শহীদ আসাদের শিবপুরে একদিন

  মহিউদ্দিন খান মোহন

প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২২, ১৩:৫৩ |  আপডেট  : ৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:২৪

যাই যাই করেও যাওয়া হচ্ছিল না। দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ-অগুরুত্বপূর্ণ জায়গায় গেলেও দুই ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের জন্মস্থান নরসিংদীর শিবপুরে যাওয়া হয়ে উঠে নি নানা কারণে। ইচ্ছেটা ছিল অনেকদিন থেকেই। এবার সে সুযোগ এলো বন্ধু-লেখক ও অসবরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা নূরুদ্দীন দরজীর আমন্ত্রণে। দাওয়াত কবুল করেছিলাম সাথে সাথেই। নূরুদ্দীন দরজীর সঙ্গে পরিচয় দীর্ঘদিনের। এক সময়ের সরকারি কর্মকর্তা নূরুদ্দীন দরজী এখন অবসর জীবন যাপন করছেন লেখালেখি এবং নিজ এলাকার সামাজিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত হয়ে। কর্মজীবনের এক বিরাট সময় তিনি কাটিয়েছেন আমার জেলা মুন্সিগঞ্জে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে আমার উপজেলা শ্রীনগরেও ছিলেন তিন বছরাধিককাল। 

ভ্রমণের তারিখ নির্ধারিত ছিল ৫ মার্চ। সঙ্গী হলেন বন্ধু মাধ্যমিক শিক্ষক ড. দেওয়ান আযাদ রহমান এবং মানবাধিকার নেতা মো. আনোয়ার হোসেন। নূরুদ্দীন সাহেবের পাঠানো গাড়িতে রওয়ানা করেছিলাম সকাল নয়টার দিকে। রাজধানীর বনশ্রী এলাকার পাশ দিয়ে রামপুরা খাল ঘেঁষে যে রাস্তা, তা ধরে ডেমরা সুলতানা কামাল সেতু পার হয়ে প্রায় বিনা ঝঞ্ঝাটে পৌঁছে গেলাম গন্তব্যে। যাওয়ার পথে লক্ষ্য করলাম, এ ক’বছরে সড়ক যোগাযোগের অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। বিশেষ করে গাউছিয়া ফ্লাইওভার এই পথের যাতায়াত অনেকটাই নির্বিঘ্ন করে দিয়েছে। আগে সেখানে সৃষ্ট ট্রাফিকজ্যাম মানুষকে দুঃসহ ভোগান্তিতে ফেলত। এখন ঢাকা-সিলেট রুটে যাতায়াতকারীদের আগের মতো দুর্ভোগ পোহাতে হয় না। অবকাঠামোগত উন্নয়ন একটি জনপদকে কতটা বদলে দিতে পারে, এ সড়কের দু’পাশে তাকালে তা সহজেই উপলব্ধি করা যায়। সড়কের দুই পাশে থেকে থেকে বিশাল বিশাল সব ইমারত ও কারখানা শেড। সবই নানা ধরনের শিল্প-কারখানার স্থাপনা। গ্রামগুলোতে চমৎকার ডিজাইনের আবাসিক ভবনও নজর কাড়ে। মানুষের আর্থিক স্বচ্ছলতা তাদের রুচিতে যে পরিবর্তন আনে, তা গ্রাম-বাংলায় আবাসিক দালান নির্মাণে আধুনিক স্থাপত্য কৌশলের প্রয়োগ দেখলেই বুঝে নেওয়া যায়। অবশ্য চলন্ত গাড়ি থেকে দূরে দিগন্তবিস্তৃত সবুজ ধানের মাঠ চোখ জুড়িয়ে দিচ্ছিল। মাঠের মধ্যে কর্মরত কৃষাণ-মজুর আর বৈদ্যুতিক পাম্পের সাহায্যে পানি উত্তোলনের দৃশ্য দেখে গ্রাম না-দেখা মানুষেরও বুঝতে বাকি থাকবে না, ধান চাষের মৌসুম চলছে এখন। এসব দৃশ্য আমাদেরকে নস্টালজিক করে তুলছিল। কেননা সফরসঙ্গী আমরা তিনজনই গ্রামের ছেলে। গ্রামের কাদা-জল গায়ে মেখে বড় হয়েছি। যদিও তিনজন তিন জেলার। আযাদ বরিশালের, আনোয়ার শরীয়তপুরের আর আমি তো আদি অকৃত্রিম বিক্রমপুরের সন্তান। বছরের এই সময়টায় আমাদের কাটত ক্ষেতে ধানচাষের তদারকি করে। বীজতলা থেকে চারা তোলা, পানি দিয়ে ক্ষেত প্রস্তুত করা এবং চারা [আমাদের বিক্রমপুরের প্রচলিত ভাষায় ‘জালা’] রোপন পর্যন্ত কৃষাণদের সাথে থাকতে হতো। তারপর নির্দিষ্ট সময় পরে যখন ধানের শীষ বের হতো এবং বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে তা পেকে সোনালী রং ধারণ করত, তখন এক অপার আনন্দে মন ভরে যেত। সেই সোনালী দিনগুলো যে কোথায় হারিয়ে গল! 

 বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ পৌঁছে গেলাম শিবপুর সদরের ধানুয়া এলাকায়। এখানেই বিশিষ্ট রাজনীতিক ও বিএনপির সাবেক মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার বাড়ি। আমাদের মেজবান নূরুদ্দীন দরজী আর মরহুম মান্নান ভূঁইয়ার বাড়ি এক প্লট দূরত্বের। সে হিসেবে তারা নিকট প্রতিবেশী ছিলেন। নূরুদ্দীন ভাই ও তার নাতি-নাতনিরা আমাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করলেন। তার তিন তলা ভবনে গিয়ে বসতেই বললেন, ‘আপনাদের মূল আপ্যায়ন হবে আমার গ্রামের বাড়িতে, দত্তেরগাঁওয়ে। তার আগে সামান্য জলযোগ করে চলুন আপনার আরাধ্য স্থানে নিয়ে যাই’। পিঠা আর ফলমূল সহযোগে আপ্যায়িত হওয়ার পর তিনি আমাদেরকে নিয়ে গেলেন আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার বাড়িতে। বাড়িটি বেশ বড়। এর দক্ষিণ পাশে একটি অংশে মান্নান ভূঁইয়ার কবর। বাড়ির গেটে বিশালাকার সাইনবোর্ড ‘আবদুল মান্নান ভুঁইয়া স্মৃতি পরিষদ’। গেট দিয়ে ঢুকে তাঁর কবরের পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। অনেক কথা মনে পড়ল। নীরবে দাঁড়িয়ে সে কথাগুলো ভাবছিলাম। ছাত্রজীবনেই কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের জন্য রাজনীতি বেছে নিয়েছিলেন আবদুল মান্নান ভূঁইয়া। শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর; যিনি কৃষক-শ্রমিক-সর্বহারা মানুষের জন্য রাজনীতি করে মজলুম জননেতার আভিধায় অভিষিক্ত হয়েছিলেন। ছাত্রজীবন শেষ করে মওলানা হুজুরের নির্দেশে কৃষক-রাজনীতি করার জন্য মান্নান ভূঁইয়া চলে এসেছিলেন নিজ এলাকা শিবপুরে। কর্মজীবন শুরু করেছিলেন উপজেলার দত্তেরগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে। তারপর দীর্ঘ রাজনৈতিক পথপরিক্রমা। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর রয়েছে বীরত্বপূর্ণ ভুমিকা। দেশের ভেতরে থেকে তিনি মুক্তিযুদ্ধকে সংগঠিত করেছেন, যুদ্ধ করেছেন। গোটা নয় মাস তাঁর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা শিবপুরেকে শত্রুমুক্ত রাখতে পেরেছিল। অধ্যবসায়, প্রজ্ঞা এবং নেতৃত্বের সহজাত গুণ তাঁকে নিয়ে যায় রাজনীতির শীর্ষ পর্যায়ে। মন্ত্রী হয়েছেন একাধিকবার। এলাকায় তুমুল জনপ্রিয় নেতা আবদুল মান্নান ভূঁইয়া চার বার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিএনপির মতো জনসমর্থনপুষ্ট বড় রাজনৈতিক দলের মহাসচিবের পদেও অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন। ওই পদে তিনি বহাল ছিলেন প্রায় নয় বছর। মাঝে তাকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রও হয়েছিল। ১৯৯৮-৯৯ সময়ে দলের মধ্যে থাকা প্রগতিবিরোধী অংশটি তাকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিল। কিন্তু দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অনমনীয় দৃঢতার কারণে সে ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। দুঃখজনক হলো, আবদুল মান্নান ভুঁইয়া শেষ পর্যন্ত সেই পদ হারালেন নিজের অদূরদর্শিতা এবং অপরিনামদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে। শুধু মহাসচিব পদ থেকে অপসারণ নয়, দল থেকেও বহিস্কৃত হলেন তিনি। ওয়ান-ইলেভেনের সময়কার সেসব ঘটনা সবার জানা। একজন সফল রাজনীতিবিদ আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার শেষ পরিণতি অত্যন্ত বেদনাদায়ক সন্দেহ নেই। এটা আজও রহস্যাবৃত যে, তাঁর মতো একজন ঝানু রাজনীতিবিদ কী করে ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলবদের প্ররোচনায় অমন একটি হটকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে আমি সে সব কথাই ভাবছিলাম। তিনি যদি ওয়ান-ইলেভেনের সময় দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখা এবং নেত্রীর পক্ষে শিঁরদাড়া খাড়া করে দাঁড়াতেন, তাহলে তিনি হতে পারতেন নায়ক। কিন্তু এমন ভূমিকা তিনি গ্রহণ করলেন, পরিণত হলেন ভিলেনে। রাজনীতির দাবার ছকে চাল দিতে সামান্যতম ভুলও যে শোচনীয় পরাজয় ডেকে আনতে পারে মান্নান ভূঁইয়া তাঁর উদাহরণ। আমরা তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে কবর জিয়ারত করলাম।

এরপর গেলাম শহীদ আসাদের কবর জিয়ারত করতে। শহীদ আসাদের কবরও তাঁর বাড়ির আঙিনায়। শিবপুরের ধানুয়া গ্রামে আসাদের পৈতৃক ভিটা। বাড়ির দক্ষিণের একটি অংশে আসাদের সমাধি। পাশে রয়েছে একটি মসজিদ ও মাদরাসা। প্রতি বছর ২০ জানুয়ারি এলাকাবাসী তাঁর কবরে পুষ্পস্তবক অর্পন করে, দোয়া করে। সে সাথে সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করে ঊনসত্তরের গণআন্দোলনের এই অকুতোভয় বীর সেনানীকে। বাংলাদেশের স্বাধীকার আন্দোলনে শহীদ আসাদ এক অবিস্মরণীয় নাম। তাঁর আত্মত্যাগ স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের পতনকে ত্বরান্বিত করেছিল। শহীদ আসাদের পুরো নাম আমানুল্লাহ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। ১৯৬৯ সনে তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র। থাকতেন ঢাকা হলে (বর্তমান ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হল)। রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বাধীন পূর্ব বাংলা ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা হল শাখার সভাপতি ছিলেন আসাদ। ১৯৬৯ সনের ২০ জানুয়ারি স্বৈর সরকারের প্রশাসন কর্তৃক জারিকৃত ১৪৪ ধারা ভঙ্গের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় দশ হাজার ছাত্রের যে মিছিল বের হয়, তার পুরোভাগে ছিলেন আসাদুজ্জামান। পুলিশের লাঠি চার্জে মিছিল দুই ভাগ হয়ে গেলে এক ভাগ নিয়ে আসাদ ও অন্য নেতারা এগিয়ে যেতে থাকেন শহরের ভেতরের দিকে। এ সময় চানখাঁর পুলের কাছে পুলিশ ও ইপিআর অতর্কিতে বেপরোয়া গুলিবর্ষণ করলে আসাদুজ্জামান গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়েন। বুকে গুলিবিদ্ধ আসাদ এক সময় ঢলে পড়েন মৃত্যুর কোলে। একটি বুলেট তাঁর জীবন কেড়ে নিলেও তাঁকে অমরত্ব দেয় বাংলাদেশের ইতিহাসে। আসাদের শোণিতের ধারা বেয়ে আইয়ুব সরকারের পতনের আন্দোলন দ্রুত সফলতার দিকে এগিয়ে যায়। আসাদ শুধু একজন ছাত্রনেতাই ছিলেন না। একই সঙ্গে তিনি একজন কৃষক সংগঠকও ছিলেন। ১৯৬৮ সনে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নির্দেশে আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার নেতৃত্বে নরসিংদী মহকুমার [তৎকালীন] শিবপুর, হাতিরদিয়া ও মনোহরদীতে ব্যাপকভাবে কৃষকদের সংগঠিত করেছিলেন তিনি। এরপরই সংগঠক হিসেবে তাঁর নাম রাজনৈতিক মহলে ছড়িয়ে পড়ে। ঊনসত্তরের ২০ জানুয়ারি আসাদের শাহাদতের পর কবি শামসুর রাহমান লিখেছিলেন তাঁর সে বিখ্যাত কবিতা ‘আসাদের সার্ট’- ‘গুচ্ছ গুচ্ছ রক্তকরীর মতো কিংবা সূর্যাস্তের/ জ্বলন্ত মেঘের মতো আসাদের সার্ট/ উড়ছে হাওয়ায় নীলিমায়/.... উড়ছে, উড়ছে অবিরাম/ আমাদের হৃদয়ের রৌদ্র ঝলসিত প্রতিধ্বনিময় মাঠে/ চৈতন্যের প্রতিটি মোর্চায়/ আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা, কলুষ আর লজ্জ্বা/ সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;/ আসাদের সার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা’। ছাত্রনেতা আসাদের মৃত্যুপরবর্তী পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ-গবেষক মেজবাহ কামাল তাঁর ‘আসাদ ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান’ বইতে লিখেছেন, ‘আসাদের মৃত্যু এমন একটি ঐতিহাসিক মূহুর্তে সংঘটিত হয় যে, ঐ ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন দেশের বিভিন্ন অ লে ছড়িয়ে যায়- দেশের প্রায় সকল অ লের মানুষ গায়েবী জানাজায় শরীক হন এবং প্রতিবাদ মিছিলে অংশ গ্রহণ করেন। স্বৈরাচারী আইয়ুবের পাল্টা নাম হিসেবে বিদ্রোহ ও সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে উচ্চারিত ও অংকিত হয় আসাদের নাম। তার মৃত্যু এতদিনকার গণআন্দোলনকে গণঅভ্যুত্থানের পর্যায়ে উন্নীত করে দেয়।’ [পৃষ্ঠা-৬৫]। উল্লেখ্য, আসাদ শহীদ হওয়ার পর বিক্ষুব্ধ জনতা ঢাকার মিরপুর রোডের ওপর মোহাম্মদপুরের প্রবেশ পথে নির্মিত ‘আইয়ুব গেটে’র নামফলক ফেলে দিয়ে নতুন নামকরণ করে ‘আসাদ গেট’; যা আজও প্রতি মূহুর্তে আমাদেরকে শহীদ আসাদের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। আসাদের জন্মস্থান নরসিংদীর শিবপুরে আবদুল মান্নান ভূঁইয়া প্রতিষ্ঠিত ‘সরকারি শহীদ আসাদ কলেজ’ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আজও ঘোষণা করে চলেছে, এদেশের গণতন্ত্রের পথচলা নির্বিঘ্ন করতে স্বৈরশাসকের বুলেটের মুখে সাহসী সন্তান আসাদের নির্ভয়ে বুক চিতিয়ে দাঁড়ানোর কথা। যুগে যুগে স্বৈরশাসকরা ক্ষমতামদে মত্ত হয়ে নিজেদেরকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে মনে করলেও একটি ছোট্ট স্ফুলিঙ্গ যে দাবানল হয়ে তাদের ক্ষমতার প্রাসাদকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ভষ্ম করে দিতে পারে আসাদের শাহাদৎবরণ তার জ্বলন্ত প্রমাণ। নরসিংদীর শিবপুরের নিভৃত পল্লী ধানুয়া থেকে উঠে আসা তরুণ আসাদুজ্জামানের রক্ত যে মহাপ্লাবন হয়ে অসীম ক্ষমতাধর ইংল্যান্ডের স্যান্ডহার্স্টের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ফিল্ড মার্শালের গদীকে তৃণ-কুটোর মতো ভাসিয়ে নিয়ে যাবে, এটা বোধকরি খোদ আইয়ুব খানও কল্পনা করতে পারেন নি।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের দুই জ্যোতিষ্ক আবদুল মান্নান ভূঁইয়া ও শহীদ আসাদের কবর জিয়ারত এবং বন্ধু নূরুদ্দীন দরজীর বাড়িতে বেড়ানো শেষে ওই দিনই সন্ধ্যায় ফিরে এলাম ঢাকায়। 

 

 

 

লেখক: সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক।     
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত