মুন্সীগঞ্জ‌ে গজারিয়া ভবেরচরে ইউ‌পি নিবার্চনে নৌকার প্রার্থী পরাজয়ের নেপথ্যে 

  লিটন মাহমুদ

প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২২, ১৫:১৬ |  আপডেট  : ২৮ মার্চ ২০২৪, ২৩:৪১

মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নে  ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত ৫ জানুয়ারি বুধবার। 

এ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন মো: মুক্তার হোসেন। তিনি এ ইউনিয়নের বর্তমানে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এর পদে রয়েছেন।

এ নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছেন। বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার সাহিদ মোঃ লিটন তার থেকে সাড়ে তিন হাজার বেশি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।

গত বারও তিনি এখানে একই প্রার্থীর কাছে অনুরূপভাবে পরাজিত হন। এই নিয়ে তিনি এখানে দুইবার পরাজিত হলেন একই প্রার্থীর কাছে। তবে কেন এভাবে নৌকার প্রার্থী এখানে বারবার পরাজিত হচ্ছে তার কোন ব্যাখ্যা কিংবা জবাবাদিহিতা না থাকায় এখানে নৌকার ইমেজ ভোটারদের কাছে মারাত্নকভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে অনেকেই ধারণা করছেন?

এর ফলে এ বিষয়টি ভোটারদের কাছে নীতিবাচক প্রভাব পড়ছে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লী‌গের  নেতাদের কাছে এ বিষয়টি খতিয়ে দেখার জোড় দাবি জানিয়েছে এখানকার ভোটাররা। কারণ হচ্ছে ভবেরচরে আওয়ামী লীগের সময়ে ব্যাপক উন্নয়নের কাজ হয়েছে সর্বত্র।

তবে কেন এখানে নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হতে পারছে না। কোথায় গলদ? তা খুঁজে বের করা দরকার এখনই। এছাড়া এ ইউনিয়নের পাশেই রয়েছে ঢাকা চট্টগ্রামের মহাসড়ক। এ মহাসড়কে কেন্দ্র করে এখানে ভারী শিল্প কারখানা আধুনিক মানের হোটেলসহ নানা রকমের শপিংমল গড়ে উঠেছে।

উন্নয়নের ছোঁয়া থাকা সত্বেও এখানে নৌকার প্রার্থী ভোট পাচ্ছে না। এবার সর্বত্র সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। তাও এখানে নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হতে পারছে না।

আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে ও ভোটারদের কাছে মো: মুক্তার হোসেন নতুন মুখ। গতবারের নির্বাচন থেকে তার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ। এর আগে তৃণমূলের রাজনীতির অলি গলিতে তার কোন চলাচল ছিল না। এ ঘটনার পর থেকে এখানকার আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে অনেক প্রবীন ও সিনিয়র রাজনৈতিক নেতারা উপেক্ষিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

তার নির্বাচনে অংশ গ্রহণে সেইসব নেতা কর্মীরা ভোটের রাজনীতিতে অনেকটাই নিস্কৃয় ভাব দেখায় বলে জোর অভিযোগ উঠেছে। যার কারণে এবার তার নির্বাচনে জয়ের আর সম্ভাবনা থাকেনি।  এমনটাই অভিযোগ উঠছে তৃণমুলের রাজনীতিতে। তিনি রাজনীতিতে চিরচেনা মুখ না হওয়া সত্বেও দুই দুইবার আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছেন এক ব্যাক্তির আর্শিবাদে।

এখানকার প্রবীন ও সিনিয়র নাম প্রকাশ না করার সত্বে আওয়ামীলীগের নেতারা জানিয়েছেন যে, রাজনীতির কারণে গত বিএনপির সময়ে তারা যে পরিমাণ অত্যাচারের শিকার হয়েছেন ও জেল খেটেছেন রাজনীতিতে সেই পরিমাণ বয়স মো: মুক্তার হোসেনের হয়নি।

তবে এখানকার প্রবীন ও সিনিয়র আওয়ামী লীগের নেতারা অভিমত প্রকাশ করেছেন যে, গত দুইবারে নির্বাচনে এখানে আওয়ামীলীগের প্রার্থী নির্বাচন সঠিক না হওয়ায় এমনটা হচ্ছে বারবার। ভোটারদের কাছে গ্রহণ যোগ্য

প্রার্থী না দেওয়ায় চলামান নির্বাচনসহ দুটি নির্বাচনে এখানে আওয়ামীলীগের প্রার্থী বিজয়ী হতে পারছে না। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে এখানে প্রার্থী বাছাই কিংবা মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে না। যার কারণে এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হতে পারছে না।

ভবেরচর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি লোকমান বলেন, গতবার ও এবার এখানকার প্রার্থী নির্বাচন সঠিক না হওয়ায় দুইবারের নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী এখানে পরাজিত হয়েছে। আর গতবারে পরাজয়ের থেকে

শিক্ষা না নিয়ে একই প্রার্থীকে আবারো মনোনয়ন দেয়ায় এমনটা হয়েছে। এখানে জয়ের লক্ষ্যে অন্য কোন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলে এমনটা নাও হতো পারতো বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।

ভবেরচর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহ আলম বলেন, এবারের নির্বাচনে আমি ও মনোনয়ন চেয়ে ছিলাম। কিন্তু আমাকে মনোনয়ন দেয়া হয় নি। আমাকে এ নির্বাচনে মনোনয়ন দিলে এখানে নৌকা জয় লাভের সম্ভাবনা শত ভাগ ছিল।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত