লাশ না পেলে মিলবে না মৃত্যু সনদ, অপেক্ষায় কাটতে পারে ৭ বছর

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৪, ১২:৫২ |  আপডেট  : ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২১

চিকিৎসার জন্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে গিয়ে খুন হয়েছেন সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। তবে তার লাশ এখনও উদ্ধার করা যায়নি। টানা কয়েকদিন ধরে নিরলস তল্লাশির পরও মেলেনি কিছুই।

এমন অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, আনোয়ারুল আজীম আনারের লাশ পাওয়া না গেলে কী হবে? ডেথ সার্টিফিকেট বা মৃত্যু সনদই বা কবে মিলবে? এক্ষেত্রে ভারতের আইন কী বলে? রোববার (২৬ মে) এক প্রতিবেদনে এই বিষয়গুলোই তুলে ধরেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নর্থইস্ট নিউজ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলকাতায় ‘খুন হওয়া’ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের লাশ হয়তো আর কখনোই খুঁজে পাওয়া যাবে না। গত ১৩ মে থেকে ১৫ মের মধ্যে তাকে হত্যার পর তার লাশ টুকরো টুকরো করে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আর এটি পশ্চিমবঙ্গের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এবং বাংলাদেশ গোয়েন্দা শাখা উভয়ের জন্যই অবিলম্বে সমস্যা তৈরি করবে। আর তা হচ্ছে: আনারের মৃত্যুতে কোনও ধরনের ডেথ সার্টিফিকেট বা মৃত্যু সনদ জারি করা যাবে না। আর তেমনটি হলে ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনে উপনির্বাচন অন্তত সাত বছরের জন্য অসম্ভব হয়ে যাবে

বাংলাদেশ গোয়েন্দা শাখার প্রধান ও পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার মোহাম্মদ হারুন-উর রশিদ রোববার কলকাতায় তার আগের কথাই পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, হত্যার পর আনারের লাশ টুকরো টুকরো করা হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ইঙ্গিত দেন, আনারের লাশ হয়তো আর কখনোই পাওয়া যাবে না।

নর্থইস্ট নিউজ বলছে, এমপি আনারের লাশ বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পাওয়া না গেলে ময়নাতদন্ত করা যাবে না, যার অর্থ হলো— তার আত্মীয়দের কাছেও মৃত্যু সনদ হস্তান্তর করা যাবে না। উপরন্তু, ডেথ সার্টিফিকেট বা মৃত্যু সনদ জারি করার আগে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডিকে কমপক্ষে সাত বছর অপেক্ষা করতে হবে। সাত বছর পার হওয়ার পর সিআইডির কাছে খোলা একমাত্র যে পথটি থাকবে তা হলো—ভারতীয় সংবিধানের ২২৬ ধারার অধীনে কলকাতা হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করা।

নর্থইস্ট নিউজের সাথে কথা বলার সময় কলকাতার প্রবীণ অ্যাডভোকেট নবকুমার ঘোষ বলেছেন, ‘মৃত কোনও ব্যক্তির লাশ পাওয়া না গেলে মৃত্যু সনদ জারি করতে সাত বছর সময় লাগতে পারে। এটাই প্রতিষ্ঠিত আইন। সাত বছরের অপেক্ষা বাধ্যতামূলক। লাশ নেই, মৃত্যু সনদও নেই।’

অ্যাডভোকেট নবকুমার ঘোষ বলছেন, এরপর উচ্চ আদালত প্রশাসনের একজন শীর্ষ কর্মকর্তার মাধ্যমে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিতে পারে। সেই তদন্ত শেষ হলে, উচ্চ আদালত আদেশ জারি করতে পারেন যা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মৃত্যু সনদের সমতুল্য হবে।

নর্থইস্ট নিউজের দাবি, তাদের প্রতিবেদনটিতে সিআইডি-বাংলাদেশ ডিবির মামলায় অনেক ত্রুটি এবং অসঙ্গতি প্রকাশ করা হয়েছে। হত্যাকারীদের বর্ণনায় বেশ কিছু ফাঁক রয়েছে এবং স্পষ্ট এসব ফাঁক থেকে উদ্ভূত প্রশ্নের উত্তর পেতে উভয় দেশের তদন্তকারীদের যথেষ্ট মাথা ঘামাতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যান এমপি আনার। ১৩ মে বন্ধু গোপালের বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। তিনি এসএমএসে বলছিলেন দিল্লি যাচ্ছেন এবং সেখানে পৌঁছে তাকে ফোন করবেন। পরে তার সঙ্গে ভিআইপিরা আছেন জানিয়ে ফোন না দিতে বলেন। পরে ১৮ মে ভারতে নিখোঁজের জিডি করা হয়। ২২ মে ভারতের কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে এমপি আনারকে খুন করা হয়েছে বলে জানায় কলকাতার সিআইডি।

 

সা/ই

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত