রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলো ধর্মান্ধ ও জঙ্গিগোষ্ঠীর জায়গা হয়ে উঠছে- তথ্যমন্ত্রী
প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২৩, ১৫:৫৩ | আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২:০৩
বাংলাদেশের কক্সবাজার ও টেকনাফ এলাকায় অবস্থিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলো ধর্মান্ধ ও জঙ্গিগোষ্ঠীর জায়গা হয়ে উঠছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘সেখানে নিয়মিত প্রায় সব ধরনের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। এই সমস্যা এখন আর শুধু বাংলাদেশের নয়, এই অঞ্চলের সমস্যা হয়ে গিয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান জরুরি।’
শনিবার (২৬ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ-এর উদ্যোগে ‘জেনোসাইড অ্যান্ড জাস্টিস: বাংলাদেশ রেসপন্স টু দ্য রোহিঙ্গা ক্রাইসিস’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন আলোচকরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায় সবধরনের অপরাধ কাজ সংঘটিত হয়ে থাকে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জায়গাগুলো ধর্মান্ধতার জন্য প্রজনন স্থান হয়ে উঠেছে। জঙ্গিবাদ দমনে অনেক উন্নত দেশ থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সফল হয়েছে। কিন্তু রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলো ধর্মান্ধতার জন্মস্থান ও জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর লোকবল সংগ্রহের জায়গা হয়ে উঠেছে। এটি একটি অনেক বড় সমস্যা। এটি শুধু বাংলাদেশের জন্য সমস্যা নয়, পুরো অঞ্চলের জন্য সমস্যা। এজন্য রোহিঙ্গা সমস্যার দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাধান জরুরি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বুঝতে হবে কিছু রোহিঙ্গা শরণার্থী বাছাই করে কানাডা, ইউরোপ, আমেরিকায় নিয়ে যাওয়া কোনও সমাধান নয়। এটি বরং সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। কারণ মিয়ানমারে শরণার্থীরা এটি জানতে পারলে তারা বাংলাদেশে আসতে উৎসাহ বোধ করে। এই সমস্যার সমাধান হলো রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মর্যাদা, সম্মান ও পূর্ণ নাগরিক অধিকারের সঙ্গে প্রত্যাবাসন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তারা তাদের দায়িত্ব এড়াতে না পারে, এরা তাদের নাগরিক, তাদের ফিরিয়ে নেওয়া উচিত।’
সেমিনারে বক্তব্য প্রদানকালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বর্তমানে রোহিঙ্গারা যেই এলাকায় বসবাস করছে সেখানে নিরাপত্তা একটি বড় ইস্যু। সেই এলাকাগুলোতে নিয়মিতভাবে হত্যা, খুন, গুম, মানবপাচারসহ নানা রকমের অনৈতিক ও অবৈধ কার্যক্রম চলছে। সেখানে ১০টার মতো জঙ্গি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। আমরা সেই বিষয়গুলোকে আমলে নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবিলম্বে দেশে ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। এসময় রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে কার্যকর উপায় বের করার ওপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনের সভাপতিত্বে সেমিনার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান, ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিনিধি জোহার ভ্যানদার ক্ল্যাও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ এয়ার কমোডর (অব.) ইশফাক এলাহী চৌধুরী, মাইগ্রেশন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনির ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিপিজের (গবেষণা) পরিচালক ড. এম সঞ্জীব হোসেন প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. জামিলা এ চৌধুরী স্বাগত বক্তব্য দেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত