শ্রীনগরে ড্রেজার দিয়ে কৃষি জমি ভরাটের মহোৎসব

  নজরুল ইসলাম, শ্রীনগর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৪, ১৭:১২ |  আপডেট  : ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৩০

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার সবকট ইউনিয়নে ড্রেজার দিয়ে কৃষি জমিতে মাটি ভরাটের মহোৎসব চলছে। তবে দুটি ইউনিয়নে এর চিত্র খুবই ভয়াবহ। 
এ দুটি ইউনিয়ন হচ্ছে শ্রীনগর সদর এবং ষোলঘড় ইউনিয়ন। উভয় ইউনিয়নে ফসলি জমিতে বালু ভরাটের কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছেন মূলতঃ শ্রীনগর ইউনিয়নের ড্রেজার সিন্ডিকেটের সদস্যরা। 
২ নং ওয়ার্ডের কন্দল পাড়া গ্রামের মোতাই শেখের ছেলে কথিত বিএনপি নেতা টিটু এবং আলী মীরের ছেলে সায়েদের ছত্রছায়ায় চলছে প্রায় ১৫/২০ টি ড্রেজার। 
জানা যায়, উল্লেখিত ব্যক্তিদ্বয় উপজেলার বাউন্ডারি ওয়াল থেকে শ্রীনগর আলমপুর খালের ষোলঘড় কালিবারী পর্যন্ত এসব ড্রেজারগুলোর দেখভালের দয়িত্বে রয়েছেন। 
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সায়েদের ড্রেজারটির অবস্থান মাঝিপাড়া খালের মোড়ে এবং টিটুর ড্রেজারটি রয়েছে গোয়াল বাড়ি ব্রীজ সংলগ্ন। দিনরাত এই ব্রীজের নীচ দিয়ে বালু বোঝাই বডিগুলো যাতায়াত করায় ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যাচ্ছে মাঝখানের পিলার। 
মাস্টার শহিদুল ইসলাম আক্ষেপ করে বলেন, আড়িয়াল বিলে বিমান বন্দর নির্মাণ হবে বলে তৎকালীন এম, পি সুকুমার রঞ্জন ঘোষের প্রচেষ্টায় প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছিল এই গোয়াল বাড়ি ব্রীজ। অথচ দেখার কেউ নেই বলে ড্রেজার ও বালু বাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় গুরুত্বপূর্ণ এ সেতুটির স্থায়ীত্ব এখন হুমকির মুখে । 
খালের দুই পাড়ের বাসিন্দারা জানান, ড্রেজারের বিকট শব্দে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পড়াশুনায় মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া শিশু বাচ্চা, বৃদ্ধ ও রোগীদের রাতের ঘুমেও ব্যাঘাত ঘটছে । 
শ্রীনগর ইউনিয়নে ড্রেজার বানিজ্যের আরেকটি চক্র ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার সোহাগ মোড়লের নেতৃত্বে আড়িয়াল বিলের পূর্বাঞ্চল ভরাটের কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছেন। এখানে রয়েছে আতা, আলমগীর ও সোহাগসহ বেশ কয়েক জনের ড্রেজার। তারা দীঘির পার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে পাইপ টেনে পূর্ব চক এবং দীঘির পশ্চিম দিকের বিল ভরাটের কাজে দিন রাত ব্যাস্ত রয়েছে। 
বেপরোয়া ড্রেজার সিন্ডিকেটের এসব লোকজন প্রশাসনের নজর এড়িয়ে দিন রাত ভরাট করে চলছে আবাদি জমিসহ ডোবা, নালা, পুকুর ও জলাশয়। এতে ক্রমশ ফসলি জমি যেমন বিলুপ্ত হতে চলেছে, তেমনি পরিবেশের ভারসাম্য হুমকির মুখে পড়ছে। 
শ্রীনগর কল্যান সমিতির সভাপতি জি, এম, লতিফ বলেন, সরকারের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যদি ফসলি জমি ভরাট বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে  এদেশে একসময় আবাদি জমি বলতে থাকবেনা কিছুই। 
এ বিষয়ে শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোশারেফ হোসাইন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা অভিযান করেছি। জনপ্রতিনিধিদের-ও দায়িত্ব রয়েছে ।  ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েবদেরকে ও বলা
হয়েছে। এ নিয়ে কাজ চলতেছে। 

 

সান

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত