শ্রীলঙ্কার রাজনীতিবিদদের পালিয়ে আসার খবরকে নাকচ করল ভারত
প্রকাশ: ১১ মে ২০২২, ১০:৫০ | আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৬
দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় চলমান সহিংসতার মধ্যে দেশটির রাজনীতিবিদরা পরিবারসহ ভারতে পালিয়ে যাওয়ার খবর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু শ্রীলঙ্কায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশন এসব খবরকে ‘স্রেফ গুজব’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
লঙ্কান সংবাদ মাধ্যম ডেইলি মিরর ও ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে কলম্বোয় ভারতীয় হাইকমিশন মঙ্গলবার এক টুইট বার্তায় জানায়, শ্রীলঙ্কার কয়েকজন রাজনীতিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা ভারতে পালিয়েছেন—এমন তথ্য সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে বলে হাইকমিশনের নজরে এসেছে। এসব তথ্যের সত্যতা নেই। হাইকমিশন এমন প্রচারণার নিন্দা জানাচ্ছে।
এর আগে শ্রীলঙ্কার বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজেদের নীতিগত অবস্থান জানায় ভারত। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে গতকাল মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, দ্বীপরাষ্ট্রটির অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন, স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় পূর্ণ সহযোগিতা করা হবে। গণতান্ত্রিক উপায়ে দ্বীপরাষ্ট্রের জনগণ যা চাইবেন, ভারত সেই স্বার্থ রক্ষায় সচেষ্ট হবে।
এর আগে সরকার বিরোধী সহিংস বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন মাহিন্দা রাজাপাকসে। এরপর সেনা পাহারায় কলম্বোর সরকারি বাসভবন ছাড়েন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিঙ্কোমালি শহরে একটি নৌঘাঁটিতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। ওই নৌঘাঁটিও ঘিরে রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা।
এদিকে সহিংসতার মধ্যে পড়ে এক এমপি’সহ অন্তত ৮ নাগরিকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০০ নাগরিক। দেশটির নারকীয় পরিস্থিতি ঠেকাতে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীকে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংসকারীদের দেখা মাত্র গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বিক্ষোভকারীরা শ্রীলঙ্কার মন্ত্রী-এমপিসহ অর্ধশতাধিক নেতার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। বাদ পড়েনি দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের পৈত্রিক বাড়িও। উত্তপ্ত এ পরিস্থিতির মধ্যে শুধু সরকারের মন্ত্রী-এমপিরাই নন, তোপের মুখে পড়ছেন তাদের সমর্থকরাও।
গত সোমবার শ্রীলঙ্কা টুইট নামে একটি টুইটার হ্যান্ডেল থেকে শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যায়, সরকারপন্থি এক ব্যক্তিকে ধরে ময়লার গাড়িতে ফেলে দিচ্ছে একদল বিক্ষোভকারী। এসময় ক্ষুব্ধ জনতার ভেতর থেকে বলতে শোনা যায়, এটাই কলম্বো। ওই একই হ্যান্ডেল থেকে প্রকাশিত আরেকটি টুইটে বলা হয়, গলে-ভিত্তিক বিক্ষোভকারীদের তাড়া খেয়ে বেরওয়েওয়া লেকে ঝাঁপ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সমর্থকরা। এ ঘটনার ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে।
এর মধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট এক টুইট বার্তায় দেশটির বিক্ষুব্ধ নাগরিকদের সরকারি সম্পদের ক্ষতি সাধন না করার অনুরোধ করার পাশাপাশি নাগরিকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশটিতে সৃষ্ট রাজনৈতিক সংকট সমাধানে সংবিধানের আলোকে কাজ করা হবে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক দুরবস্থা নিরসনে কাজ করা হবে।
প্রসঙ্গত, নতুন এই নির্দেশনার আলোকে দেশটিতে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা কোনো বিক্ষোভকারীকে আটকের পর পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার আগে ২৪ ঘণ্টা নিজেদের হেফাজতে রাখতে পারবেন। একই সঙ্গে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা যেকোনো বেসরকারি স্থাপনা ও গাড়িতে তল্লাশি চালাতে পারবেন। এছাড়াও কোনো পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতারের ক্ষমতা পেয়েছে পুলিশ। তারপরও সরকার বিরোধীদের দমন করা যাচ্ছে না।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত