সন্তানের লাশ ফিরে পেতে মায়ের আহাজারি

  রশিদুর রহমান রানা শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২১, ১৯:৩২ |  আপডেট  : ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৩

প্রবাসী সন্তানের লাশের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে গার্মেন্টস কর্মী মা রেশমী বেগম ও তার পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শিবগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ধাওগীর মূখরজান গ্রামে। ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারী রেশমী বেগম ও জসীম তাদের বড় সন্তান কে মালশিয়া পাঠায় দালাল ওবায়দুল এর মাধ্যমে। অসীম মালশিয়া পৌছার পর বুঝতে পারে যে,তাকে গলাকাটা পাসপোর্ট বা অন্যের নাম ও ঠিকানার মাধ্যমে তাকে মালশিয়া নিয়ে আসা হয়েছে। বিষয়টি বাড়িতে জানালে দালাল ওবায়দুল কাগজ পত্র ঠিক করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এবং কিছু দিন পর কাগজপত্র ঠিক করে দেওয়ার কথা বলে ৪৫০০০ হাজার টাকা নেই। কিন্তু দীর্ঘ ১৮ মাস পেরিয়ে গেলেও সে কাগজ পত্র এবং পাসপোর্ট কিছুই অসীমকে দেন না। অসীমের মা বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে কগজপত্রের জন্য দালাল ওবায়দুল এর সাথে অসীম ও আমাদের বাকবিতন্ডা চলে আসছিল সেটি আমার সন্তান মারা যাওয়ার পূর্বের সপ্তাহ খানেক ধরে চরম পর্যায়ে ছিলো এবং অসীম কাগজ পত্র নেওয়ার জন্য শেষ পর্যন্ত দালাল ওবায়দুলের ম্যাসে ও তার গ্রামের আরেক প্রবাসী পুটুর রুমে ভাড়া উঠে। মারা যাওয়ার একদিনে আগে অসীম তাঁর মাকে জানায় ওবায়দুলের সাথে ঝগড়া হচ্ছে। কিন্ত পরের দিন ১৮ মে  সকালেও মায়ের সাথে কথা বললেও দুপুরের দিকে অসীমের মাকে ফোন করে জানানো হয় তার সন্তান পুটুর রুমে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।  লাশ দেশে আনার কথা বললে ওবায়দুল বলে ৪১০০০ হাজার টাকা লাগবে। টাকা দিলেও লাশ পাঠানোর জন্য বিভিন্ন তারিখ দিতে থাকে ওবায়দুল। এভাবে মাস দুয়েক কেটে গেলে দালাল জানায় লাশ দেশে পাঠানো যাবেনা, লাশ করোনা পজিটিভ এবং দেশে লাশ পাঠানোর জন্য নেওয়া টাকা ফেরত দেয়। প্রতিবেশি মাকসুদা বেগম পিতাঃ খয়বর আলী জানান অসীমকে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়েছে কাগজ পত্র নিয়ে ঝগড়াঝাটির কারনে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আরেক প্রতিবেশি লোকমান শেখ পিতা- মৃতঃ ইসু শেখ বলেন আমি যতদূর জানি ওবায়দুল একজন প্রতারক এবং অবৈধ ভাবে বিদেশে লোক নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিপদে ফেলায় এবং দেশেও ওর নামে মামলা রয়েছে। 

ওবায়দুলের বোন আঙ্গুর বেগম জানান, কাগজ পত্র ঠিক করে দেওয়ার জন্য আমার ভাই টাকা নিয়েছিলো এই বিষয় টা আমি জানি, পরে কি হয়েছে আমি জানি না। হত্যার বিষয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন ওটা মালশিয়ার বিষয় আমি কিভাবে বলবো। দালাল ওবায়দুলের গ্রামের মোকারম হোসেন পিতা- আঃ রহিম বক্স কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ওবায়দুল খুব একটা ভাল ছেলে নয় প্রতারক, ঠক শ্রেণীর লোক, এর আগেও দেশে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিচার শালিস হয়েছে তবে ওবায়দুল ও পুটু বিদেশে এই হত্যা করেছে কিনা তা বলতে পারবো না।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে প্রথমে পুটুর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন আমি কিছু জানিনা, আপনারা ওবায়দুল  এর সাথে কথা বলেন, ওবায়দুলকে এ সংক্রান্ত প্রশ্ন করলে সে বিভিন্ন ধরনের মনগড়া গল্প বলে, সে কোন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেনি।

শিবগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ সাবু বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং বলেন আমি লাশ দেশে আনার জন্য প্রত্যয়ন পত্র দিয়েছি।
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত