সাম্প্রতিক ঘটনাঃ প্রাসঙ্গিক ভাবনা

  সাঈদুল আলম বকুল

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২১, ১১:২৩ |  আপডেট  : ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২০:১৫

দেশের সাধারণ মানুষ জীবনযুদ্ধে বিপর্যস্ত । আর সেখানে একের পর এক ঘটে চলেছে নানা ঘটনা। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সেসব প্রচার-প্রকাশ প্রকাশ পাচ্ছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের- নাম, পদ, পদবী, সুপারিশ, মনোনয়ন, অনুকম্পাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কতিপয় সুবিধাভোগী স্বার্থবাদী ব্যক্তি ফায়দা লুটছে। আপন স্বার্থের জন্য দলের স্বার্থকে শুধু বৃদ্ধাঙ্গুলীই  দেখাচ্ছেনা বরং সরকারের অর্জিত (উন্নয়ন) ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে। পাশাপাশি সরকার সম্বন্ধে জনমনে সৃষ্টি করছে নানা প্রশ্নের। বলা নিষ্প্রয়োজন এসব কারো কাম্য ছিল না। 

অন্যদিকে কিছু উচ্ছৃঙ্খল, অশিক্ষিত, অল্পশিক্ষিত, নামধারী সাংস্কৃতিককর্মী নোংরা, অশ্লীল কর্মকাণ্ড করে সাংস্কৃতিক  অঙ্গনকে কলুষিত করেছে। এরা সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য নগ্ন-অর্ধনগ্ন নৃত্য প্রদর্শন করে মডেলিংয়ের নামে নেপথ্যে দেহব্যবসা করে যাচ্ছে। আর কিছু মুখোশধারী লোক তাদের ব্যবহার করে ঘৃনিত লালসা পূরণ করছে। দেশের সাধারণ জনগণ হতবাক হয়ে দেখছে। মদ, গাঁজা, অস্ত্র, দামি গাড়ি, ইত্যাদি সম্পর্কে যেসব খবর বেরিয়েছে বা বেরোচ্ছে তা জেনে প্রশ্ন জাগে, দেশের কর্তব্যরত আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, সংশ্লিষ্ট বিভাগ (জাতীয় রাজস্ব বিভাগ) কি করেছে ? ,এসব কুকর্ম দীর্ঘদিন যাবত হয়ে আসছে। অথচ প্রশাসন ছিল নির্বিকার। কেন? এ প্রশ্নের কোনো জবাব নেই। প্রশাসনের লোক তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলে এই দুষ্টকীটর এতটা করতে সাহস পেত না। বিশেষ বাহিনী র‌্যাবকে পদক্ষেপ নিতে হলো । কেন ? 

অপরাধীরা একের পর এক- অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে কিভাবে ? শুধু তাই নয়- এরা দীর্ঘদিন প্রশাসনের চোখের সামনে ক্যাসিনো ব্যবসা চালালো। খালেদ ভূঁইয়া, জি কে শামীম, শাহেদ, সাবরিনা, পাপিয়া, হেলেনা জাহাঙ্গীর, পিয়াসা, একা, মৌ, ঈশিতা, পরীমনিরা- কাদের সাহস ও প্রশ্রয়ে অপরাধ করে আসছে? এদের সাথে থাকা রুই, কাতলা, বোয়ালরা কোথায় ? শুধু তাই নয়- তারা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নিরাপত্তাবলয় অতিক্রম করলো কিভাবে ? তাদের নেপথ্যে অবশ্যই দলের ব্যক্তি বিশেষ আছে, না থাকলে তারা দেশের সর্বোচ্চ নিরাপত্তাবলয় ভেদ করে ঢুকতে পারেনা। 

উল্লেখিত  গলাবাজদের ২/১ জনের সংলাপ (সারমর্ম) হলো- বালিশের তলায় পিস্তল নিয়ে ঘুমাই, কাউকে গণনা করিনা, দলীয় লোক দ্বারা শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের নাস্তানাবুদ করা, দেশছাড়া করার হুমকি ইত্যাদি। 

প্রশ্ন উঠেছে দেশটা কি  ওদের পৈত্রিক সম্পত্তি? দেশ ও দল কি ওদের কবজায়? হেলেনা জাহাঙ্গীর ও পরীমণির ঘটনার নিচে চাপা পড়ে গেছে ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ কামরুননাহার মুকুলের কথা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর ভাবমূর্তি রক্ষার্থে অনতিবিলম্বে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জরুরি বলে মনে করি। হেলেনা জাহাঙ্গীর- কোন মন্ত্রীর কাছের মানুষ তা ভাবার সময় নেই। এখন প্রশ্ন হলো- সে কতদিনে, কিভাবে এতোকিছুর (সম্পদের) অধিকারী হলো ?  কতবড় দুঃসাহস হলে সে দেশের মন্ত্রীদের নিয়ে এভাবে কথা বলতে পারে ভেবে অবাক হই। তার কথাবার্তয় যে ড্যাকেয়ার ভাব ছিল, তা দেখে বিস্মিত না হয়ে পারা যায় না। 

এদের লাগাম আরো পূর্বেই টেনে  ধরা উচিত ছিল। এরা হলো দলের সুবিধাভোগী পরগাছা।  বাঁশের চেয়ে কি  দড়, সূর্যের চেয়ে বালু গরম--এর মতো অবস্থা। দেশের মন্ত্রী, সিনিয়র নেতা, সংসদীয় কমিটির সভাপতি সকলের উচিত (নিজেদের সম্মানরক্ষার্থে, ভবিষ্যতেরজন্য) যার তার সাথে ছবি না তোলা। কারণ আমাদের দেশে দলের সুবিধাভোগীরা ছবি প্রদর্শন করে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে থাকে। 

স্মরণে রাখা দরকার হেলেনারা কোনো দলের সম্পদ হতে পারে না। এরা দায়। এদের লালন পালন করলে তার খেসারত দলকেই দিতে হয়।

 লেখক: সমাজকর্মী।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত