রোমন্থনী স্মৃতি হয়ে সকলের হৃদয়ে আজও রাজত্ব করছেন সালমান শাহ
প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৩৮ | আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:১২
৯০ দশক এমন একটি সময়, যারা এই সময়ের তরুণ ছিল তাদের সবচেয়ে সৌভাগ্যবান মনে করা হয়। কারণ সুন্দর ও সুস্থ্য ধারার সংস্কৃতির একটি অংশ ছিল এই তরুণ সমাজ। যা পরবর্তী প্রজন্ম কখনোই উপভোগ করতে পারবেনা। এই সময়ের তরুণ সমাজের জীবনের অংশ হয়ে জুড়ে ছিল বই, আধুনিক গান, ফ্যাশন সচেতনতা এবং হালফ্যাশনের চলচ্চিত্র। বাংলাদেশের ৯০ দশকের তরুণ সমাজের একটি অংশ জুড়ে ছিল হুমায়ূন আহমেদের বই, শিরোনামহীন/অর্থহীন/সোলস এবং সালমান শাহ।
আবেগের আরেক নাম সালমান শাহ, মানুষ শুধুমাত্র তার অভিনয়ই পছন্দ করতেন না। তার ফ্যাশন জ্ঞান ছিল অনুকরণীয়। ৯০ দশকের বাংলাদেশের তরুণী বলতেই সালমান শাহের জন্য মরিয়া আর তরুণ বলতেই সালমান শাহের অনুকরণ। সালমান শাহের করুণ মৃত্যুতে ঢালিপাড়া বাদে সাধারণ মানুষ যেভাবে ভেঙ্গে পড়েছে এমন দৃশ্য বিরল। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য অনেক তরুণ, তরুণী আত্মহত্যার পথও বেছে নিয়েছিল। আর ঢাকাই চলচ্চিত্রে পাহাড় ধ্বসের মত ধ্বস নেমেছে, যার প্রতিকূলতা এখনো কাটাতে পারেনি ঢালিউড। বর্তমান তরুণ প্রজন্মের কাছে এখনো প্রিয় তিনি।
সালমান শাহ ছিলেন একজন বাংলাদেশি অভিনেতা ও মডেল। তার প্রকৃত নাম ''চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন"। টেলিভিশন নাটক দিয়ে তার অভিনয়জীবন শুরু হলেও ১৯৯০-এর দশকে তিনি চলচ্চিত্রে অন্যতম জননন্দিত শিল্পী হয়ে উঠেন। ১৯৯৩ সালে তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত কেয়ামত থেকে কেয়ামত মুক্তি পায়। একই ছবিতে নায়িকা মৌসুমী ও গায়ক আগুনের অভিষেক হয়।
জনপ্রিয় এই নায়ক নব্বইয়ের দশকের বাংলাদেশে সাড়া জাগানো অনেক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি সর্বমোট ২৭টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এবং সবকয়টিই ছিল ব্যবসাসফল। তিনি ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রহস্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করেন।
তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র জহিরুল হক ও তমিজউদ্দিন রিজভী পরিচালিত তুমি আমার চলচ্চিত্রটি ব্যবসাসফল হয়। পরিচালক জহিরুল হক চলচ্চিত্রটির কিছু অংশ নির্মাণ করার পর মারা যান। পরে তমিজউদ্দিন রিজভী বাকি কাজ শেষ করেন। এই চলচ্চিত্রে প্রথমবারের মতো তার বিপরীতে অভিনয় করেন শাবনূর। পরে তার সাথে জুটি বেঁধে একে একে সুজন সখি, বিক্ষোভ, স্বপ্নের ঠিকানা, মহামিলন, বিচার হবে, তোমাকে চাই, স্বপ্নের পৃথিবী, জীবন সংসার, চাওয়া থেকে পাওয়া, প্রেম পিয়াসী, স্বপ্নের নায়ক, আনন্দ অশ্রু, বুকের ভিতর আগুন সহ মোট ১৪টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। সবকটি ছবি ব্যবসাসফল হয়।
সালমান শাহ মৃত্যুর আগে মন মানে না ছবির ৫০ শতাংশ কাজ শেষ করতে পেরেছিলেন; তার মৃত্যুর পর চিত্রনায়ক রিয়াজ কে দিয়ে ছবিটি করানো হয়। এছাড়াও কে অপরাধী, তুমি শুধু তুমি, প্রেমের বাজি সহ একাধিক মুভি সালমান শাহ অর্ধেক শুটিং করে মারা যান। পরবর্তীতে প্রেমের বাজি ব্যতীত বাকি সিনেমাগুলি অন্য নায়কদের দিয়ে নতুন করে শুটিং করা হয়। সালমানের অসমাপ্ত সিনেমার মধ্যে একমাত্র প্রেমের বাজি সিনেমার কাজ পরে আর শেষ হয় নি।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত