লৌহজংয়ে পদ্মার ভাঙ্গন: এক রাতে ১৫টি বসত ঘর নদীগর্ভে বিলীন
প্রকাশ: ২ অক্টোবর ২০২২, ১৯:৫৬ | আপডেট : ৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:৩৯
ফের গর্জে উঠেছে রাক্ষুসী পদ্মা। নতুন করে পদ্মার ভাঙ্গনের শিকার শতাধিক পরিবার। বর্ষা মৌসুম শেষ না হতেই নতুন করে ভাঙ্গনের খেলা চলছে লৌহজংয়ের দুটি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে। নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে পদ্মা পাড়ের বসত করা জনগোষ্ঠী। শনিবার রাতে লৌহজং উপজেলার লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের বড় নওপাড়া গ্রামের প্রায় ১৫ টি বাড়ি এক নিমিষেই পদ্মা গর্ভে চলে গেল। রাত থাকায় অনেকেই তাদের বসত ভিটার মাথা গোঁজার ঠাঁই শেষ সম্বল ঘর টুকু শেষ রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
বড় নওপাড়া গ্রামের বাসিন্দা খোকন মোল্লা জানান, শনিবার সকালেও বুজতে পারিনি সর্বনাশা পদ্মা আমাদেরকে এক রাতেই ঠিকানা বিহীন করে দিবে। সন্ধ্যা গড়াতেই ভাঙ্গন ক্রমাগত ঘরের নিকট চলে আসে। রাত বারার সাথে সাথে ভয়ংকর হয়ে উঠে সর্বনাশা পদ্মা। কোন রকম একটি ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিলেও বাকি দুটি সরানো সম্ভব হয়নি। এমনি ভাবে মিঠু মোল্লা, কুতুব মোল্লা, হোসেন মোল্লা, ইয়ানুছ মোল্লা, ইর্সদ মোল্লা, মামুন মোল্লা, হাদি মোল্লা, মুকুল মোল্লা, ফারুক , ইছাক মোল্লার ঘরসহ ১৫টি ঘর চোখের পলকে হারিয়ে গেল পদ্মায়। এর একদিন আগে পদ্মার কড়াল গ্রাসে বিলীন হয়ে যায় আরোও ৫টি বসত ঘর। এই গ্রামের প্রায় ৪২ টি বসত ঘর এখন ভাঙ্গন ঝুকিতে রয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান। লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়নের ১,২,৩ ও ৫ নং ওয়ার্ডে যেমন বড় নওপাড়া, সন্ধিসা ও বাঘের বাড়ি এই তিনটি গ্রামের মানুষ এখন নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে পদ্মা পাড়ে।
এদিকে বেজগাঁও ও গাওদিয়া ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি গ্রাম হুমকির সম্মুখীন রয়েছে। লৌহজংয়ে প্রায় ৩ কিলোমিটার ব্যাপি এই নদী ভাঙ্গনের খেলা চলছে। নদী ভাঙ্গন রোধে স্থানীয় সাংসদ অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি সাড়ে ৪শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ এনেছেন, যা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক জিও ব্যাগ ও ব্লক ফালানোর কাজ চলমান রয়েছে। এই বিষয়ে লৌহজং -তেউটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী মো. রফিকুল ইসলাম জানান, আগে কম বেশি ভাঙ্গন ছিলো তবে গত রাতে ভাঙ্গন অবস্থা খুব ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। আমি গত দুদিন ধরেই একায় থেকে জনগণের সাথে কাজ করছ।
গতকাল শনিবার এই ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শনে আসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল আউয়াল। তার নির্দেশে ভাঙ্গন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে নদীতে। রবিবার দুপুরে নদীতে ১২০টি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে ভাঙ্গন রোধে।
এদিকে ভাঙ্গন রোধে এলাকা পরিদর্শনে উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা ডা: মো. আব্দুল আউয়াল সাংবাদিকদের বলেন, লৌহজংয়ে পদ্মা ভাঙ্গন রোধে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় ভাঙ্গন রোধে পদ্মা নদীর ভাটিতে জিও ব্যাগ, বল্ক ফালানোর কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। তবে এসময়টায় নদীতে প্রবল স্রোত, অতি বর্ষন ও ঢেউয়ের তোড়ে কিছুটা ভাঙ্গন বেড়েছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং ভাঙ্গন রোধে সকল প্রচেষ্ঠা অব্যাহত রয়েছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত