যার শিল্পে সাংস্কৃতিক মিলন ঘটে পশ্চিম ও প্রাচ্যের

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৩, ১২:৪৪ |  আপডেট  : ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪৩

"knowing is not enough,We must apply"

ব্রুস ইয়ুন ফান লী একজন চীনা মার্শাল আর্ট শিল্পী, শিক্ষক, অভিনেতা এবং জিৎ কুন দো নামক নতুন ধরনের মার্শাল আর্ট ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠাতা। তার জন্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিস্কোতে। তাকে সর্বকালের অন্যতম প্রভাবশালী এবং বিখ্যাত মার্শাল আর্ট শিল্পীদের একজন হিসেবে গণ্য করা হয়। তার শিক্ষকের নাম ছিলো আয়প (ওয়াই আই পি) ম্যান। 

লী ছিলেন একজন সুপারস্টার। সারাবিশ্বেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলো তার তরুণ ভক্তরা। অবিশ্বাস্য ক্ষিপ্র গতিতে তিনি যেভাবে তার হাত ও পা ছুঁড়ে দিতেন সেই স্টাইল তরুণদের বিমোহিত করতো। সারা পৃথিবীতে হাতেগোনা যতো বিখ্যাত মানুষ আছেন এই ব্রুস লী তাদের একজন যিনি পশ্চিমা ও প্রাচ্যের সংস্কৃতির মধ্যে বৈষম্য দূর করে কিছুটা মিলন ঘটাতে পেরেছিলেন।

আঠারো বছর হওয়ার আগেই তিনি বিশটির মতো ছবিতে অভিনয় করে ফেলেছেন। প্রথম তিনি পর্দায় আসেন একজন শিশু চরিত্রে, গোল্ডেন গেইট গার্ল ছবিতে। মার্শাল আর্টে তার ক্যারিয়ার গড়ে তোলার চেষ্টার কারণে তিনি রুপালী পর্দা থেকে দূরে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি চোখে পড়েন প্রযোজক উইলিয়াম ডজিয়েরের। ১৯৬৬ সালে এবিসি টেলিভিশন সিরিজ দ্যা গ্রিন হর্নেটে তাকে দেখা যায় কেটো চরিত্রে।

তার পরের বছরেই এই সিরিজটি বন্ধ হয়ে যায়। তারপর দেখা গেছে, ব্রুস লী বহু ছবিতে ও টেলিভিশনে বিভিন্ন সহকারী বা পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেছেন। একই সাথে তিনি মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজও চালিয়ে গেছেন। কয়েকটি ছবির কোরিওগ্রাফ্রার হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। অ্যামেরিকার বিভিন্ন ছবিতে সহকারী বা পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করে করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন ব্রুস লী। তিনি মনে করলেন, তার ভবিষ্যত আসলে অ্যামেরিকায় নয়, হংকং-এ।

১৯৭১ সালে তিনি হংকং-এ চলে যান। তার গ্রিন হর্নেট ছবির জন্যে ততোদিনে তিনি হংকং-এর ঘরে ঘরে পরিচিত নাম হয়ে উঠেছিলেন। হংকং-এ তিনি প্রথম প্রধান একটি চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিটির নাম দ্য বিগ বস। এই ছবিটি তাকে খুব বড় ধরনের নাম এনে দেয়। বক্স অফিসেও বড় রকমের সাফল্য পায় এই ছবিটি। ১৯৭২ সালে ব্রুস লী অভিনয় করেন ফিস্ট অফ ফিউরি ছবিতে। এর আগে দ্য বিগ বস যে রেকর্ড সৃষ্টি করেছিলো সেটিকেও ভেঙে দেয় এই ছবিটি।

কিন্তু তরুণ এই অভিনেতার প্রতিভা আসলে চোখে পড়ে তার তৃতীয় সিনেমা- ওয়ে অফ দ্যা ড্রাগনে। এই ছবিটির কাহিনী লিখেছেন তিনি। পরিচালক, প্রধান তারকা এবং কোরিওগ্রাফারও ছিলেন তিনি নিজেই।

ব্রুস লীর ছবির সাফল্য তাকে জনপ্রিয় করে তোলে চীনেও। তারপর মার্শাল আর্ট ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করে সারা বিশ্বে। প্রাচ্যের দেশগুলোতেও মার্শাল আর্টের নতুন এক দর্শন বা স্টাইলের সূচনা ঘটে যা পরিচিত হয়ে উঠে কুং-ফু হিসেবে। এরপর তার চার নম্বর ছবিটি মুক্তি পেলো। নাম- এন্টার দ্য ড্রাগন। পঞ্চম চলচিত্রটি নির্মানের কাজ যখন চলছিলো তখন এটা স্পষ্ট হয়ে উঠলো যে কোনো কিছুই তাকে আর থামাতে পারবে না।

ব্রুস লীর মৃত্যু নাড়া দিয়েছিলো হংকং থেকে হলিউডকেও। তার মরদেহ বহনকারী কফিন দেখার জন্যে রাস্তায় নেমে এসেছিল শোকাহত হাজার হাজার মানুষ।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত