামারিকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। 
সরেজমিনে জানা যায়, জেলার শিবচর উপজেলার কুতুবপুরের ৯নং ওয়ার্ডে কাদির মৃধার ছোট ছেলে দিনমজুর ইলিয়াছ মৃধার সাথে তার সৌদি প্রবাসী বড় ভাই আক্কাস মৃধার স্ত্রী তাছলিমার সাথে কথা কাটাকাটি থেকে মারামারি হয়। রবিবার সকালে তাছলিমার পায়ে একটি আলপিনের খোচা লাগাকে কেন্দ্র করে ঘটনাটি সংগঠিত হয়। তাছলিমার সন্দেহ ওই পিনটি ইলিয়াছই তার সেন্ডেলে গেথে রাখে। তাৎক্ষনিকভাবে তাছলিমা বিষয়টি তার প্রবাসী স্বামীকে জানায়। তাছলিমা ও তার স্বজনরা স্থানীয় গ্রাম্য মাদবর আলাউদ্দিন খানকে জানালে সে দ্রুত ওই বাড়িতে ছুটে আসে। আলাউদ্দিন খান ওই বাড়িতে এসে ঘটনার বিচারে তাৎক্ষনিকভাবে সালিশ বসায়। আলাউদ্দিন খান কাদির মৃধাকে তার ছেলে ইলিয়াছকে ১০০ জুতার বাড়ি দেয়ার নির্দেশ দেয়। কাদির মৃধা ইলিয়াছকে জনসম্মুখে জুতাপেটা করে। এতে ইলিয়াছ খুদ্ধ হয়ে সাথে সাথেই বাজারে গিয়ে বিষ কিনে এনে সবার সামনে ঘরের ভিতরে গিয়ে বিষপান করে। এসময় ইলিয়াছ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। সোমবার দুপুরে মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে লাশটি ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামে এনে জানাজা শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়। 
নিহতের স্ত্রীর স্বজনরা জানান, আলাউদ্দিন খান ও আর তাছলিমার অবৈধ সম্পর্ক ছিল। সেজন্যই আলাউদ্দিন খান খবর পেয়ে এসেই সাথে সাথে বিচার বসিয়ে ওর বাবাকে ১শ জুতাপেটা করায়। আর এতেই লজ্জা পেয়ে সে আত্মহত্যা করেছে। 
ইলিয়াছের স্ত্রী মিনু বেগম কাদতে কাদতে বলেন, সবার সামনে জুতাপেটা করায় সে লজ্জা পাইয়া মরছে। এহন আমার দুই মাইয়া নিয়া আমি কই যামু। কি খামু। 
ভাবী তাছলিমা বেগম বলেন, ও আমার সেন্ডেলে পিন দিয়ে রাখলে আমি সকালে বিষয়টি শশুড় শাশুড়িকে জানাই। তারা আলাউদ্দিন খানকে জানায়। আমার দেবর হয়ে সে যেহেতু আমাকে অনেক মেরেছে তাই আমার শশুড়ই তাকে কয়েকটি জুতা দিয়ে বাড়ি মারে। এরপর সে বাজারে গিয়ে বিশ কিনে এনে খায়। 
অভিযুক্ত গ্রাম্য মাদবর আলাউদ্দিন খান বলেন, ওরা আমাকে খবর দিয়ে আনে। এসময় আরো অনেকে ছিল।  আমি ওর বাবাকে এর বিচার করতে বললে সে কয়েকটি জুতাপেটা করে। এরপর সে বিষপান করে। আমি কোন রায় দেইনি বা জুতাপেটা করতে বলিনি।
শিবচর থানার এসআই মোঃ কাজী রিপন বলেন , এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। জুতাপেটার বিষয়টি আমাদের জানা নেই। 

 

সান

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত