শাজাহান খান মাদারীপুরের একছত্র ক্ষমতার অধিকারী

  এসআর শফিক স্বপন মাদারীপুর

প্রকাশ: ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭:০৮ |  আপডেট  : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪:০৯

সাবেক সংসদ সদস্য শাজাহান খান ছিলেন মাদারীপুরের একছত্র ক্ষমতার অধিকারী। যে দলই ক্ষমতায় থাকতো শাজাহান খানের ক্ষমতার এতটুকু ক্ষুন্ন হত না। তার ক্ষমতার মূল উৎস্য ছিল শ্রমিক সংগঠন। তিনি পরপর ৮ বার মাদারীপুর ২ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। প্রথমবার সতন্ত্র থেকে সংসদ সদস্য হন তিনি। এরপর ৭ বার তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে গত ১৫ বছর টানা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তিনি ২ বারে নৌ পরিবহন মন্ত্রী ছিলেন। এই ১৫ বছরে তিনিসহ তার পরিবারের সদস্যরা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যান।

মাদারীপুর ও রাজৈর উপজেলা নিয়ে মাদারীপুর ২ সংসদীয় আসন। এই আসনে টানা ৮ বারের এমপি ও ২ বার নৌ পরিবহন মন্ত্রী ছিলেন শাজাহান খান। তিনি ও তার পরিবার এই দুই উপজেলায় একছত্র ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। তিনিসহ তার পরিবারের সদস্যরা জেলায় ও ঢাকায় একাধীক বাড়ির মালিক। জেলার সবকিছুই ছিল তাদের নিয়ন্ত্রণে। ছোট ভাই হাফিজুর রহমান যাচ্চু খান জেলার টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতেন। এছাড়া মন্ত্রী থাকা অবস্থায় চট্টগ্রামের বন্দরও ছিল ছোট ভাই যাচ্চু খানের হাতে। আর এক ভাই এ্যাডভোকেট ওবায়েদুর রহমান কালু খান জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান ছিল। শাজাহান খানসহ তার পরিবারের সদস্যরা মাদারীপুর জেলার প্রচুর সম্পতির মালিক হয়েছেন। টেন্ডারবাজি, ভূমি দখল, কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ, মাদক নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন অভিযোগ আছে এই পরিবারের বিরুদ্ধে। বিএনপি, জামায়াতসহ সাধারণ মানুষ এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায় না। খান পরিবারের নামে বেনামে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পতি আছে এই জেলায়। এই পরিবারের বিচার দাবি করেন অনেকেই।

মাদারীপুরের ননম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার বরেন,শাজাহান খানের ছোট ভাই হাফিজুর রহমান যাচ্চু খান টিকাদারী টেন্ডারবাজী, মাদক বিক্রি  ও কিশোর গ্যাংয়ের দড ফাদার ছিলেন। যা মাদারীপুর শহরের সকলেই জানেন। কেউ ভয়ে মুখ খুলছেন না।অটোচালক শ্রমিক আব্দুল আউয়াল বলে খান পরিবারের অত্যাচারে আমরা অতিস্ঠ। সড়কে স্বাভাবিক ভাব চলতে পারতাম না, শ্রমিক ইউয়নের নামে কাজীরটেক ফেরি গাটে চাদাবাজী চলতো তার ইশারায়। এরকম আরো নানা অভিযোগ রয়েছে তার পরিবারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের।

মাদারীপুর শহরে শাহাজান খানের দৃশ্যমান সম্পত্তির মধ্যে আছে ১০ তলা একটি বাস ভবন, ৬ তলা একটি হোটেল (সার্বিক হোটেল), আছে সার্বিক ফুড ভিলেজ, মাদারীপুর আসমত আলী খান স্কুল এন্ড কলেজের জমি দখল করে একটি ৪ তলা ভবন। ৩টি পেট্টোল পাম্প, ৪ তলা ভবনে আসমত আলী খান হাসপাতাল। এছাড়া সার্বিক পরিবহনের মালিকও তিনি ও তাদের পরিবার। ভাইদের আছে একাধিক বহুতল ভবনসহ অঢেল সম্পত্তি। এছাড়া শাজাহান খানের বিশ^স্ত সহযোগীদের নামেও করেছেন অঢেল সম্পদ। 
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত