মুন্সীগঞ্জে শ্বশুর বাড়ির নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাবার বাড়ি এসে আত্মহত্যা

  লিটন মাহমুদ

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৩, ১১:৪১ |  আপডেট  : ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০০

মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ীতে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাবার বাড়ি এসে গলায় ফাঁস দিয়ে এক গৃহবধূর আত্মহত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ  সোমবার (১২জুন) বেলা ১১টার দিকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে। নিহত ওই গৃহবধূর নাম ময়না মন্ডল । সে উপজেলার চাঠাতি পাড়া গ্রামের মৃত নশি মন্ডলের মেয়ে। সে ৩ সন্তানের জননী।

জানা গেছে, রোববার রাতে ময়না তার পিত্রালয়ের একটি ঘরে একা ঘুমিয়ে ছিল। পরে আজ সোমবার সকাল ৯টার বেজে গেলেও ময়না ঘরের দরজা না খোলায় লোকজন জড়ো করে তার মা ঘরের দরজা ভেঙ্গে দেখে সে ঘরের আড়ার সাথে গলায় ফাঁসি দিয়ে ঝুলে রয়েছে।

জানা গেছে, প্রায় ১৫ বছর আগে ময়নার সাথে একই উপজেলার আবদুল্লাহপুর গ্রামের স্বপন আমিন এর ছেলে শুভংঙ্কর আমিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর হতেই ময়নাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতো তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। বোনের নির্যাতনের বিষয়টি ভেবে ময়নার স্বামীকে কাতারে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যান ময়নার ভাই সুমন। কিন্তু ময়নার স্বামী ময়নার কাছে কাতার হতে টাকা পাঠানোর বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি শ্বশুর বাড়িরর লোকেরা, তাই আবার তার উপর শুরু হয় নির্যাতন। ময়নার শাশুড়ি নিহারী আমিন তাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতো। গত এক মাস আগেও ময়নার শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে মেরে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলে সে তার বোনের বাড়ি গিয়ে আশ্রয় নেয়। পরে তাকে আবার শশুর বাড়ি পাঠানো হলে গত ১ সপ্তাহ আগে তাকে মেরে আবার পিতার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে নিহত ময়নার চাচাতো ভাই মলিন্দ্র বলেন, 'বিয়ের পর হতেই ওর শ্বশুর বাড়ির লোকজন ময়নাকে মারধর করতো। আমরা এর আগে এ নিয়ে আদালতে মামলা করেছি। আদালত মারধর করতে নিষেধ করে আপস করে দিয়েছে তারপরেও আবার মারধর করে আমরা ওর শ্বশুর বাড়ি গিয়ে একাধিকবার বিচার আচার করে দিয়েছে। বিচারে আমরা দেখেছি ময়নার স্বামী কাতার হতে ওরা নামে টাকা পাঠায় ওর শাশুড়ির নামেও পাঠায় কিন্তু ময়নার শাশুড়ি ময়নার কাছে টাকা পাঠানোর বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে না পেরে তার উপর নির্যাতন করতো।

নিহতের মা রাধারাণী মন্ডল বলেন, '১৫ বছর হয় আমার মেয়েটারে বিয়ে দিয়েছি। বিয়ের পর হতেই আমার মেয়েটারে ওর শশুর বাড়ির লোকজন নির্যাতন করতো। মেয়ের সুখের জন্য ওর ভাই মেয়ের জামাই শুভংঙ্কর আমিনকে বিদেশে নিলো কিন্তু তারপরেও ওর মা নিহারী আমিন বাবা স্বপন আমিন ও ভাই সবুজ আমিন আমার মেয়েকে নির্যাতন করতো। ওর স্বামীর সাথে ময়নাকে ওর শাশুড়ি মোবাইলে কথা বলতে দিতো না। পরে বাধ্য হয়ে আমার মেয়েটা আত্মহত্যা করলো।'

এ ব্যাপারে টঙ্গিবাড়ী থানা ওসি রাজিব খান বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের কাছ হতে শুনেছি মেয়েটির মাথায় কিছুটা মানুষিক সমস্যা ছিল । যার কারণে সে আত্মহত্যা করতে পারে। বিস্তারিত ময়নাতদন্ত রির্পোট আসলে জানা যাবে।
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত