যানজট নিরসনের  দৃষ্টান্ত  হতে পারে পুলিশ সদর দফতরের ১৬ তলা কার পার্ক 

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:২৪ |  আপডেট  : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১১

রাজধানীর অফিস পাড়া মতিঝিল, অভিজাত এলাকা গুলশান-বনানী-ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকার অনেক কমার্সিয়াল বা আবাসিক ভবনে নেই পর্যাপ্ত কার পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। অনেকেই সড়কে গাড়ি রাখতে বাধ্য হন। এতে হঠাৎ ট্রাফিক পুলিশের নজরদারিতে পড়ে গুনতে হয় জরিমানা, কিংবা গাড়িটি নিয়ে যাওয়া হয় রেকারে। সড়কের বিভিন্ন জায়গায় পার্কিংয়ের ফলে যানজট প্রাত্যহিক ঘটনা। এসব সমস্যা সমাধানে মাল্টিলেভেল কার পার্ক হতে পারে একটি কার্যকর ব্যবস্থা।

সম্প্রতি পুলিশ সদর দফতরে ১৬ তলা মাল্টিলেভেল কার পার্কিংয়ের ব্যবহার শুরু হয়েছে। অল্প জায়গায় অনেক গাড়ি রাখার সুবিধা ও অত্যাধুনিক ব্যবস্থাপনা রয়েছে সেখানে। এর থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও মাল্টিলেভেল কার পার্কিং ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দেবে বলে মনে করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশ সদর দফতরে মাল্টিলেভেল কার পার্কিং ব্যবস্থাপনা উদ্বোধন করেন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। সরেজমিন দেখা গেছে, আগে যেখানে পুলিশ সদস্যদের জিপ কিংবা অন্যান্য ৯টি গাড়ি রাখা যেতো, সেখানে এখন ১৫০টি গাড়ি রাখা সম্ভব হচ্ছে। অটোমেটিক কার্ড সিস্টেমে নিজস্ব সেন্সরের মাধ্যমে গাড়িগুলো পার্কিংয়ে রাখা হচ্ছে। এর ফলে যত ওপরেই গাড়ি রাখা হোক না কেন, তা নিরাপদ থাকবে। প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনার কারণে গাড়ি পড়ে যাওয়া কিংবা তেল চুরির কোনও আশঙ্কা নেই।

দেখা যায়, পার্কিংয়ের নির্দিষ্ট স্থানে গাড়িটি রেখে চালক একটি কার্ড সংগ্রহ করেন। সেই কার্ড পাঞ্চ করার সঙ্গে সঙ্গে অটোমেটিক খালি থাকা পার্কিংয়ে চলে যাবে গাড়িটি। আবার যখন চালক গাড়িটি নেওয়ার জন্য আসবেন, নির্দিষ্ট স্থানে পাঞ্চ করলে গাড়িটি ঘুরে যে জায়গায় চালক প্রথমে দেখেছিলেন সেখানে চলে আসবে। সেখান থেকে চালক গাড়িটি নিয়ে বের হয়ে যেতে পারবেন।

কর্মকর্তারা বলছেন, মাল্টিলেভেল কার পার্কিংয়ের কারণে একদিকে যেমন জায়গার অপচয় কিংবা অধিগ্রহণ করতে হচ্ছে না, অন্যদিকে টাকার অপচয় রোধ করা যাচ্ছে। ১৫০টি গাড়ি রাখার জন্য যদি রাজধানীর কোথাও জমি অধিগ্রহণ করতে হতো তাহলে প্রায় ৩২০ কোটি টাকার প্রয়োজন হতো। আর ১৬ তলা ১৫০টি গাড়ি রাখার ভবন এবং যন্ত্রপাতি সেটআপ করতে খরচ হয়েছে ৩৪ কোটি টাকার কিছু ওপরে। আর রক্ষণাবেক্ষণে বছরে চার-পাঁচ লাখ টাকা দরকার হবে। এতে গাড়ি থাকবে নিরাপদ, আর চালককেও পোহাতে হবে না ঝক্কি-ঝামেলা।

জানা গেছে, সরকারি অফিসগুলোর মধ্যে মৎস্য ভবনে মাল্টিলেভেল পার্কিং প্রথম চালু করা হয়। সেখানে যে প্রক্রিয়ায় গাড়ি ওঠানামা করানো হতো তাতে কিছু সমস্যা ছিল। কোনও গাড়ি আগে তুলে পার্কিং করার সময় পাশে অন্য গাড়ি থাকলে সেটি নামিয়ে পরে আগের গাড়িটি নামানো লাগতো। এই সমস্যা পুলিশ সদর দফতরের পার্কিংয়ে নেই। আধুনিক প্রযুক্তির মাল্টিলেভেল কার পার্কিং এটি।  

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত