মুন্সীগঞ্জে টঙ্গীবাড়ীতে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে স্ত্রীকে হত্যাঃ ৪৫ দিন পর স্বামী গ্রেপ্তার
প্রকাশ: ৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩:৩০ | আপডেট : ৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০৬
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার কামারখাড়া গ্রামে কিস্তির টাকা পরিশোধ নিয়ে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী নাজমা বেগমকে (৫০) কবরস্থানে ডেকে নিয়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে স্বামী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনার পরপরই আত্মগোপনে চলে যান স্বামী। ৪৫ দিন পর সোমবার ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত স্বামী আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পরে মুন্সীগঞ্জ আদালতে তোলা হলে বিচারকের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। এরপর তাকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন আদালত।
গতকাল ৩রা নভেম্বর (মঙ্গলবার) দুপুরে মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার শামছুল আলম সরকার তার নিজ কার্যালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের কাছে এসব তথ্য তুলে ধরেন।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার শামছুল আলম সরকার আরও বলেন, টঙ্গিবাড়ী উপজেলার কামারখাড়া গ্রামের মিজি বাড়ির আনোয়ার হোসেন তার স্ত্রী নাজমা বেগমকে দিয়ে বিভিন্ন এনজিও থেকে অনেক টাকা উত্তোলন করেন।
এখন ওই এনজিওগুলো কিস্তির টাকা ফেরত নিতে প্রতিনিয়ত তাগাদা দিচ্ছে। ফলে নাজমা বেগম তার স্বামী আনোয়ার হোসেনকে চাপ দেয়। এতে স্বামী আনোয়ার টাকা দেওয়ার কথা বলে গত ১৭ অক্টোবর দুপুরে কামারখাড়া গ্রামের কবরস্থানের সামনে স্ত্রী নাজমাকে ডেকে নিয়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখমের পর কবরস্থানে ফেলে পালিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয়রা গুরুতর আহত নাজমা বেগমকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করলে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় তার। এ ঘটনায় টঙ্গিবাড়ী থানায় হত্যা মামলা রুজু করা হয়।
এলাকাবাসী জানান, আনোয়ার হোসেন এলাকায় কুখ্যাত মাদক সেবি হিসাবে পরিচিত। সে নাজমাকে বিয়ে করার আগে কমপক্ষে আরো ৫টি বিয়ে করেছেন। নাজমাকে তার ৩ ছেলেসহ ফুসলিয়ে বিয়ে করে আনোয়ার। বিয়ের পরে নাজমার কোন ভরন পোষন দিতেন না আনোয়ার। নাজমা দিঘিরপার বাজারে দোকানে দোকানে পানি বিক্রি করে নিজেই সংসার চালাতো। উল্টো আনোয়ার তাকে দিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক হতে বিপুল পরিমান কিস্তি তুলেন। নাজমাকে এনজিওর লোকজন টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দিলে সে আনোয়ারের কাছে টাকা চাইলে দ্বন্দ্ব দেখা দেয় । সেই দ্বন্দ্বের জের ধরে নাজমাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে আনোয়ার। নাজমার ৩ ছেলে মধ্যে দুই ছেলে বধির তারা কথা বলতে পরেনা। তাই বাধ্য হয়ে নাজমা নিজেই বধির ছেলেদের রোজগার করে ভরন পোষন করতো। নাজমার মৃতূত্যে বিপাকে পরেছে তার বধির দুই ছেলে।
কা/আ
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত